পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নন্দকুমার বিদ্যালঙ্কার শ্রীরমাপ্রসাদ চন্দ বাদী গোবিন্দপ্রসাদ রায়ের দাবী অমূলক প্রমাণ করিবার জন্য, এবং এই উদ্দেশ্যে কোটে যে সকল দলীলপত্র দাখিল করা হইয়াছিল তাহা তজুদিক (মৌলিক প্রমাণ) করাইবার জন্য প্রতিবাদী রামমোহন রায়কে অনেক সাক্ষী মান্য করিতে হইয়াছিল । তাহার পক্ষে এই দশ জন সাক্ষীর জবানবন্দী হইয়াছিল— ( ১ ) গুরুপ্রসাদ রায় । রামকাস্ত রায়ের জ্যেষ্ঠ ভাই নিমানন্দ রায়ের পুত্র। জবানবন্দীর সময় (১৮১৮ সালের ১লা অক্টোবর ) ইহার বয়স প্রায় ৪৭ বৎসর ছিল । ১৭৭২ সালে জন্ম ধরিলে এই সময়ে রামমোহন রায়ের বয়স দাড়ায় ৪৬ বৎসর, অর্থাৎ শুরুপ্রসাদ রায় রামমোহন রায়ের প্রায় সমবয়স্ক ছিলেন । প্রশ্নমালার (interrogatories) শেষভাগে লিখিত হলপের বিবরণে দেখা যায়, গুরুপ্রসাদ রায় প্রচলিত রীতিতে হলপ করিয়াছিলেন ; রামতন্ত্র রায়, গুরুদাস মুখোপাধ্যায়, গোপীমোহন চট্টোপাধ্যায় এবং নন্দকুমার বিদ্যালঙ্কারের মত স্বতন্ত্র রীতিতে হলপ করেন •াই ; অর্থাৎ গুরুপ্রসাদ রায় রামমোহন রায়ের আত্মীয় সভায় প্রচারিত ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়াছিলেন না । ( ২ ) রামতই রায় । রামকান্ত রায়ের আর এক ভাই, গোপীমোহন রায়ের পুত্র । বয়সে রামমোহন রায়ের অপেক্ষ সাত-আট বৎসরের ছোট। ইনি এক সময় তমলুকের নিমক মহালের দেওয়ান ছিলেন । ইনি স্বতন্ত্র রীতিতে হলপ করিয়াছিলেন, অর্থাৎ রামমোহন রায়ের ধৰ্ম্মমত গ্রহণ করিয়াছিলেন । (৩) গুরুদাস মুখোপাধ্যায়। রামমোহন রায়ের ভাগিনেয়। জবানবন্দীর সময় (১৮১৯ সালের ৩০শে এপ্রিল) বয়স প্রায় ৩২ বৎসর ছিল । ইহার সম্বন্ধে অনেক কথা পূৰ্ব্ব পূর্ব প্রবন্ধে উক্ত হইয়াছে। হলপের রীতি হইতে দেখা যায় ইনি মাতুলের শিষ্য হইয়াছিলেন। এই তিন জন সাক্ষী রাধানগরের এবং লাঙ্গুড়পাড়ার রায়-পরিবারের ইতিহাস বর্ণনা করিয়াছেন। ( ৪ ) রাজীবলোচন রায় । জবানবন্দী দেওয়ার সময় ( ১৮১৯ সালের ২০শে এপ্রিল ) বয়স পঞ্চাশ বৎসর কিম্ব ততোধিক ছিল । রাজীবলোচন রায় বলিয়াছেন, ত্রিশ বৎসর যাবৎ, অর্থাৎ রামমোহন রায়ের বয়স যখন ১৬১৭ বৎসর তদবধি তিনি তাহাকে চেনেন। ত্রিশ বৎসর এখানে মোটামুটি ভাবে ব্যবহৃত হইয়াছে। ষোল বৎসর বয়সের সময় রামমোহন বিদেশ ভ্রমণে বাহির হইয়াছিলেন ; স্বতরাং মনে করিতে হইবে তাহার পূর্বাবধি, অর্থাৎ আশৈশব, রাজীবলোচন রামমোহন রায়কে চিনিতেন । রামমোহন রায়ের বৈষয়িক জীবনের সহিত রাজীবলোচন রায় বিশেষ ভাবে জড়িত ছিলেন এই কথা পূৰ্ব্ব পূৰ্ব্ব প্রবন্ধে উক্ত হইয়াছে , রাজীবলোচন রায় প্রচলিত রীতি অনুসারে হলপ করিয়াছিলেন, অর্থাৎ তিনি গুরুপ্রসাদ রায়ের মত রামমোহন রায়ের ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়াছিলেন না। ( ৫ ) গোপীমোহন চট্টোপাধ্যায়। জবানবন্দী দেওয়ার সময় ( ১৮১৮ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর ) ইহঁর বয়স ছিল প্রায় ৩২ বৎসর । ১২০৮ সনে ( ১৮০১-২ সালে ) গোপীমোহন রামমোহন রায়ের তহবীলদার (খাজাঞ্চী ) নিযুক্ত হইয়াছিলেন। হলপের রীতি হইতে দেখা যায় ইনি রামমোহন রায়ের শিষ্য হইয়াছিলেন। এই পাচ জন প্রধান সাক্ষী । অপর পাচ জন সাক্ষী কোটে দাখিল করা দলীলে নিজের বা অপরের স্বাক্ষর এবং হস্তাক্ষর তজ দিক করিয়াছেন বা প্রতিবাদীর দুই-একটি কথা সমর্থন করিয়াছেন মাত্র । ইহাদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য নন্দকুমার বিদ্যালঙ্কার । ১২১৬ সনের ৭ই পৌষ রাজীবলোচন রায় গুরুদাস মুখোপাধ্যায়ের নামে গোবিন্দপুর এবং রামেশ্বরপুর তালুক সম্বন্ধে ষে একরারনামা সম্পাদন