পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সিকিউরিটিতে রাখা সমীচীন নহে। এতদ্ব্যতীত সরকারী সিকিউরিটির আয় আজকাল মাত্র শতকরা ২০ টাকা । বীমার ব্যাপারে বীমাকারীদিগকে যে ভাবে টাকা দেওয়া হয় তাহাতে শতকরা ৪৫ টাকা আয় হওয়া প্রয়োজন। সুতরাং কোন তহবিলের এক-তৃতীয়াংশ যদি অল্প হারে গচ্ছিত থাকে তাহা হইলে বাকী দুই-তৃতীয়াংশ খুব অধিক হারে থাটাইতে হইবে, নতুবা তহবিলের মোট আয় কমিয়া ব্যবসায়ের ক্ষতি হইবে । এক-তৃতীয়াংশ সবিশেষ নিরাপদ রাথিয়া দুই-তৃতীয়াংশ উচ্চ লাভের আশায় লগ্নী করিলে বিপদের আশঙ্কা । বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলির কার্য্যবিধি পৰ্য্যালোচনা করিলে দেখা যায় যে ভিন্ন ভিন্ন দেশে বীমাপ্রতিষ্ঠানগুলির সরকারী সিকিউরিটির উপর আসক্তি খুব বেশী নাই। যথা, আমেরিকার বীমা-ব্যবসায়ীগণ শতকরা মাত্র ৮৯ টাকা সরকারী সিকিউরিটিতে লাগাইয়া থাকেন । ইংরেজও এক-তৃতীয়াংশের অনেক কম এই জাতীয় সিকিউরিটিতে ন্যস্ত করেন। বীম-ব্যবসায়ীরা মোটামুটি নিৰ্ব্বোধ নহেন। র্তাহারা নিজেদের ব্যবসা ভালই বুঝেন ! স্বতরাং আইন করিয়া তাহাদের হাত-পা বাধিবার প্রয়োজন এক্ষেত্রে নাই । ইহা ব্যতীত একথাও বলা যায় যে যদি কোন দিন ভারতীয় বীমা-প্রতিষ্ঠানগুলির মোট তহবিল এতটা বাড়িয়া যায় যাহাতে সেই তহবিলের এক-তৃতীয়াংশ প্রমাণ গবন্মেণট সিকিউরিটি বাজারে পাওয়াই যাইবে না, তাহা হইলে কি বীমা ব্যবসার খাতিরে সরকার বাহাদুর পুনৰ্ব্বার অধিক করিয়া ঋণ গ্রহণ করিবেন ? এই আইন হইলে ইহার ফলে বীম ব্যবসার কোন লাভ হইবে ন, শুধু সরকারী সিকিউরিটির বাজার তেজী হইবে মাত্র। এই কারণে শুধু সেই পরিমাণ সরকারী সিকিউরিটিই বীমার আপিসে রাখা প্রয়োজন—ঘাহা না রাখিলে অকস্মাৎ অধিক নগদ টাকার দরকার হইলে কার্য্যের ক্ষতি হয় । এই প্রকার নগদের প্রয়োজনের একটা সীমা আছে এবং বহু শত বৎসরের অভিজ্ঞতার ফলে বলা যায় যে বীমার কার্ষ্যে হঠাৎ নগদের প্রয়োজন উচ্চতম শতকরা ১০/১২ টাকার অধিক হইতে পারে না ; স্বতরাং শতকরা ১৫২ টাকা যদি গবন্মেণ্ট সিকিউরিটিতে রাখা যায় তাহা হইলে বীমাব্যবসায়ী সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত হইতে পারেন। বাকী টাকা নিরাপদ, অথচ মূল্যহ্রাস-আশক্ষাবর্জিত উচ্চ আমদানীদায়ক লগ্নীতে রাখা উচিত । বীমার এঞ্জেণ্টদিগের কমিশন ও লাইসেন্স সম্পর্কে এই নুতন আইনে বিধান রহিয়াছে । বীমার এজেন্টগণ কতটা কমিশন অর্জন করিবে বহু বৎসরের ব্যবসার গতির ফলে তাহার একটা রীতি দাড়াইয়া গিয়াছে । এই ক্ষেত্রে সরকারী দণ্ডবিধি কোন প্রয়োজন ছিল না । কারণ এজেণ্ট । নামটি বাদ দিলেই এই দণ্ডবিধিরও আর কোন জোর থাকিবে না। বীমার কার্য্যে সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক পরিশ্রম এজেন্টরাই করিয়া থাকেন। জনসাধারণের মধ্যে বীমার প্রচলনও এজেণ্টদের চেষ্টাতেই হঠয়াছে ও হইতেছে । ম্যানেজার, অংশীদার প্রভূতির লাভের উপর কোনরূপ হস্তক্ষেপ না করিয়া শুধু এজেণ্টদের রোজগার আইনের কবলে আনিয়া অন্যায়ের প্রশ্রয় দেওয়া হইবে । এই আইনের জোরে নিষ্কৰ্ম্ম লোকের আরও অধিক. করিয়া প্রকৃত শ্রমিকের ন্যায্য পাওমা আত্মসাৎ করিতে সমর্থ হইবে । বীমার এজেণ্টদিগের মধ্যে অধিকাংশ লোকই শিক্ষিত এবং নিজেদের আর্থিক অবস্থা বিষয়ে বিক্ষুব্ধচিত্ত ও অভিমানী । আজকাল যেরূপ দ্রুতগতি রুশিয়ার প্রলাপের প্রচার এদেশে হইতেছে, তাহাতে হঠাৎ একটা শিক্ষিত কৰ্ম্মীসঙ্ঘের মধ্যে এইরূপ একটা আইন জারি করিলে, তাহার বিশেষ কুফল ফলিতে পারে । কুফল আরও গভীর হইবে, কারণ আইনের মধ্যে ভেদাভেদ লক্ষিত হয়। তৎপরে এজেণ্টদিগের লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হইতেছে । লাইসেন্স জিনিষটির নিজের কোন দোষ আছে বলিয়া মনে করি না ; কিন্তু লাইসেন্স-দাতাদের দোষে অনেক সময় জিলিযটা উৎপীড়নের কারণ হইয়া দাড়ায় । ধর ধাউক যে সকলকে থানায় গিয়া ফৰ্ম্ম লিখিয়া সনাক্ত হইয় লাইসেন্স লইতে হুইবে । ব্যাপারটা যে কিরূপ কষ্টকর হইবে । তাহা সহজেই কল্পনা করা যায়। লাইসেন্স যদি লইতেই হয় তাহা হইলে তাহা সকল বীমা-প্রতিষ্ঠান মিলিয়া কোন একটা ব্যবস্থা করিয়া দিবার বন্দোবস্ত করিলে উত্তম হয় । কারণ . ব্যবসার ক্ষেত্রে বীমার এজেন্টগণ এমন কোন অপরাধ করেন নাই যাহার জন্ত তাহাদের আইনের কবলে পড়িতে হইবে । ব্যবসাগত লাইসেন্স ও সরকারী লাইসেন্সে অনেক প্রভেদ।