পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বসিবার জায়গার পিছন হইতে এবং ১৯৩৬ সালের নবেম্বর মাসে লাহোর হইতে প্রেরিত আমি পোলিষ্টিকূটাস স্বাঙ্গুইনিয়াস্ এবং ইরূপেক্স (Irpex ) নামক ছত্রাকের দুইটি ফলাৰয়ব সংগ্ৰহ করিয়াছিলাম। ১৯৩১ সালে ফিলিপাইনস্ হইতে ডাঃ হামূফ্রি গাড়ীর কাঠের উপর ফলোৎপাদনকারী তিনটি বিভিন্ন প্রকারের ‘পলিপোরে’র কথা আমাদের জানাইয়াছেন, যথা লেঞ্জাইটিস্ ট্রিয়েটাস, পোলিট্রিকূটাস্ স্যাঙ্গুনিয়াস ও ট্র্যামিটিস্ ভাসেটিলিস্ । এর সকলেই গ্রীষ্মপ্রধান দেশে জন্মে। তিনি ছত্রাকের দ্বারা এইরূপ ক্ষতি নিবারণের দুই প্রকার পন্থা উল্লেখ করিয়াছেন। প্রথম পন্থা হইতেছে, মোটরগাড়ী-নিৰ্ম্মাতা ব্যবসায়ীদের পক্ষে একান্ত টেকসই কাঠ বাছাই করিয়া তাহার অন্তঃকাষ্ঠ হইতে গাড়ীর দেহ নিৰ্ম্মাণ করা। দ্বিতীয়টি হইতেছে, যদি সাধারণ কাঠই ব্যবহার করিতে হয় তাহা হইলে সেই কাঠ ভেদ করিয়া ক্রিয়োজোট, জিঙ্ক ক্লোরাইড অথবা সোডিয়াম ফুরাইড জাতীয় ছত্রাক-নিবারক কোন প্রকার পদার্থ তাহার মধ্যে প্রবেশ করাইয়া দেওয়া। আজকাল কতকগুলি বিলাতী গাড়ীতে গ্রীষ্মপ্রধান দেশের আবহাওয়ার উপযোগী কাঠ ব্যবহার করা হইতেছে এবং সেইগুলি আমাদের দেশের পক্ষে ভাল ফলই দিতেছে। এই ব্যাধির আক্রমণের পূর্বেই প্রতিরোধ করিবার চেষ্টা করা প্রয়োজন। কোন গাছ যদি একবার এই ভয়ঙ্কর শক্রর দ্বারা আক্রান্ত হয় তাহ হইলে তাহাকে বাচান অতি দুরূহ ব্যাপার। অন্ত:গলন-উৎপাদনকারী ছত্রাক ৩ নং চিত্ৰ—মোটরগাড়ীর কাঠ ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত একবার কোন গাছকে আক্রমণ করিলে সে গাছকে কিছুতেই বাচান ৰায় না। তাহ চিরদিনের মত নষ্ট হইয়া যায় । সেই জন্তই চারাগাছ প্রস্তুতের ক্ষেত্র ও বাগিচার চারি-ধার যতদূর সম্ভব পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। ব্যাধিগ্রস্ত বৃক্ষ হইতে রক্ষা পাইবার জন্ত বনের গাছগুলি খুবই পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। ইহা সত্বেও যদি কোন গাছে ছত্রাক প্রবেশ করে তাহা হইলে ইহা নিবারণের একমাত্র পন্থা হইল—যতটা জায়গা ছত্রাকাক্রান্ত হইয়াছে তাহা হইতে দুই তিন ফুট নীচের কাঠ কাটিয়া সেই ছত্রাক সমুলে বিনাশ করা এবং নীরোগ অংশের উপর ক্রিয়োজোট, জিঙ্ক ক্লোরাইড প্রভৃতি কোন জীবাণুনাশক গ্রব্য প্রয়োগ করা ও তাহাকে শুষ্ক করা । ১৯৩৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পিয়ারসন্স Mitoitfelta (Pearson's Magazine-6, (at 8*.*, *; ২৩৮-২৪e) সাধারণের কৌতুহলোদ্দীপক একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হইয়াছে। সেই প্রবন্ধে প্রিনসেস্ রিস্বরোর ( Prince's Risborough-র) বনবিভাগীয় পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করিয়া ছত্রাক নিবারণ সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিক যে সকল তথ্য সংগ্ৰহ করিয়াছেন তাহা সন্নিবেশিত হইয়াছে । তাহারা ঘরের কাঠের মেঝেতে কৃত্রিম উপায়ে মেরুলিয়াস লাক্রিমানস নামক ছত্রাক রোপণ করিয়া আক্রান্ত কাঠে এই শুষ্ক গলন-জীবাণুনাশক প্রব্যে প্রয়োগ করিয়া তাহাদিগকে সমূলে বিনাশ ক চেষ্টা করিয়া দেখিয়াছেন। এতদুদ্দেশ্যে তাহারা গবেষণাগারে একটি পরীক্ষামূলক গুক্ষগলনগ্রকোষ্ঠ নিৰ্মাণ করিয়াছেন। র্তাহাদের মতে বিনাশকার্ষ্যের প্রধান অস্থবিধা হইতেছে জীবাণুনাশক দ্রব্যকে কাঠের ভিতরকার ছত্রাকের দেহে প্রবেশ করান, কেননা, শুধু কাঠের উপরে জীবাণুনাশক প্রয়োগ করিলে কেবল উপরের ছত্রাকগুলিই ধ্বংস হয়। ঐ সমস্তার এখনও সমাধান হয় নাই, তবে তাহারা এতদ্বিধয়ে বিশেষ যত্বের সহিত পরীক্ষা করিয়া দেখিতেছেন। উক্ত পরীক্ষাগারের ডিরেক্টার মিঃ পিয়ারসন যথার্থ অভিমতই প্রকাশ করিয়াছেন যে “ইহা বহু সময়সাপেক্ষ।---আমরা কাঠের জীবন-ইতিহাস সম্বন্ধে যতই জ্ঞান লাভ করিতেছি ততই অনুভব করিতেছি যে আরও কতই না জানিবার আছে ।” তাহারা শত্রুদিগকে দমন করিবার জন্ত গাছে আসেনিক প্রয়োগ করিতেছেন। ( ৪ নং চিত্র )