পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●8 ছোট ও বড় প্রদেশ হিসাবে জোঙ-পোন পদেরও স্তরভেদ আছে এবং প্রতি জোঙ, দুই জন অধ্যক্ষের অধীনে থাকে যাহাদের মধ্যে এক জন গৃহস্থ ও অন্ত জন সাধু-সন্ন্যাসী। এই নিয়মের ব্যতিক্রমও হয়, যেমন এখন কুতীতে হইয়াছে। জোঙ-পোনের উপরে সাক্ষাৎ দালাই লামার গভর্ণমেণ্ট ; ন্যায় ও ব্যবস্থ৷ এই দুই ব্যাপারেই জোঙ-পোনের যথেষ্ট অধিকার, এমন কি তাহাদের ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশের এক-একটি রাজা বলিলেই হয়। ইহাদের নিয়োগ লাসা হইতেই হয় এবং অধিকাংশই দালাই লামার কৃপাপাত্ৰগণের আত্মীয় বা প্রেমাম্পদ। এখন যে জোঙ-পোনের স্থান শূন্ত তাহার বিরুদ্ধে এই প্রদেশের প্রজাগণ লাসায় আবেদন করে। দরবার তাহাদের দুঃখগাথা শুনিয়া বিরূপ হইয়াছেন এই শুনিয়া ঐ জোঙ-পোন লাসার নদীতে ডুবিয়া আত্মহত্যা করেন এইরূপ শুনিলাম। নেপাল-সরকারের নিয়ম অনুসারে ভোটদেশে বাণিজ্যের জন্য যাইতে হইলে নেপালী ব্যবসায়ীদের নিজ নিজ পত্নীকে দেশে ছাড়িয়া যাইতে হয়। এই জন্য প্রায় সকল নেপালী ব্যবসায়ীর ভোটীয় স্ত্রী রক্ষিতা থাকে এবং আশ্চর্ধ্যের বিষয় তাহারা অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য হয়। তিব্বতের স্থানে স্থানে নেপালীদের বিশেষ অধিকার অনুসারে নেপালের প্রজাদের বিচার নেপাল-সরকার-নিযুক্ত বিচারক করে । এইরূপ বিচারকের নেপালী নাম “ডিষ্ঠা ; কেরো, কুতী শীগচী গ্যান্ধী ও লাসায় নেপাল-সরকারের ডিঠা আছে। লাসায় সহকারী ডিঠা ও নেপাল রাজদূত আছে, গ্যাঙ্কীতেও রাজদূত আছে । ইহাদের বিচারে ভোটীয় স্ত্রীর গর্ভজাত নেপালীর পুত্র নেপালের প্রজ, কন্যা তিব্বতের প্রজা ! এইরূপ সন্তানের নেপালী নাম “খচরা”। তাহীদের মাতাপিতার সম্পত্তির উপর এই সস্তানদেরও কোন অধিকার থাকে না—পিত স্বেচ্ছায় যাহা দেয় তাহাই তাহারা ভোগদখল করিতে পারে। এইরূপ ব্যবস্থা ও ব্যবহার সত্ত্বেও ইহার নেপালী পিতা ও পতির কারবারের যেরূপ মহম্বত করে তাহা আশ্চৰ্য্যজনক । sts ש 零 舉 ৩•শে বেপৰ্যন্ত আমি অগ্রসর হুইবার কোনই উপায় উপারিলাম না। কুতীর নিকটস্থ নদীর পুলের পাশে লহিদারী (লম্ ইকু অর্থাৎ পাসপোর্ট ) দেখিবার লোক প্রবাসী ുഭൗ আছে, নদী পার হইবার পরও য়-লেপ-এ পুনৰ্ব্বার রাহদারী দেখাইতে হয়। যখন এই সব ঘাটি পার হওয়ার কোনও উপায় দেখিলাম না তখন ঠিক করিলাম মঙ্গোলীয় ভিক্ষু স্বমতি-প্রজ্ঞকে বলিয়া দেখি তিনি যদি কিছু করিতে পারেন। তিনি তখন কুতীতেই ছিলেন, তাহাকে বলিলাম “আপনি আমাকে সঙ্গে লইয়া চলুন " তিনি মহা খুলী হইয়া বলিলেন, “আমি কাল লমূ-য়িক আনিব এবং আমরা কালই এখান হইতে যাত্র করিব।” তিনি ত নিশ্চিন্ত মনে একথা বলিলেন কিন্তু আমার ঘোর সন্দেহ ছিল কাজটা এতই সোজা হইবে কি না। আমি এক জন ভারতীয় “সাধুবাবা”কে প্রায়ই দেখিতাম, যিনি দুই মাস যাবৎ এখানে আটকাইয়া আছেন, আগে যাওয়া বা ফেরা কোনটাই করিতে পারিতেছেন না। যাহা হউক, একবার চেষ্টা করায় দোষ কি ? সেই রাত্রে এক নেপালী সওদাগরের গৃহে ভূত-প্রেত বিতাড়ন ও ভাগ্য প্রসন্ন করার জন্য পূজা-পাঠ করিতে ডুকৃপা লামার আমন্ত্রণ হইয়াছিল, আমি সেখানে চলিলাম। অনেক স্ত্রীপুরুষ বাল-বনিতার ভীড়ের মধ্যে এ-ব্যাপারের আয়োজন হইল। মনুষ্য-জঙ্ঘার হাড়ের বীণ, যুগ্ম নরকপালের ডমরু ইত্যাদি ভয়াবহ উপকরণ লইয়া সশিন্য ডুকৃপা লামা পূজায় বসিলেন । ঘৃত-দীপের ক্ষীণ আলোক ক্ষীণতর করা হইল, পূজারী বৃন্দকে পর্দায় ঘেরা হইল। র্তাহীদের ঋষভ-কণ্ঠের মৃদুগম্ভীর মন্ত্রোচ্চারণ, ক্ষণে ক্ষণে ডমরুর নিনাদ ও তাহার সঙ্গে সদ্যোজাত শিশুর করুণ ক্রদমের শব্দের মত হাড়ের বীশের স্বর, এইরূপ আবেষ্টনের মধ্যে থাকিয়া মন্ত্রমুখ না হওয়া দুরূহ। পূজা অৰ্দ্ধেক রাত্রি পর্য্যস্ত চলিল, তাহার পর সমবেত মণ্ডলীকে পূজা-জলে অভিষেক করিলে পরে সকলে নিদ্রার আয়োজন করিতে গেল । ৩১শে মে প্রত্যুষেই আমি যাত্রার জন্ত প্রয়োজনীয় এব্যাদি একত্র করিতে লাগিলাম ও মুমতি-প্ৰজ্ঞকে লমূ-য়িকের চেষ্টায় রওয়ানা করাইয়া দিলাম। সে সময় অামার কাছে ষাট বা সত্তর টাকা মাত্র ছিল, তাহার মধ্যে ত্রিশ টাকার নোট আলাদা বাধিয়া বাকী টাকায় কিছু মালপত্র কিনিলাম, কিছু ভাঙাইয় ভোটীয় টঙ্কা সংগ্ৰহ