পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

7ਂ "छु...ढ़ * বা করব ? এক একা তোমার সেই বাউলের গান গেয়ে বেড়াতে হবে আর কি ? মনটা একটু খারাপ হ’ল । ইচ্ছা ছিল সমস্ত উৎসাহ আনন্দ এবং কাজের শেষে একটি গল্প লিখবার । সে স্নধোগ আর পেলুম না। কলকাতা গিয়ে কি সম্বল নিয়েই বা গল্প লিপব ? নির্জন গ্রাম এসে মনের মধ্যে বারে বারে দেখা দেবে । শুধু গ্রাম আর গাছপালা নিয়ে কি গল্পষ্ট বা লিখব ? এমন একটি মেয়ে যে সমস্ত দিন সংসারের কাজ করে আর গান গায়, সে মেয়েটিকে পাষ্ট কোথায় ? বাউলের গানের করণ স্থর এসে বারে বারে মনের চিস্থাপাপ্নাকে বিক্ষিপ্ত করতে লাগল। আমার সেই বইছড়ানো অন্ধকার ঘর আমাকে বারে বারে ডাকৃতে লাগল। ছুটিতে বাড়ী এসে গ্রামের কাজ-টাজ করা, আবার ছুটি শেধ হয়ে গেলে নিজের কৰ্ম্মস্থানে ফিরে যাওয়া—এ রকম ত কতবার হয়েছে । কিন্তু এবারে মনটা যেন কিছু বেশী মাত্রায় উদাসীন হয়ে আছে । মাধবকে ডেকে বললাম, 'মাধব, সবই ত হ’ল, কিন্তু একট। গল্প লিখবার ইচ্ছা ছিল, সেটা বোধ হয় এ যাত্র আীর হ’ল না ।” মাধব তার ঋকৃঝকে সাদা দু-পাটি দাত বের ক’রে হেসে বল্‌লে, ‘গল্প—গল্প আবার কি রে ? গল্প লিখিস না কি তুষ্ট ? ‘মাঝে মাঝে লিখতে ইচ্ছে যায় রে! করুণ কোনও কাহিনী লিখতে আমার বড় ইচ্ছে করে । মাধব একটুখানি মাপা চুলকে বললে, বই-টই পড়ি বটে মাঝে মাঝে, কিন্তু আমার ভাল লাগে না কেন বলতে পারিস ? মাধবের কথায় তত কান দিই নি । নিজের মনে গল্পের ভাবনা আর আমার মুখর অন্ধকার ধরের ভাবনা নিয়েই ছিলাম। মাধব আমাকে অন্যমনঙ্গ দেখে বললে, “কি ভাবছিস অত ? আমার কথা কি শুনতে পানি ? বললাম, ‘গল্পের কথাই ভাবছি । বই-টই পড়ার কথা বলছিলি ? বইয়ের লেখার সঙ্গে সব সময়ে সাধারণ জীবন খাপ খায় না, তাহ বোধ হয় তোর বই পড়তে ভাল লাগে না ? মাধব বললে, “কি জানি ? অনেক মোটা-মোটা নভেল পড়েছি, কিন্তু কেন জানি নে, সে-সব পড়ে আমি তেমন আনন্দ পাই নে ' 磡 豪 豪 মাধবের সঙ্গে সঙ্গে চলতে লাগলাম। একখানা বারোয়ারী পূজার ঘর তুলতে হবে—মাধবের সঙ্গে সেই বিষয়ে কথাবাৰ্ত্ত কইতে লাগলাম। চাদ কারা কারা দেবে বা ন-দেবে তাই নিয়ে আলোচনা। বসে গল্প করছে । কথাবাৰ্ত্তা । তারা বললে, ‘দাদাঠাকুররা—যাওয়া হয়েছিল রাস্তার পাশে মাদুর বিছিয়ে গ্রামের লোকেরা বসে অগাধ আলতী—তামাক—চাষ-আবাদের কোথায় ? মাধব বললে, “এই তোর চাদ দিবি ? বারোয়ারী ঘর তুলছি আমরা " চাদ - তারা যেন আকাশ থেকে পড়ল । নিতান্ত জোর-জবরদস্তি ক’রে চাদী আদায় করা ছাড়া উপায়াস্তর নেই । মাধব বললে, “আমি ফদ ক’রে ফেলছি—চাদ দিতে হবেই।’

  • আচ্ছ, আগে ফাঁদ ত যাবে।”

তারা যেন এই রকম চিরকাল । স্থির হয়ে বসে আছে— রৌদ্র বৃষ্টি—সৰ্ব্ব অবস্থাতেই একটি অসীম উদাসীনতা । জোর কর, চেচাঙ–কথা কইবে । নইলে, তামাক টানবে বসে ব’সে অনন্ত কাল ধ'রে । মাধবের সঙ্গে বসে বসে একটি ফন্স ক'রে ফেলা গেল । দাদামশায়ের নামটি আমরা সৰ্ব্বাগ্রে দিলাম। দাদামশায় তার দাওয়ায় বসে জমাপরচের খাতা ওলটাতে ওলটাতে বললেন, “আমি কিন্তু বেশী দিতে পারছি নে " তার পর দাদ-মশায়ের কাছ থেকে আমরা পরামর্শ নিতে লাগলাম। তিনি তার পুরনো চশমাজোড়া মুছতে মুছতে বলতে লাগলেন, ‘খুব সাবধান ভায়ারা— বেশী চেচামেচি ক'রে • । যে যা দেবে তাই হাসিমুথে নিতে হয়।" 豪 豪 豪 মাধব চলে গেলে এক এক ফিল্গুচি গ্রামের পথ দিয়ে। ঘন বঁাশের বন মাথার উপর নত হয়ে পড়েছে। যত দূর দৃষ্টি যায় শুধু বন—ঘল হয়ে ক্রমশঃ অনেক দূরে জমাট অন্ধকারে মিশে গেছে । সেই ছায়াচ্ছন্ন পথ দিয়ে এক এক ফিরছি । পিছন থেকে কে ডাকল, ‘বাবুজী ? পিছনে চাইলাম। চিনতে পারলাম না। করলাম, কে ?” “চিনতে পারবেন না বাবু আমাকে। আপনাকে অনেক ছোট দেখেছি।" “কি নাম ?

  • আমার নাম সহায়রাম–কথকতা করি, গান গেয়ে বেড়াই। এই হল আমার পেশা '

‘গান গেয়ে বেড়াও ? কি গান ?—গানের কথা শুনলেই বিহ্বল হয়ে পড়ি। ‘এই ধরুন গিয়ে রামায়ণের গান, বেহুলার গান—এই সব ’ তৈরি হোক, তার পর দেখা জিজ্ঞাসা