পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وكاوئ\دS खोज्जेी SNరీgNరీ করা হইয়াছিল। ধৰ্ম্মশিক্ষার দিক্ দিয়া পুরাণ গ্রন্থগুলিতে তৎকালীন বিভিন্ন স্তরের মানব-সমাজের আদর্শ চিত্র অঙ্কিত হইয়াছে। সেই সমস্ত আদর্শ আজও হিন্দুসমাজকে অল্পবিস্তর নিয়ন্ত্রিত করিতেছে। এইরূপে পুরাণগুলিকে একাধারে ইতিহাস, নৃতত্ত্ব ও নীতিশাস্ত্র বলা যাইতে পারে। আর সংহিতাকারেরা ভারতের বিভিন্ন জাতি ও সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন রীতিনীতির সামঞ্জস্য করিয়াই ধৰ্ম্মশাস্ত্রের বিধান বিধিবদ্ধ করিয়াছিলেন। তাহার একটিমাত্র দৃষ্টান্ত দিতেছি । ভারতের বিভিন্ন জাতি ও সমাজে যে বিভিন্ন প্রকার যৌন-সম্বন্ধ ও বিবাহ-প্রথা প্রচলিত ছিল ও আছে সেইগুলি সংহিতাকার সমাহরণ করিয়া আট শ্রেণীতে শ্রেণীবদ্ধ করিয়াছিলেন। যথা, ব্রাহ্ম, দৈব, আৰ্য, প্রাজাপত্য, আস্কর, গান্ধৰ্ব্বা, রাক্ষস, ও পৈশাচ। এখনও বিভিন্ন জাতির মধ্যে এই বিভিন্ন বিবাহপ্রথা অল্পবিস্তর প্রচলিত আছে। সংহিতা-প্রণেতা ঋষিরা সমাজের শৃঙ্খলা স্থাপন ও সংরক্ষণের জন্য উক্ত আট প্রকারের বিবাহই বৈধ বিবাহ এবং তন্মধ্যে চারি প্রকারের বিবাহ “উত্তম" বিবাহ এরূপ নির্দেশ করিয়াছেন। তবে বিধান দিয়াছেন যে বিভিন্ন বর্ণের পক্ষে কোনও কোনও শ্রেণীর বিবাহ “প্রশস্ত", কোনওটি “ধৰ্ম্ম্য” অর্থাৎ “প্রশস্ত” বিবাহের অভাবে করণীয়। আরও বিধান দিয়াছেন যে পৈশাচ ও রাক্ষস বিবাহ নিন্দনীয় ও সকল বর্ণেরই অকৰ্ত্তব্য ; কিন্তু বিহিত সম্বন্ধের অভাবে এই দুইটি নিষিদ্ধ বিবাহও কেবলমাত্র শূত্রের পক্ষে করণীয়। প্রচলিত আচার-ব্যবহারের উপর মানব-সমাজের ভিত্তি অবস্থিত ইহা উপলব্ধি করিয়া সংহিতাকারেরা সেই আচারব্যবহার বিধিবদ্ধ করিয়াছিলেন ও সেইগুলির স্তর-বিভাগ নির্দেশ করিয়া দিয়া সমাজ-সংস্কারের পথ স্বগম করিয়া দিয়াছিলেন। পুরাণাদি শাস্ত্রে ইতিহাস ও নৃতত্ত্বকে অভিন্ন বলিয়া গণ্য করা হইয়াছে। পুরাণগ্রন্থে স্থষ্টি-প্রকরণ হইতে আরম্ভ করিয়া মম্বন্তর বা বিভিন্ন মন্থর কালের বিবরণ, গ্রহনক্ষত্রাদির বিবরণ, ভৌগোলিক বৃত্তাস্ত, সমস্ত যুগবার্তা, পুরাবৃত্ত, বিভিন্ন প্রথিতনামা ঋষিদের ও নৃপতিগণের কীৰ্ত্তিকলাপ, বংশামুচরিত, যুদ্ধবিগ্রহ, সমাজসংস্থান, প্রচলিত