পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

جده سما

  • -- - - - - - ستگ

}তা খুব পারব। সে তোমায় ভাবতে ক্ষ্মেণী :*আচ্ছা ভোলাদা—এলাহাবাদে যেথায়? ছিলে লৈ জায়গাটার নাম জানো ?” v “তাত মনে নেই, দিদিমণি। ষোমূনোর ধারে “রাণী কুঠি” বললেই নে যাবে খন। সামনেই যোম্নোর ওপর একটা ভাঙা ইটের বাধানে মত আছে । ত্রিবেণী থেকে বেশী দূর নয়।” “আচ্ছা যাও, নৌকা ঠিক করগে। দুপুরে খেয়ে দেয়ে বেরব I* কয়েক দিনের জন্তে সমস্ত বন্দোবস্ত ক’রে সীমাকে নিয়ে সে বেরিয়ে পড়ল । পরদিন সীমাও পাৰ্ব্বতী যখন শচীন্দ্রের গ্রামে গিয়ে পৌছল তখন রাত ন-টা। ম্যানেজার অত্যন্ত সমাদরে পাৰ্ব্বতী ও তার সঙ্গিনীকে নিজের বাড়ীতে নিয়ে গেলেন। তার পর সমস্ত দিন ঘুরে ঘুরে শচীন্দ্রের প্রকাও অট্টালিকা, তার বিপুল ঐশ্বর্ধ্যের বিচিত্র রূপ দেখাতে এবং গল্প করতে লাগলেন। পাৰ্ব্বতীর থেকে থেকে একটা অস্পষ্ট বেদন জেগে উঠছে। শচীন্দ্র তার এই স্থখসমৃদ্ধির সহজ আরাম পরিত্যাগ করে তারই জন্ত আজ গৃহত্যাগী। তাকে তার স্বাচ্ছন্দ্যের মধ্যে এনে আবার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এ ত তারই কাজ। এই সব চিন্তায় অন্যমনস্ক রয়েছে সে ; সীমাও নিৰ্ব্বাক বিস্ময়ে শচীন্দ্রের এই ঐশ্বর্ষ্যের পরিমাণ অনুমান করবার চেষ্টা করছে। ধীরে ধীরে তার মনে এই বিত্তশালী পুরুষটিকে আয়ত্ত করবার বাসনা জেগে উঠছে । শচীন্দ্রকে যদি কোন মতে তার পথের পথিক করা যায়। ভাবে, মন যার পরের জন্ত কঁাদে দেশের ক্রনন তার কানে নিশ্চয় পৌছবে, নিশ্চয়, নিশ্চয়। আবার মনে হয়, যদি সে অন্য দশ জনের মত বিলাসী জমিদার হয়, যদি ভীরু হয়। যদি ইংরেজের প্রসাদজীবী হয়, মন তার জলে ওঠে, রজলালের কথা মনে হয়। ভাবে, তবে রঙ্গদার বড় শিকার জুটবে—উঃ কি খুসিই হবে সে। ভাবতে ভাবতে ঠিক করে সে কলকাতায় গিয়ে সব বন্দোবস্ত করে তবে যাবে। শচীন্দ্র সত্যই প্রয়াগে একাকী যাপন করবার জন্ত গিয়েছিল, এবং যদিও ম্যানেজারের প্রতি হুকুম ছিল যে প্রৰণসী SNඑෆ්‍රථ কোন বিষয়কৰ্ম্ম নিয়ে তাকে বিরক্ত করা না হয়, তবু পৰ্ব্বতীকে তার ঠিকানা না জানাতে ম্যানেজার সাহস করে নি। কমলাপুরী ও পাৰ্ব্বতী সম্বন্ধে শচীন্দ্রনাথের মনোভাব মানেজারের তীক্ষ দৃষ্টির সম্পূর্ণ অগোচর ছিল না। ঠিকানা সংগ্ৰহ ক’রে পরদিন সীমা ও পাৰ্ব্বতী কলকাতায় রওনা হয়ে গেল। কলকাতায় শচীন্দ্রের বাসার ঠিকানা পাৰ্ব্বতীর জান ছিল। দু-জনে প্রথমে সেখানেই গিয়ে উঠল। সীমা বললে, “দেখুন, আজ রাত্রের ট্রেনেই আমরা রওনা হব। আমি এখন একটু কাজে বেরব । সময়মত আপনি ষ্টেশনে ষাবেন, সেখানেই আপনার সঙ্গে দেখা হবে।” পাৰ্ব্বতী একটা নমস্কার করে সীমাকে বিদায় দিলে। তার চিত্ত তথন নানা চিন্তায় আকুল। শচীন্দ্রের এই বাড়ীতে সে অনুপস্থিত শচীক্সের সত্তাকে তার সমস্ত অন্তর দিয়ে একবার অনুভব ক’রে নিতে চায়। সেখানে তৃতীয় ব্যক্তির অস্তিত্ব তার কাছে আনন্দদায়ক নয়। সমস্ত দিন সে নিজেকে বিশ্রাম দিল না। শচীন্দ্রের বিস্রস্ত সংসার সে নিজের নৈপুণ্য দিয়ে স্বন্দর মনোরম ক’রে তুলতে চায়, যেখানে এলে শচীন্দ্রের এতদিনকার লক্ষ্মীছাড়া শ্রীহীন জীবনযাত্রাকে সে তৃপ্তিদান করতে পারবে। বৈকালের দিকে কাজকৰ্ম্ম সমাধা ক’রে সে শচীন্দ্রের শোবার ঘরের নূতন সরঞ্জামগুলি তদারক করতে গেল। শচীন্দ্রের শয্যার পাশে তার দোল-চেয়ারটিতে শুয়ে সে শ্রাস্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছিল। একটা দুঃস্বপ্নের আঘাতে ঘুম ভেঙে সে উঠে বসল। স্বপ্নে দেখল, কমলা ফিরে এসেছে। কমলাপুরীর ঘাটের কাছে লঞ্চ প্রস্বত, এখনই তাকে চলে যেতে হবে—তার মালপত্র সব তোলা হয়ে গেছে—অথচ কিছুতে শচীন্দ্রের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। যে লজ্জাহীন, কমলার অনুপস্থিতিতে তার স্বামীকে গ্রাস করতে চেষ্ট৷ করছে, তার কাছে শচীন্দ্রকে কমলা বিদায় নেবার ছলেও যেতে দেবে না। ঘুম ভেঙে পাৰ্ব্বতীর মনটা বিকল হয়ে গেল। যদিও স্বপ্ন, তবু এ-কথা সে না ভেবে থাকতে পারল না যে শচীন্দ্র কমলারই প্রতি এখনও অসুরক্ত। তবে কেন সে তার প্রতি শচীন্দ্রের দুৰ্ব্বলতার স্বযোগে তাকে গ্রহণ করতে প্রলুদ্ধ করবে। এলাহাবাদে সে যাবে না এটা স্থির করে চাকরকে দিয়ে সে সীমার কাছে ষ্টেশনে চিঠি পাঠিয়ে লিখল,