পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মেজাজ ঠিক রাখতে পারলাম না, তবলা-পেটা হাতুড়িটা তুলেই দিলাম তার মাথায় এক ঘা বসিয়ে------ আর কিছু না বলিয়াই মন্ত গুণী শ্ৰীমন্ত পৈলান নিতান্ত ছেলে মানুষের মত হাউ হাউ করিয়া কাদিয়া উঠিল । ক্ৰমস্ত পৈলানের মত এত বড় গুণীকে এমন অসহায়ের মত কাদিয়া উঠিতে দেখিয়া আমারও চোখে জল আসিয়া গিয়াছিল। কিছুক্ষণ উভয়ে আর কোন কথাই বলিতে পারিলাম না। তার পরে শ্ৰীমন্ত পৈলান কাপড়ের খুঁট দিয়া চোখের জল মুছিয়া লইয়া বলিল, সেই নিয়ে পড়লাম খুনের মামলায়। একে ত নিজের দুঃখেই নিজে ম'রে আছি, তাতে আবার ঐ বিশ্ৰী মামলা, হাতে নেই একটা পয়সী। ভগবানের মার, তাই চুপ করেই রইলাম। ভাবলাম, যা বরাতে লেখা আছে তাই হোক, মামলা থেকে বঁাচার আর কোন চেষ্টাই করব না। অবশু, সামর্থ্যও আমার ছিল না। কিন্তু গুণীর আদর জানেন আমাদের স্বাধিজলের শঙ্কু মুখুজ্যে মশায়। তিনি কত দিনই আমার এই ভাঙা কুঁড়েয় বসে আমার বায়া-তবলা গুনে গেছেন। তিনি খবর পেয়েই র্তার নায়েবকে দিলেন আদালতে পাঠিয়ে। আর বলে দিলেন, যত টাকা লাগে এ মামলা থেকে শ্ৰীমন্ত পৈলানকে বঁাচাতেই হবে। র্তারই দয়ায় কলঙ্কের হাত থেকে বাচলাম কোন রকমে। সেই থেকে জমিদার শঙ্কু মুখুজ্যের আমি কেনা গুণী । নইলে, কারও কি সাধ্য আছে যে শ্ৰীমন্ত পৈলানকে নিয়ে যাবে তার বাড়ী, এক তা পারেন আঁখিজলের শঙ্কু মুখুজ্যে মশায়, গুণীর যিনি সত্যিকারের আদর জানেন। ব্যস্, সেই অঘটন ঘটার পর থেকেই শেখান আমার শেষ হয়ে গেছে। ভগবানের অভিশাপে তাই বনচাতকীর শ্ৰীমন্ত পৈলানকে মরতে হবে নি-শিন্ত অবস্থায় । তার কাছ থেকে যা পেলাম, কাউকে তা দিয়ে যেতে পারলাম ন। এর চেয়ে আর অভিশাপ মাহুযের জীবনে কি থাকতে পারে ? সমস্ত শুনিয়া কেমন যেন হইয়া গেলাম। শ্ৰীমন্ত পৈলানের মত এক জন গুণী এমন নৃশংস হত্যার অপরাধে একদিন আদালতে অভিযুক্ত হইয়াছিল, সে তাহার নিজ পুত্রকে সামান্ত একটু ভুলের জন্ত হত্যা করিয়াছে। আশ্চৰ্য্য ত ! বিদায় লইতে বাধ্য হইলাম। বন-চাতকীর শ্ৰীমন্ত পৈলানের শিয্যত্ব গ্রহণ করা আমার দ্বারা আর সম্ভব হইল না। লোকটা অসাধারণ গুণী হইতে পারে, কিন্তু নিদারুণ অভিশপ্ত ! মদির মুহূৰ্ত্ত জীবীরেন্দ্রকুমার গুপ্ত বহুযুগ আকাঙ্ক্ষিত আজিকার মুহূৰ্ত্ত মদির তোমারে নিরখি সখি জীবনের দ্রাক্ষাকুগ্ৰছায়, তরঙ্গিম ফেনপাত্র উচ্ছ্বলিছে ওষ্ঠের কানায় ; মনোহর রাত্রি-বৃন্তে ইন্দুরশ্মি বর্ষণ-অধীর, ঝলমল স্বপ্নপুই জাল বুনি পান্না ও মোতির মোদের চম্পক-হাতে, মদালসা চীনাংশুক হায়, শ্ৰেণীবদ্ধ ঘূর্ণ্যমান বাহুড়ের উল্লাস পাখায় ; আমি লুপ্ত পুষ্করব, তুমি যেন উৰ্ব্বণী মাটির। ভূজবদ্ধ তুমি মোর, উৰ্বে শোভে পূশিম-শর্করী, ম্পন্দমান তমুতন্ত্রী, লীলায়িত বাহভঙ্গী কিবা— হেরিকু নিৰ্ভয়ে আমি, ভাঙে তব চন্দ্ৰমল্পী-সিখি ; সঙ্কোচজড়িত লজা রেখে জানো ফুলপদ্ম গ্ৰীবা-— প্রথম-প্রণয়-ভীক স্থিতবৃষ্টি সজ-সহচরী ; জামরা ব্যগ্রতা লয়ে অতন্ত্রর নেপথ্য-অতিথি।