পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

E-o এমন অনেক আছেন এখনও ধারা এই পৃথিবীকে মার্জনা করছেন, আমাদের জীবনকে স্বন্দর উজ্জল করছেন। বিজ্ঞানে জেনেছি, জন্তুরা যে বিষনিঃশ্বাস পরিত্যাগ করে গাছপালা সে নিঃশ্বাস গ্রহণ ক’রে প্রাণদায়ী অক্সিজেন প্রশ্বসিত করে দেয় । তেমনই মাহুষের চরিত্র প্রতিনিয়ত ৰে বিষ উদগার করছে নিয়ত তা নিৰ্ম্মল হচ্ছে পবিত্র জীবনের সংস্পর্শে। এই শুভচেষ্টা মানবলোকে ধারা জাগ্রত রাখছেন তাদের ধিনি প্রতীক, যন্তগ্রং তন্ন আন্ধব, এই বাণী ধার মধ্যে উজ্জল পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে তাকে প্ৰণাম করার যোগেই সেই সাধুদের সকলকে একসঙ্গে প্ৰণাম জানাই-ধারা জাত্মোৎসর্গের দ্বারা পৃথিবীতে কল্যাণ বিতরণ করছেন । আজকের দিন র্যার জন্মদিন ব'লে খ্যাত সেই ধীশুর নিকটই উপস্থিত করি জগতে যারা প্ৰণম্য র্তাদের সকলের উদ্দেশে প্রণাম। আমরা মানবের পরিপূর্ণ কল্যাণরূপ দেখতে পেয়েছি কয়েক জনের মধ্যে । এই কল্যাণের দূত আমাদের ইতিহাসে অল্পই এসেছেন, কিন্তু পরিমাণ দিয়ে কল্যাণের বিচার তো হতে পারে না । ভারতবর্ষে উপনিষদের বাণী মানুষকে বল দিয়েছে কিন্তু সে তো মন্ত্র, ধ্যানের বিবয়। র্যাদের জীবনে রূপ পেয়েছে সেই বাণী তারা যদি আমাদের আপন হয়ে আমাদের প্রত্যক্ষ হয়ে আসেন তবে সে আমাদের মস্ত স্বযোগ । কেন না শাস্ত্র বাক্য তো কথা বলে না, মানুষ বলে । আজিকে আমরা র্যার কথা স্মরণ করছি তিনি অনেক আঘাত পেয়েছেন, বিরুদ্ধত, শত্রুভার সন্মুখীন হয়েছেন, নিষ্ঠুর মৃত্যুতে র্তার জীবনান্ত হয়েছিল। এই ষে পরম দুঃখের আলোকে মানুষের মচুন্যত্ব চিরকালের মতো দেদীপ্যমান হয়ে আছে এ তো বই-পড়া ব্যাপার নয়। এখানে দেখছি মানুষকে দুঃখের


-

আগুনে উজ্জল। একে উপলব্ধি করা সহজ ; শাস্ত্রবাক্যকে তো আমরা ভালবাসতে পারি নে। সহজ হজ্ব আমাদের পথ, যদি আমরা ভালবাসতে পারি তাদের, র্যারা মানুষকে ভালবেসেছেন। বুদ্ধ যখন অপরিমেয় মৈত্রী মানুষকে দান করেছিলেন তখন তো তিনি কেবল শাস্ত্র প্রচার করেন নি, তিনি মানুষের মনে জাগ্রত করেছিলেন ভক্তি ; সেই ভক্তির মধ্যেই যথার্থ মুক্তি । খ্ৰীষ্টকে ধারা প্রত্যক্ষভাবে ভালবাসতে পেরেছেন তারা শুধু এক বসে রিপু দমন করেন নি, তারা দুঃসাধ্য সাধন করেছেন। তারা গিয়েছেন দূর-দূরাস্তরে, পৰ্ব্বত সমুদ্র পেরিয়ে মানবপ্রেম প্রচার করেছেন। মহাপুরুষের এই রকম আপন জীবনের প্রদীপ জালান, তারা কেবল তর্ক করেন না, মত প্রচার করেন না । তারা অামাদের দিয়ে যান - মাস্থ্যরূপে আপনাকে । খ্ৰীষ্টের প্রেরণ মানবসমাজে আজ ছোট বড় কত প্রদীপ জালিয়েছে, অনাথ পীড়িতদের দুঃখ দূর করবার জন্তে র্তারা অপরিসীম ভালবাসা ঢেলে দিয়েছেন। কী দানবত আজ চারদিকে, কলুষে পৃথিবী আচ্ছন্ন—তবু বলতে হবে, স্বল্পমপ্যস্য ধৰ্ম্মস্য ত্রায়তে মহুতো ভয়াৎ । এই বিরাট কলুষ-নিবিড়তার মধ্যে দেখা যায় না তাদের ধারা মানবসমাজের পুণ্যের আকর। কিন্তু তারা নিশ্চয়ই আছেন, নইলে পৃথিবী অভিশপ্ত হ’ত, সমস্ত সৌন্দৰ্য্য মান হয়ে যেত। সমস্ত মানবলোক অন্ধকারে অবলুপ্ত হ’ত 1 * ২৫শে ডিসেম্বর, ১৯৩৬ শাস্তিনিকেতন e শান্তিনিকেতন মন্দিরে বড়দিন উপলক্ষ্যে কথিত । ইপুলিন বিহারী সেন কর্তৃক অজুলিখিত ও বক্তা কর্তৃক সংশোধিত ।