পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՇԵ= তোর এত মাথা ব্যথা ? তা ছাড়া জ্যোৎস্নাই না হয়, নিৰ্ব্বোধ। ওর মংলব কিছু বোঝে না ; তাই বলে তাকে বঁাচান ত তারই কাজ।” তার অন্তরের বাসনা তার কৰ্ত্তব্য বোধের মহৎ প্লেরণ পেয়ে একেবারে উদ্ধাম ক'রে তুললে তার চিত্ত ও চেষ্টাকে । সে যখন অভিভাবক তখন সে পুলিসের সাহায্যে জ্যোৎস্নাকে উদ্ধার করবে না কেন । এই ভেবে সে একদিন উদভ্ৰান্তচিত্তে পুলিস-ষ্টেশনে গিয়ে উপস্থিত হ’ল । কিন্তু সেখানে উপস্থিত হয়েই তার উৎসাহ এল জুড়িয়ে। যদি জ্যোংস্কা তার বিরুদ্ধে দাড়ায়, যদি তার বিরুদ্ধে অত্যাচার করার পাণ্টা নালিশ করে ? পুলিসকে সে চিরদিনই ভয় ক’রে এসেছে। পুলিসের কাছে নালিশ জানালে ভোগাস্তি তারও যে কিছু কম হবে না একথা সে যতই চিন্তা করতে লাগল উৎসাহ তার ততই কমে এলো । তা ছাড়া, ব্যাপারটাকে এত প্রকাশু ক’রে ফেলা তার ‘সৎসাহসে কুলচ্ছিল না । মালতী তার এই প্রচেষ্টার পশ্চাতে তার গোপন অভিসারের কাঙ্গিনী জানতে পারলে আর এক পারিবারিক হাঙ্গামে তাকে পড়তে হবে, এবং তার অধুনা নিরাময়কৃত গৃহব্যবস্থার মধ্যে আবার একটা বিপ্লব উপস্থিত হবে । কোন দিকেই সে আর যেন কোন উপায় খুজে পেল না । চিস্তা করতে করতে তার মনে আর স্বস্তি রইল না । পুলিসের কোন হাঙ্গামে নেমে পড়তে তার ভীরু মন পেছিয়ে এল । কোনও দিকে কোন উপায় না করতে পেরে তার চিরাভ্যস্ত গৃহণমুগত ভদ্র অন্তঃকরণ আবার তাকে গৃহাভিমুখে ফিরিয়ে আনবার স্বযোগ পেল । সে ভাবতে লাগল, “কেন আমি আমার শাস্ত গৃহীড়টুকুর মধ্যে মালতীর অকৃত্রিম স্নেহ সেব যত্নে নিজেকে আবদ্ধ রাখতে পারব না ! আমি ভদ্রসস্তান, কেন আমি বারংবার অভদ্র লোভে বিশ্বাসঘাতকের নীচতার মধ্যে নামতে চাচ্ছি ! ছি ছি! এতটুকু লংযমে আমি নিজেকে যদি না বাধতে পারি তবে মনুষ্যসমাজে আমার স্থান হওয়া উচিত নয়।” নিজেকে ভদ্রসস্তান ব'লে চিন্তা করতে করতে সে ভদ্রজন্যেচিত মনোবৃত্তিকে নিজের মনের মধ্যে জাগিয়ে তুলতে চেষ্টা করতে লাগল। ভাবলে, “ফিরে গিয়ে নিজেকে মালতীর নিশিত মেহাপ্রয়ে সমর্পণ করি । জ্যোৎস্নার জন্য আমার ত্রিবেণী ^4, f5+ು ತ] (H ಇಇ ಆಡ್ ಇಡ್ಲ ಘ | ? মঙ্গলের ੋ সে-প্রেমকে নিয়োজিত করতে পাবি ।” ভাবতে ভাবতে সে বাঙালীর ভাবপ্রবণ চিত্তের আkেগে নিজেকে যেন মার্টারের পত্তিতে নিয়ে বসালে এবং নিজের প্রতি করুণাপূর্ণ শ্রদ্ধা তার মনে জেগে উঠল । সে শ্রাস্তচিত্তে বাড়ী গেল এবং তার অনুতপ্ত মনের অবসাদ নিয়ে মালতীর কাছে অধিকতর স্নেহ করুণ এবং আদরের প্রার্থী হয়ে তার কাছে ফিরে গেল । রাত্রে মালতী উদ্বিগ্ন হ’য়ে স্থধোলে “কি গে, আমন করছ কেন ?" নন্দলাল তার জবাব ন দিয়ে মালতীকে ঘনিষ্ঠতর আলিঙ্গনে আবদ্ধ ক’রে ভার বুকে মাথা গুজে নীরবে অশ্রীবর্ষণ করতে লাগল । রঙ্গলালের চেলাদের মনে যেটুকু সন্দেহ বা ছিল তার আর লেশমাত্র অবশিষ্ট রইল না। সীমার অনুপস্থিতি রঙ্গলালের দুৰ্দ্দম জিঘাংসাকে একেবারে ক্ষেপিয়ে তুললে । সীমাকে নিঝঞ্চাটে লঙ্ঘন করবার এত বড় স্থযোগ সে ছাড়লে না। নিতান্ত অকারণে নিঃসহায় স্বভাব-ভীরু নিধিবরোধী নন্দলালকে পরদিন তার নিজের বাড়ীর সামনে নৃশংসভাবে তারা হত্য করলে । মালতীর ক্ৰন্দনে পুলিসের চোখও সেদিন শুষ্ক রইল না। ব্যাপারটা সহজে সীমার গোচর না হয় রঙ্গলাল যথাসাধ্য তার ব্যবস্থা করেছিল । নিখিলনাথ সংবাদ পেয়ে নন্দলালের বাড়ী উপস্থিত হ’ল ; এবং যথাকন্তব্য ব্যবস্থাদি করতে লাগল। প্রথমেই সে জ্যোৎস্বাকে মালতীর কাছে এনে রাখলে । যে-বাড়ীতে প্রাণাস্তেও কমল প্ৰবেশ করবে না ব’লে নিজেকে প্রস্তুত করেছিল, আজি তারই আশ্রয়দাত্রীর এক অভাবনীয় সৰ্ব্বনাশের স্বত্রে সেখানে প্রবেশ ক’রে নিজেকে সে “দুরদুষ্ট সৰ্ব্বনাশী” ব’লে মনে মনে নির্যাতন করতে লাগল । নন্দলালের গতিবিধির কথা নিখিল পূৰ্ব্বে তারই কাছে শুনেছিল ; সুতরাং এটা যে সীমার দলেরই কাজ এবথা লিখিলের বুঝতে দেরী হয় নি। নিখিল দুঃখ ক'রে কমলাকে বলেছিল, “হায় রে এত ভাল মাহুষ এই নন্দবাবু ; তার একটা দুৰ্ম্মতির এ কি অকারণ কঠিন পরিণাম হ’ল !” প্রশ্ন ক’রে লিখিলের কাছ থেকে কমলা ব্যাপারটা বুঝে অকুতাপের তার আর সীমা রইল না । সেই ন সীমাকে নন্দলালের গতিবিধির কথা