পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وھابسbسb. বললে, দিদিমা তোমার ছাগলকে ওরা মেরে ফেললে গো । কতক্ষণ আর চুপচাপ থাকা যায়। দরজা খুলতেই হ’ল । একটু থামিয়া ঠানদি পুনশ্চ করুশ কণ্ঠে কহিলেন, মেয়েটাকে যে একটু প্রাণ ভরে আদর করব তাও ভয় হয় । অবাক হইলাম। কথাকটির সত্যতা সম্বন্ধে আমারও দ্বিমত নাই। ঠানদির আদরে যে মেয়েটার পীড়ন আরও বৃদ্ধি পায় এ কথা সত্য, কিন্তু এই সত্য যে ঠানদি এমন করিয়া উপলব্ধি করিয়া তার বাহ্যিক আচার-ব্যবহারের সংস্কার করিয়া লইয়াছেন এ-তথ্য আমার জানা ছিল না । ঠানদির তীক্ষ অস্তদৃষ্টিকে আমি সাধুবাদ দিলাম। কথা বলিতে বলিতে আমরা ঠানদির ঘরের পশ্চাদ্ভাগে আসিয়া উপস্থিত হইলাম। ঠানদি আর দ্বিতীয় কথা না কহিয়া গৃহে প্রবেশ করিলেন। আমি মন্থর গতিতে অগ্রসর হইলাম । এমনি ভাবেই দিন যায়। জীবনের আরও গোটা-কয়েক বছর আগাইয়া গিয়াছে। ঠানদিকে এখন অথৰ্ব্ব বলিলেও ভুল বলা হয় না। তদুপরি ছ-পায়ের আঙুল-কটা কি বিষাক্ত পদার্থ লাগিয়া খসিয়া গিয়াছে। ভাল চলিতে পারেন না। চোখের দৃষ্টিও ঝাপসা হইয়া আসিয়াছে। দিনরাত ঘরেই বসিয়া থাকেন। নিজহাতে রান্না করিয়া থাইতে হয়। সেদিন ভাতের মাড় গড়াইতে গিয়া হাত পোড়াহয় ফেলিয়াছেন। একটি রাধুনী বামুনীর কথা বলিতে গিয়া তাড়া খাইয়া আসিয়াছি। ঠানদি বলেন, টাকার তার গাছ নাই । শুামলী বড় হইয়াছে। যৌবনের আভাস তার দেহে দেখা দিয়াছে। লাজনম্র মেয়েটি,—বড় ভাল লাগে। কিন্তু এ-দিকে আজকাল আর তাকে দেখা যায় না । মেয়ের উপর খুড়োর কড়া নজর । ঠানদিকে রান্না করিয়া দিবার অপরাধে তিনি তার বয়স্থা কন্যাকে শাসন করিতে দ্বিধা করেন নাই । পথে দেখা হইতে শু্যামলী সেদিন পিঠের কাপড়টা সরাইয়া দেখাইয়াছিল। স্নান হাসিয়া বলিয়াছিল, ঠানদিকে দেখবার কেউ নেই বিশুদ, তুমি তাকে দেখো। বোকা মেয়ে জানে না ত তার বিশুদা কত বড় অপদার্থ। নিজের একক জীবনই তার কাছে কতবড় বোঝা । কিন্তু তথাপি নীরব থাকিতে পারি না । মানুষ ত বটে। প্রবাসী Sతి8ుతి চোখের সন্মুখে কত আর দেখা যায়। নিজের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা ঠানদির সহিতই করিলাম। ঠানদি খুশী হইয়াছেন বুঝি, কিন্তু মুখে তিনি বিষ ছড়াইতে ছাড়েন না। আমার আমোদ লাগে, হাসিয়া বলি, পয়সাকড়ি নিঃশেষ হয়েছে ঠানদি কিন্তু পেট ত আর তা শুনবে না । তা ব’লে বেইমান নই আমি—খেটে দেনা শোধ দিচ্ছি। ঠানদি ঝঙ্কার দিয়া উঠিলেন, শোন কথা—আজকেই নীহয় অচল হয়ে পড়েছি, নইলে এই হিমিও একদিন এক-শ জনার রান্না রোধেছে । ঠানদি থামিলেন। কিছু সময় নীরব থাকিয়া পুনরায় কহিলেন, হ্যারে বিশু, সত্যিই কি অভাবে পড়েছিস ? না আমার জন্তে তোকেও হবিষ্যি করতে হচ্ছে ? এ প্রশ্নের কি উত্তর দিব ! একটু হাসিয়া পাণ্টা প্রশ্ন করিয়া বসিলাম, তোমার কি মনে হয় ঠানদি ? ঠানদি হয়ত তার প্রশ্নের উত্তর নিজের কাছেই পাইয়াছেন । তিনি নীরব রহিলেন । ইহারই দিনকয়েক পরে ভোর হইতে-না-হইতে ঠানদির ডাকাডাকিতে বিছানা ছাড়িয়া উঠিয়া পড়িতে হইল । ব্যাপার কি ! ঠানদির সম্মুখে গিয়া দাড়াইতেই তিনি কথা কহিয়া উঠিলেন, এ-কথা আমায় এত দিন বলিস নি কেন বিস্ত ? প্রশ্ন যে আমাকেই করা হইয়াছে তাহা বুঝিলাম, কিন্তু ঠানদি কি যে বলিতে চান তাহা ঠাহর করিতে পারিলাম না । আমার নীরবতাকে লক্ষ্য করিয়া তিনি পুনশ্চ কহিলেন, তাই ত ভাবি মেয়েটা আর এদিকে আসে না কেন। ঠানদির কণ্ঠস্বর কোমল হইয়া আসিল, দেহে কি মানুষের চামড়া আছে। নইলে নিজের মেয়ের উপর এমন অত্যাচার করতে পারে । পিঠের কোথাও জায়গা নেই বিশু । মেয়েটার কি কাল্প । আমি কথা কহিলাম না । ঠানদির কণ্ঠস্বর ভাঙিয়া পড়িল, মেয়েটাকে ওর মেরে ফেলবে। কহিলাম, তাদের মেয়ে তারা মেরে ফেললেই বা আমরা কি করতে পারি । ঠানদি জলিয়া উঠিলেন, কেন পারি নে—এক-শ বার