কীৰ্ত্তিক করিতে বলিলেন। আমার কাছে উক্ত পুস্তকের সংস্কৃত ভাষার সংস্করণ ছিল এবং তাঁহার তিব্বতী অনুবাদের সমস্ত শ্লোক কুশোকের কণ্ঠস্থ ছিল। আমি সংস্কৃত শ্লোক পাঠ ও তাঁহা ভাঙা ভোটীয় ভাষায় অনুবাদ করিতে লাগিলাম, কুশোক ভাবাৰ্থ বুঝিয়া তিব্বতী শ্লোক আবৃত্তি ও ব্যাখ্যা করিতে লাগিলেন। এইরূপে অনেক রাত্ৰি পৰ্য্যন্ত ধৰ্ম্মচর্চা করার পর সকলেই সেই ছোলদারীর নীচে কুণ্ডলী পাকাইয়া শুষ্টয়া পড়িলেন। শৈত্যের প্রভাবে অস্নাত জনমণ্ডলীর কাপড়ের দুর্গন্ধ পাইলাম না বটে, কিন্তু সকালে উঠিয়া বুঝিলাম যে আমার কাপড়ের মধ্যে কয়েক শত উকুন আশ্রয় লইয়াছে। কাপড়-চোপড়ে খুজিয়া অনেকগুলি বাহিরও করিলাম। সারারাত বরফ পড়িয়াছে দেগিলাম, ছোলদারীও বহুবার ঝাড়িতে হইয়াছে শুনিলাম । প্রাতে বাহিরে আসিয়া দেখিলাম কাল যে-ভূমি নগ্ন ছিল আজ তাহা এক ফুটের অধিক পুরু তুষারের আবরণে আচ্ছাদিত। তুষারস্তুপ গলিয়া একটি ক্ষীণ ধারা নীচের দিকে বহিতেছে, সেখানে গিয়া মুখ হাত ধুইলাম। আগুনের জন্য ঘুটে পাওয়া অসম্ভব, স্বতরাং চায়ের আশা ছাড়িয়া বিস্কুট ও কমলালেবুর মিঠাই পাইয়া প্রা তরাশ শেষ করিলাম । স্বমতি-প্রজ্ঞ নীচে উপরে চারি দিকের তুষারপ দেখিয়া বলিলেন, “এখানেই এত বরফ, উপরের লা নিশ্চয়ই আরও তুষারাবৃত, এদিকে তুষারপাত সমানে চলিয়াছে, সুতরাং আমাদের লপ-চী যাওয়ার ইচ্ছ। ত্যাগ করা উচিত।” আমি ত তাঁহাই চাই। কুশোকের কাছে বিদায় লইলাম, তাহাকে লপ-চী যাইতেই হইবে । পুনরায় নিজের বোঝা কাধে করিয়া নীচের দিকে চলিতে লাগিলাম। পথও তুষারাবৃত, তবে উৎরাইয়ের সঙ্গে সঙ্গে বরফের আবরণী পাতল হইয়া আসিল । শেষে তুষার-রহিত ভূমিতে আসিয়া পড়িলাম, এখানে টুপটাপ, বৃষ্টি চলিয়াছে। এইরূপে ভিজিতে ভিজিতে বেলা দশটায় আমরা টণী-গঙে ফিরিয়া আসিয়া, সেখানকার গোবার ( মোড়ল ) গৃহে আশ্রয় লইলাম। গোব আমাকে আশ্বাস দিলেন যে পরদিনের গন্তব্য স্থান পৰ্য্যন্ত পৌছাইয়া দিবার জন্ত ভারবাহী লোকের ব্যবস্থা করিয়া দিবেন। আমাদের দু-জনেরই জুতার তলা ছিড়িয়া নিষিদ্ধ দেশে সওয়া বৎসর ¢ግ গিয়াছিল, গোবার ছেলেকে কিছু পয়সা দিয়া তাহাও মেরামত করাইয়া লইলাম। এইরূপে ২রা জুন সেখানেই কাটিয়া গেল, দিনের বেল| চমরীর ছদ্ধের ঘোলে সজু মাখিয়া খাইলাম, রাত্রে স্বমতি-প্রজ্ঞ ভেড়ার চব্বি দিয়া খুকৃপ রাধিলেন। পরে গুনিলাম ফুশোকের দলের কয়েক জন বরফের মধ্যে রাস্ত খুজিয়া ন পাঠয়া ফিরিয়া আসিয়াছে। সুমতি-প্রজ্ঞ বলিলেন আমরা গেলে আমাদেরও ঐ দশা হইত। 歌 豪 豪 চ-সত্ত্ব, খাইয়া, ভারবাহীর পিঠে মালপত্র চাপাইয়া, ৩রা জুন সকাল ৭-৮টার সময় আমরা রওয়ানা হইলাম। ভারবাহীর পক্ষে এক মণ দেড় মণ বোঝা তুচ্ছ, সুতরাং আমি খালি-হাত এবং সুমতি-প্রজ্ঞের বোঝাও খুবই হাল্কা, রাস্তাও বরাবর উৎরাই চলিয়াছে। বেল এগারটার মধ্যেই আমর তর্গ্যে-লিঙ গ্রামে পৌছিলাম। মুমতি-প্রজ্ঞ চতুর্থ বার এই পথে ফিরিতেছেন, এই জন্য পথের পাশের বসতিগুলিতে স্থানে স্থানে তাহার পরিচিত লোক ছিল । এখানেও মোড়লের গৃহেই আমাদের স্থান হইল । গৃহকত্রী পঞ্চাশোৰ্দ্ধবয়স্ক, তাহার স্বামীর বয়স অনেক কম । তিব্বতে এই ব্যাপার খুবই সাধারণ। আমি ত প্রথমে এই দম্পতীর পতি-পত্নী সম্বন্ধ বুঝিতেই পারি নাই, যখন দেখিলাম পুরুষটি স্ত্রীর চুল খুলিয়া তাহা ধোওয়া ও চাঙ প্রদেশের ধন্তকাকার শিরোভূষণে তাহার সংবরণে সাহায্য করিতেছে, তখন জিজ্ঞাসা করায় আসল সম্বন্ধ জানিলাম। স্বমতি-প্রজ্ঞ বৈদ্য, তান্ত্রিক এবং ভাগ্যগণনায় পট, তিমি চ পানের পর গ্রামের ভিতর চলিলেন । কিছুক্ষণ পরে তিনি ফিরিয়া আসিয়া আমাকেও সঙ্গে ধাক্টতে বলিলেন। কারণ জিজ্ঞাসা করায় গুনিলাম তিনি পঞ্চাশ বৎসর বয়স্ক এক বন্ধ্যা স্ত্রীলোককে সস্তান লাভের জন্ত যন্ত্রদান করিতে যাইতেছেন-- তিনি ভোটীয় অক্ষর লিখিতে পারেন না, স্বতরাং আমাকে প্রয়োজন। শুনিয়া আমি হাসিতে লাগিলাম, বলিলা, “প্রৌঢ়ার উপরও আপনি আপনার বিদ্যার পরীক্ষা করিতে চীনে ?” তিনি বলিলেন, “ওখানে হাসিও না যেন, ধনী གན་ནི་། ། -
পাতা:প্রবাসী (ষট্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।