পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কার্তিক করিবার সাহস তাহার ছিল না ; তিনি কোনও রকম দরদ দেখাইবার চেষ্টা করিলেন না, চুপ করিয়াই রহিলেন। শাল ফুলের মধুর গন্ধে সমস্ত নয়ানজোড় ভরিয়া উঠিয়াছে, শিরীষ ফুল গাছ ভরিয়া যেন আকাশের দেবতার গায়ে চামর দোলাইতেছে, পলাশের রঙে বন আলে। হইয়। উঠিয়াছে ; এমনই দিনে হৈমবতীর দারুণ অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাহারই হাতে ঘরদ্বার সপিয়া চক্সকান্ত স্ত্রী পুত্র কন্যা লইয়। কলিকাতা যাত্রা করিলেন। সেই লখা মাঝির গড়পাত গরুর গাড়ী, সেই বনের ভিতর রাঙ সিথির মত পথ, পথে আনন্দলহরী লইয়া বৈষ্ণব ভিক্ষুক গান করিতেছে "নিতাই আমার গৌর।” মহামায়ার আঁচলে আজও হৈমবতী সিদুর-কেট বাধিয়া দিলেন, স্বধাদের জন্য দিলেন কদমা ও টানালাড়ু ; কিন্তু এবার ওমরের প্রতি ግግ ত রতনজোড়ে মামার বাড়ী যাওয়া নয়, যন্ত্ররথের আশায় এ দূর ষ্টেশনের পথে যাত্রা। ঘরদ্বার, মরাই, পুকুর, ঘরের আসবাব, রান্নাঘরের শিলনোড়া র্যাত সবই যেন পিছন হইতে ডাক দিতেছে,-শিবু, স্বধা, ফিরে এস। শিবু হাসিয়া স্বধা কাদিয়া তাহদের ফেলিয়া চলিয়৷ গেল। পলাশের রঙে আলো বন্যপথে শিবুর হস্তচটুল কণ্ঠের গান পিছনে রণিত হইতে লাগিল, “জাম ফুল নাই ঘরে, দুটো ভালুক হকুর হুকুর করে।” মহামায় বলিলেন, “আর এদেশ প্রদেশ করব না ; যেখানে যাব সেইপানেই খুটি গেড়ে বসব। কেবল গড় আর ভাঙ, গড় আর ভাঙ, মন এতে সায় দেয় না ।” ( ক্রমশ: ) - ওমরের প্রতি শ্ৰীমুশীলকুমার মজুমদার $ হে কবি তোমার গানে যে ক্রমদন-ম্বর রশিয়া রশিয়া উঠি করিছে বিধুর উতলা মানবহৃদি—কোথা তা’র মূল নাহি জানি মোরা আজি ; বিরহ-ব্যাকুল তোমার মানসপটে ভাসে কার ছবি, পারস্তের কোন দূর দিনাস্তের রবি রঞ্জিত করিল বিশ্ব গোধূলি-আভায়, বিস্মৃতির তমোগর্ভে তারা লুপ্ত, হায়! জানি শুধু দেবরোধে মান, ছিন্নদল পুষ্ঠিত ধরণীবক্ষে সৌন্দৰ্য্য-কমল ; একে একে দল তা’র করিয়া চয়ন, সিক্ত করি অশ্রনীরে, করেছ বয়ন একখানি প্রেমহীর মৰ্ম্মস্থতি ঢালা ; স্বরভি করিছে বিশ্ব কবিগাথা মালা । ३ ইরাণের উপবনে কোন সে তরুণী নিয়েছিল নিপিলের সব ধন লুটি, হাস্তে কা’র পুষ্পশোভা উঠেছিল ফুটি মুখর মন্ত্রীর কা’র ছন্দে তব শুনি ; নিবিড় প্রেমের জাল দিয়েছিল বুনি বিভোল পরাণে তব কা’র জাখি ছুটি,— কাহার বিরহে কবি বক্ষ তব টুটি বন্তাধারা উঠে জাগি—জানি ওগো গুণী । মানসমুন্দরী সে যে, অতনু, ভাবিনী ; অন্তর বাহিরে তার মিলে না সন্ধান, সীমার বন্ধনে কতু দেয় না সে ধর্ম, কন্তু কানে পশে না যে তাহার কিঙ্কিণী আঁখি কতু দেগে নাই সে রূপ-বিতান— তাই বুঝি গান তব মৰ্ম্মলোরে ভরা ।