লৌকিক আচার ব্যবহার, ধৰ্ম্মবিশ্বাস ও যজ্ঞাদি অনুষ্ঠান-পদ্ধতি প্রভৃতি যথাজানে স্বসম্বদ্ধ ও শিষ্যপরম্পরায় স্বরক্ষিত হইয়াছিল, এবং পরে সেগুলি লিপিবদ্ধ হইয়াছে। এই জন্য পুরাণগ্রন্থগুলিকে “ইতিহাস পুরাণ" আখ্যা দেওয়া হইয়াছে। বায়ুপুরাণের প্রথম অধ্যায়ের ৩১-৩২ শ্লোকে বলা হইয়াছে— “স্বধৰ্ম্ম এযমুতস্ত সম্ভিদৃষ্টি পুরাতলৈ । দেবতানামুধীনাঞ্চ রাজ্ঞাং চমিততেজসাম্ ॥ বংশানাং ধারণং কাৰ্য্যং শ্রুতানাঞ্চমহাত্মনম্। ইতিহাস-পুরাণেষু দিষ্ট ধে ব্ৰহ্মবাদিভিঃ ॥ পুরাণগুলিকে অনেকে, বিশেষতঃ অধিকাংশ পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ, ইতিহাসের মধ্যে স্থান দিতে অনিচ্ছুক। বস্তুত পুরাণপ্রণেতা ঋষিগণ অধিক পরিমাণে ঐতিহ্য বা কিম্বদন্তীর উপর, হয়ত কতকটা অনুমান ও সম্ভাব্যতার উপর, কতকটা প্রমাণনিরপেক্ষ ( a priori ) অস্তদৃষ্টি বা অস্তজ্ঞানের ( অনেকের মতে কল্পনার ) উপর নির্ভর করিয়া পুরাণগুলি উপাখ্যানের আকারে রচনা করিয়াছিলেন । কিন্তু সে জন্য র্তাহাদের ঐতিহাসিক ভাবনার ( Ilistorical Senseএর ) অভাব ছিল এ-কথা বলা সঙ্গত মনে হয় না । যুগে যুগে যে-সমস্ত কৰ্ম্মবীর ও চিন্তাবীর মহাপুরুষপরম্পরা ভারতের মানব-সমাজের উন্নতির পথে পথপ্রদর্শক হইয়াছেন, পুরাণেতিহাসে তাহাদের গুণকীৰ্ত্তি ব্যাখ্যাত হইয়াছে ; বস্তুতঃ তাহাদের কীৰ্ত্তিকলাপই প্রকৃত ইতিহাসের ভিত্তি। সে যাহা হউক, আমার বক্তব্য এই যে, বিশ্বমানবের আদিপর্বের জ্ঞান ও ধারণার অভাবে কোনও দেশের বা জাতির ইতিহাসের সম্যক্ উপলব্ধি হওয়া সম্ভবপর বলিয়া মনে হয় না। সাধারণতঃ এখন যাহাকে ইতিহাস বলা হয় তাহা ইতিহাস-বণিত জাতিগুলির বীরপুরুষদের কৰ্ম্ম বা পুরুষকারের সামান্ত প্রতিচ্ছবি মাত্র, জাতীয় জীবনের সমগ্র চিত্র নহে। বুদ্ধি, ভাব ও কৰ্ম্ম এই তিন শক্তির সমাবেশেই ব্যক্তিগত, সামাজিক ও জাতীয় জীবন গঠিত হয়। ভাব, বুদ্ধি ও কৰ্ম্ম পরস্পর অঙ্গাজীভাবে সম্বদ্ধ ; একটিকেও ছাড়িয়া দিলে জাতীয় ও ব্যক্তিগত জীবনের সম্যক্ পরিচয় দেওয়া হয় না । কোনও জাতির সমাজতত্ত্ব ও সংস্কৃতি তাহার ভাব ও চিস্তার পরিচায়ক। এজন্য এগুলি বাদ দিলে জাতীয় ইতিহাস সম্পূর্ণ হয় না। এই সমাজতত্ত্ব ও সংস্কৃতি-তত্ত্বই নৃতত্ত্বের