পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আরও আশ্চৰ্য্য হইয়া গেলাম তাহার ব্যবহারে । বছর-দশেকের মেয়ে—অবাক হইয়া গেলাম তাহার গাম্ভীৰ্য্য দেখিয়া । আচারে, ব্যবহারে, ভাবে ভঙ্গীতে বেশ স্বম্পষ্ট করিয়াই সে বুঝাইয়া দিল যে আমাকে সে গ্রাহের মধ্যেই আনিতেছে না। আমার সম্বন্ধে একেবারে নির্বিবকার। মনে মনে আত্মসম্মানে একটু আঘাত লাগিল। চুপ করিয়া রহিলাম। বলিবার কিষ্ট বা ছিল ।...সে দিনটা স্পষ্ট মনে পড়িতেছে। 粵 粵 彎 তকুর বাড়ী প্রায়ই নিমন্ত্রণ হইত। প্রায় প্রতি রবিবারেই। স্বতরাং ক্রমশঃ কথা দু-একটা হইলই। বেশ মনে পড়িতেছে প্রথম দিনই সে আমাকে বলিয়ছিল, "দাদাদের ক্লাসে আপনিই বুঝি ফাষ্ট বয় ?” সত্য কথাই বলিয়াছিলাম, “হ্যা—” উত্তরে সে কি বলিল শুনিবেন ? “বই মুখস্থ ক’রে ফাষ্ট সবাই হতে পারে। দাদার মতন অমন স্বন্দর কবিতা লিখতে পারেন আপনি ?” মনে পড়িতেছে একটু সলজ্জ গলা-থাকারি দিয়া বলিয়াছিলাম, “আমি তোমার দাদার মত নই ত। হ'তেও 5ाझे न-” “পারবেনই না—” দশ বছরের মেয়ে ! V দেখিতে দেখিতে চারিট বৎসর কাটিয়া গেল। এই চারি বৎসরে ত্ৰৈলোক্যের বাড়ী বহুবার যাতায়াত করিয়াছি, কিন্তু মালতীর অর্থাৎ তকুর বোনের সহিত খুব অল্প কথাই হইয়াছে। যখনই যাইতাম দেখিতাম হয় সে আয়নায় মুখ দেখিতেছে—না হয় শাড়ীটি গুছাইয়া পরিতেছে—না হয় পরিপটি করিয়া চুল বাধিতেছে—না হয় অমনি একটা কিছু। নানাভাবে সে আপনাকে সাজাইয় গুছাইয়া রাখিতে ভালবাসিত। আয়নায়ু যখন সে চাহিয়া থাকিত মনে হইত যেন সে প্রণয়ীর মুখপানে চাহিয়া আছে। নিজের মুখখানির প্রেমে সে নিজেই পড়িয়াছিল। সে ষে অদ্ভুত রূপসী এই সত্য কথা সে সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করিয়াছিল এবং একদওও ভুলিয়া থাকিত না । আমার সহিত কথাই বলিল না! _তাহার বয়স যত বাড়িতে লাগিল—মাদকতাও বাড়িতে লাগিল । আমার সেই সম্ভজাগ্রত যৌবনে—বেশী বক্তৃত৷ করিয়া সময় নষ্ট করিতে চাহি না—আপনারা যাহা আশঙ্কা করিতেছেন তাহাই ঘটিল। জীবনে সেই প্রথম প্রেমে পড়িলাম এবং সেই মেয়ের সহিত যে আমার সঙ্গে ভাল করিয়া কথা কহে নাই— যাহার ভাবে-ভঙ্গীতে কথায়-বাৰ্ত্তায় আমার প্রতি অবজ্ঞাই অক্ষণ ফুটিয়া উঠিয়াছে । আশীর্ষ্য প্রেমের নিয়ম ! আমি ঠিক তাহাদের পালটি ঘর ছিলাম, আমার ভাল ছেলে বলিয়া একটু স্বনামও ছিল, মালতী যদি সামান্য একটু আশ্বাস দিও—বিবাহ আটকাইত না। কিন্তু অশ্বাস সে মোটেই দিল না। একদিন মনে পড়িতেছে ভাঙ্গকে আড়ালে পাইয়াছিলাম—মমের কথাটা গুছাইয়া বলিব মনে করিয়া অনিশ্চিত ভাবে একটু আমতী-আমতা করিতেছিলাম। আমার ভাব-গতিক দেখিয়া মালতী হাসিয়া বলিয়াছিল, “আপনি যা বলবেন ও আমি বুঝতে পারছি । কিন্তু বলবেন না। নিজের চেহারাটা কখনও দেগেছেন আয়নায় ?” এই বলিয়া সে বাহির হইয়া গিয়াছিল ।------সেদিন সন্ধ্যায় স্কুলের গেলার মাঠটাতে অনেকক্ষণ একা এক ঘুরিয়া বেড়াইয়াছিলাম মনে পড়িতেছে । ইতাও মনে পড়িতেছে যে অত বড় রূঢ় আঘাতের পরও মালতীর উপর বিতৃষ্ণা আসে নাই । বরং তাঙ্গর পক্ষ লষ্টয়া নিজেরই সঙ্গে তর্ক করিয়াছিলাম। যাঙ্গর গৰ্ব্ব করিলার মত রূপ আছে সে তাহা লইয়া গৰ্ব্ব করিবে বষ্টকি ! রূপসী মাত্রেই গরবিনী। গৰ্ব্বট সৌন্দর্য্যের একটা অলঙ্কার । অনেক তপস্যা করিয়া ভবে স্বন্দরীর মনের নাগাল পাওয়া যায়। এমনি কত কি যুক্তি। আমি কিন্তু আর সময় পাই নাই। সেটা ম্যাটিক দিবার বছর । পড়াশোনায় কিছুদিন ব্যস্ত রছিলাম— তাহার পর পরীক্ষা দিয়া বাড়ী চলিয়া আসিতে হুইল । মানপুরে ফিরিয়া যাওয়ার অজুহাত শীঘ্র আর পাওয়া গেল না । § ইহার পর আরও চারি বংসর কাটিল। আমার উপর দিয়া অনেক ঝড়ঝাপটা গেল—বাব, মা মারা গেলেন। সংসারে মামার আর মাপন বলিত্তে