পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যাপন করছে সে (মনটা যেনতার অসাড় ੋ aছ।"াব স্বামীর আগু অঙ্গুসন্ধানের সম্ভাবনা নিখিলনাথের উদ্বের্গপীড়িত চিত্তে চেতিয়ে তোলবার মত স্বার্থপরতা তার স্বভাবg বিরুদ্ধ। নিখিলমাথ এ বিষয়ে যে সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত বা উদাসীন নয়-ভা সে কৃতজ্ঞচিত্তে ভতুভব করত। ব্যথিত হৃদয়ে অসহায় ব্যাকুল বেদনায় সে পথের দিকে চেয়ে বসে আছে ৷ সন্ধ্য। সমাগত প্রায়। গ্যাসের বাতি জ্বালান হয়ে গেছে । অল্প দূরে একটা গ্যাস-পোষ্টের তলায় দাড়িয়ে একটা লোক তাদেরই বাড়ীটাকে লক্ষ্য করছে ব’লেই মনে হ’ল । আলোআবছায়ায় মুখ ভাল দেখা যায় না। কমল ভাবলে সীমার দলের লোকই হবে বোধ হয়। তবু কি জানি–সীমাকে জানান উচিত বলেই মনে হ’ল ! উঠে যাবে—এমন সময় তার ভঙ্গী দেখে বুকটা ধড়াস ক’রে তার মনে হ’ল সে লন্দলাল। লোকটা তখন সরে গেছে । কমলের মনটা কেমন বিকল হয়ে রইল । নিজের চিস্তাকে ভোলবার জন্যে সে নিখিলের কাজে তার ক্ষুদ্র শক্তি নিযুক্ত করতে চেষ্টা করে। স্বযোগ খুঁজে নিয়ে প্রায়ই সে সাবধানে ধীরে ধীরে তর্ক তোলে এবং নিখিলমাথের শিক্ষার যথাসাধ্য সদ্ব্যবহার করে নিখিলের প্রতি তার কৃতজ্ঞতার ঋণ পরিশোধ করতে চেষ্টা করে । কমলের চিত্তে এই তর্কের আর একটি আকর্ষণ ছিল ; তা সীমাকে নিরীহ পন্থায় প্রত্যাবৃত্ত করা নয় ; সীমার প্রতি নিখিলের দুনিবার আকর্ষণের কথা কমলের ক্রমে আর অগোচর ছিল না। স্ত্রীলোকের চিত্তে অল্পপ্রেরণার পক্ষে তাই কি যথেষ্ট নয় ? তর্কের মুখে শিক্ষামত কমলা সেদিন সীমাকে বলেছিল, “হবে না কেন ? পৃথিবীর সমস্ত মানুষ স্বাধীনতা লাভ ক’রে নিজেদের জন্মগত উপস্বত্ব ভোগ করবে, মনুষ্য-সমাজের এ নিয়মই ময় ৷ এক জন অপরের উপর প্রভুত্ব করবেই। কোন একটা স্বাধীন দেশের মানুষ যে সেখানকার অন্ত কতকগুলি মামুষের প্রভুত্বের বা আইনের বা সামাজিক স্তরগত নিয়মতন্ত্রের অধীন এ ত দেখতেই পাচ্ছি। তবে তোমারই দেশের কতকগুলি মানুষ তোমার উপর প্রভুত্ব করছে না, অন্ত দেশের মামুষে করছে, এতে পরাধীনতার তফাৎ হচ্ছে ८कांशीघ्रं ?" “হচ্ছে ; এক-শ বার হচ্ছে। স্বাধীনতা বলতে পগুর জীবন আমি কখনও বলতে চাই নি—যাদের রাষ্ট্র নাই, সমাজ নাই, সংস্কৃতি নাই—কিছুই নাই । স্বাধীনতা বলতে রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা, জাতীয় স্বাধীনতা বোঝায়। যেখানে নিজের অর্থ আমি নিজের কল্যাণের জন্ত স্বেচ্ছায় ব্যয় করতে পারি, যেখানে মাহুষের অধিকার নিয়ে সমস্ত জাতির সঙ্গে সমান গৌরবে দাড়াতে পারি, যেখানে—” “সোজা কথায় বল না ভাই যে মানুষের মঙ্গলের চেয়ে মানুষের দেমাকটাকে বড় করে বলতে চাও—তাতে মঙ্গল হয় ভাল, না-হয় নেই, নেই। স্বাধীন হ’লেই যে মানুষে মনুষ্যত্বলাভ করে মা সে ত হাজার বার তুমিই ভাই দেখাচ্ছে—অন্য সব স্বাধীনতা-মত্ত জাতির দৃষ্টান্ত দেখিয়ে । তবে স্বাধীনতা-স্বাধীনতা করে ক্ষেপে বেড়াবার আমাদের কি আছে বল ত ? দেশের লোককে মানুষ ক'রে তোল দেখ স্বাধীন হওয়ার চেয়ে অনেক বড় হবে । সে এমন কি শেষে, চাই কি স্বাধীনও হয়ে যেতে পারে। মতুষ্যত্বলাভ করলে স্বাধীন যার তাঁদের চেয়েও কি বড় হবে না ? এই যে তুমি নারীভবন করেছ এইটাকেই গড়ে তোল না। আমাদের দেশের স্ত্রী-পুরুষ কেউ আত্মনির্ভরশীল নয়। সকলকে পায়ের উপর দাড়াতে শেখাও না । আরও ত কেউ কেউ এই কাজে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছে । তারা তোমার মনুষ্যত্ব-বিরোধী স্বাধীনতা লাভের চেষ্টার চেয়ে খারাপ কিছু করেছে বলে ত আমার মনে হয় না। এই কমলাপুরীর কথাই ধর না কেন। দেথ না, পাৰ্ব্বতী দেবী কি করে তুলেছেন ? এই ত কাজ ।” so “পাৰ্ব্বতী দেবীটি কে ?” “বা কমলাপুরীর নারী-প্রতিষ্ঠানের কথা শোন নি ? এ রকম একটা প্রকাও জিনিষ এক জন মাত্র মেয়ের পক্ষে গড়ে তোলা যে কী—পড়লে অবাক হ'তে হয়। দাড়াও— এই বলে কমলা নিখিলনাথের সংগৃহীত কমলাপুরীর প্রসপেক্টস, ইত্যাদি এনে দেখাল। কাগজ পড়তে পড়তে সীমার মনের চিন্তা অন্ত ধারায় বইতে লাগল। “এত বড় একটা প্রতিষ্ঠানকে যদি হাতে পাওয়া যায় ! এই ত চাই ; নিজের পায়ের উপর যারা নির্ভর করে আত্মীয়ের পরাধীনতাকে যার ঘৃণা করতে শিখেছে, তাদের মনে বিজাতির পরাধীনতার উপর বিদ্বেষ