পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আসামী এক জন মুসলমান এবং নির্বাতিতা নারী হিন্দু কাজেই মুসলমানমাত্রেই সৰ্ব্বতোভাবে আসামীকে সাহায্য করতে হবে, সে গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত হলেও তাকে রক্ষা করতেই হবে, কোন মুসলমানই যেন এরূপ চিন্তা মনে পোষণ না করেন। ধৰ্ম্ম নিয়ে, চাকুরী নিয়ে, সরকারের দান নিয়ে, সদস্য-সংখ্যা নিয়ে, যে-সব সাম্প্রদায়িকতা এতদিন চলে আসছে তাতেই এ-দেশের উত্তাপ তাপমান-যন্ত্রের সৰ্ব্বোচ্চ ডিগ্রিতে ইতিমধ্যেই উঠে গেছে, এর পর চোর ডাকাত বদমায়েসদের নিয়ে সাম্প্রদায়িক লীলা আরম্ভ করলে দেশের অবস্থা এমন হয়ে দাড়াবে যে বোধ হয় সারারাত লাঠি হাতে করে ঘরের সম্মুখে পাহারা দিয়েই জীবন কাটাতে হবে। নির্বাতিতা স্ত্রীলোক হিন্দু হ’লে এবং অত্যাচারীরা মুসলমান হ’লে এবং এর বিপরীত ক্ষেত্রে, হিন্দু ও মুসলীন উভয় সমাজ থেকে অপরাধীকে কোন প্রকার অমুকম্প সহানুভূতি বা সাহায্য করতে কেহই যেন অগ্রসর ন হন। গ্রামের নেতা ও মাতব্বরগণ থেকে আরম্ভ করে পুলিস ও উকিল-মোক্তার পর্যন্ত কেহই যেন নারী-নির্ধতনকে সাম্প্রদায়িক ব্যাপার মনে না করে যথার্থ অপরাধীর শাস্তিপ্রদানে তৎপর হন। মুসলমান সম্প্রদায়ের মৌলবীমওলানা থেকে আরম্ভ করে বঙ্গদেশের প্রত্যেক মসজিদের এমামগণ পৰ্য্যস্ত ধৰ্ম্মোপদেশের ভিতর দিয়ে অশিক্ষিত মুসলমানদিগকে উক্ত অপরাধের গুরুত্ব কি ও পরিণতি কত দূর তা যেন স্বাররূপে বুঝিয়ে দেন। অপরাধীদের মধ্যে সংখ্যা হিসাবে মুসলমানই বেশী, সুতরাং তাহাদেরই শাস্তি বেশী হইবে বলিয়া কোন ধৰ্ম্মপ্রাণ মুসলমানই যেন দুঃখিত না হন। দুষ্ট স্ফোটকের অস্ত্রোপচারের সময় সামাজিক আজ থেকে ষে রুধিরপাত হবে এ ত স্বাভাবিক, কিন্তু তাই বলে ত আর বিষাক্ত স্ফোটককে পোষণ করা যায় না। সাম্প্রদায়িকতার বশবর্তী হয়ে না-হয় ইংরেজের আদালত থেকেই আসামীকে ছাড়িয়ে আনলাম, কিন্তু এইরূপ অপরাধীর জন্ত কোরান-শরিফে যে-সব ব্যবস্থার কথা লেখা আছে তার থেকে পরিত্রাণের উপায় কি ? কুলবধূদের ইজৎ যখন বিপদাপন্ন তখন আইন একটু কঠিন হ'লে ক্ষতি कि (৩) ম্যালেরিয়ী-বিনাশক সমিতি এবং রক্ষীর দলের মত প্রতি গ্রামে উৎসাহী ভক্স যুবকবৃন্দ কর্তৃক এক-একটি সমিতি গঠিত হোক-বাদের কাজ হবে প্রতি রাত্রে পালাক্রমে দলবদ্ধভাবে গ্রামস্থ চৌকিদার ও দফাদার সমভিব্যাহারে গ্রামের বিশেষ বিশেষ স্থানে পাহারা দেওয়া, সন্ধি ব্যক্তির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখা এবং অবস্থা-বিশেষে উপরিস্থ পুলিস কর্মচারী বা জেল-ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট সাময়িক রিপোর্ট দিয়ে তাদের সমস্ত বিষয়ে ওয়াকিবহাল রাখা। উক্ত সমিতি যেখানে যেখানে রক্ষীর দল আছে তাদের এবং প্রয়োজন-মত নবগঠিত মহিলা-সমিতির সাহায্য লাভ করতে পারবে। গবক্ষ্মেন্টের কাছ থেকে উক্ত কার্ধ্যে সৰ্ব্বপ্রকার সাহায্য লাভের জন্ত ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের ইউনিয়ন বোর্ডগুলিও যাতে সঙ্গে সঙ্গে দুৰ্ব্বতদমনে সৰ্ব্বতোভাবে সচেষ্ট থাকে তারও ব্যবস্থা করবার জন্ত সরকারকে অনুরোধ করা দরকার। (৪) পর্দা বিষয়ে যথাসম্ভব সাবধান হওয়া। উপযুক্ত পর্দা প্রচলিত রাখলে নারী-শিক্ষা ও নারী-জাগরণ অসম্ভব হবে একথা ধারা মনে করেন তারা ভ্রান্ত । ভারতবর্ষের ইতিহাসে এমন বহু দৃষ্টান্ত আছে যেখানে আমরা দেখতে পাব ষে উপযুক্ত পর্দার ভিতর আব্রু রক্ষা করেও সেকালে স্ত্রীলোকেরা সাহিত্য ধৰ্ম্ম ও রাজনীতি আলোচনায় সম্পূর্ণভাবে আত্মনিয়োগ করতে পারতেন এবং অনেকে রাজ্যশাসনেও অভ্যন্ত ছিলেন। সেরূপ ব্যাপক ভাবে পর্দার ব্যবস্থা না হয় নাই হ’ল তৰু স্বান-বিশেষে এবং প্রয়োজনমত পর্দারক্ষার ব্যবস্থা না করলে এ-দেশে নিরাপদ আবহাওয়ার স্বটি করা বোধ করি কঠিন হয়ে দাড়াবে। শহরের শিক্ষিতা মহিলাগণের কথা পৃথক। কারণ সেখানে ঐ সমস্ত অপরাধের স্থযোগ ও সুবিধা অল্প এবং সে-সমস্ত মহিলা এত দূর অগ্রসর যে, জরকার হ’লে আত্মরক্ষার যে-কোন ব্যবস্থা তারা ষেরূপেই হোক করতে পারেন। সেইরূপ কোন কোন বদ্ধিষ্ণু গ্রামের কথাও পৃথক। ধারা গ্রামে বাস করেন তাদের ভিতর পর্দা সম্বন্ধে আর একটু হুঁশিয়ার হলে বোধ হয় অনেকটা ভাল হয়। লজ্জাশীলা গ্রাম্য নারী জাজরক্ষার কোন উপায়েই অভ্যন্ত নন, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতেও এত দূর অগ্রসর নন ৰে সহসা আত্মরক্ষার কোন ব্যবস্থhকরতে পারেন।