পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSది প্রবাসী NegN9 হইলেও ইহার অধিবেশন সার্থক মনে করা যাইতে পারিত। পড়িবার পূৰ্ব্বে রবীন্দ্রনাথ মুদ্রিত পুস্তিকাটি অল্প কিছু সংশোধন করেন । এই সংশোধন অনুসারে তাহার অভিভাষণটি মডার্ণ রিভিয়ুর এপ্রিল সংখ্যায় ছাপা হইবে। সম্মেলনে সারবান আরও কয়েকটি বক্তৃত হইয়াছিল এবং প্রবন্ধ পঠিত হইয়াছিল। তাহার কিছু কিছু দৈনিক কাগজে মুদ্রিত হইয়াছে। সৰ্ব্বধৰ্ম্মসম্মেলনে মহাত্মা গান্ধীর প্রশ্ন মহাত্মা গান্ধী সৰ্ব্বধৰ্ম্মসম্মেলনকে যে বাণী প্রেরণ করেন, তাহার সঙ্গে এই প্রশ্নটি ছিল বলিয়া খবরের কাগজে প্রকাশিত হইয়াছে — “Are all the religions equal, as we hold, or is there any one plurtieular religion which is in the sole possession of truth, the rest being either untrue or a mixture of truth and errors, its many believe 2" তাৎপৰ্য্য । সকল ধৰ্ম্মই কি সমান, যেরূপ আমরা মনে করি, অথবা বিশেষ এমন কোন একটি ধৰ্ম্ম আছে সত্যে যাহার একচেটিয়া অধিকার আছে, এবং অল্প ধৰ্ম্মগুলি হয় অসত্য কিম্বা সত্য ও আসত্যের মিশ্রণ—যেমন অনেকে বিশ্বাস করেন " এই প্রশ্নের আলোচনা করিতে গিয়া সবু ফ্রান্সিস ইয়ং হাজব্যাও বলেন : “ধেমন প্রত্যেক শিশু মনে করে তাহার মা-ই পৃথিবীতে সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ, ঠিক সেই রকম আমি মনে করি আমরা প্রত্যেকেই আমাদের নিজের নিজের ধৰ্ম্মকে পৃথিবীতে সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ বিবেচনা করি।” অন্ততঃ সৰ্ব ফ্রান্সিস প্রভৃতি গত বৎসর লওনে যে পৃথিবীর সব ধর্শ্বের কংগ্রেস করেন, তাহার ফলে তাহার ঐরূপ ধারণা জন্মে। ঐ কংগ্রেসে বক্তারা নিজের নিজের ধৰ্ম্মকেই শ্রেষ্ঠ বিশ্বাস করেন বলিয়া প্রকাশ পায়, এবং সর ফ্রান্সিসেরও নানা ধৰ্ম্মের লোকদের সহিত বাস করিয়া ঐরূপ ধারণ জন্মিয়াছে। “I naturally consider my own religion as the best, although I endeavour to keep that impression, as far as possible, to myself.” “স্বভাবতই আমি আমার ধৰ্ম্মকে সৰ্ব্বোত্তম মনে করি, যদিও আমি সেই ধারণ যথাসম্ভব নিজের মনের মধ্যেই রাখিতে চেষ্ট করি ।” সৰ্ব্বধৰ্ম্মসম্মেলনে সৰ্ব ফ্রান্সিস ছাড়া এবিষয়ে আর কে কি বলিয়াছিলেন, তাহ দেখি নাই, সব আলোচনার সম্পূর্ণ রিপোর্ট কাগজে বাহির হয় নাই । তবে মহাত্মা গান্ধীর প্রশ্নের তিনি যাহা উত্তর দিয়াছেন, তাহা সংক্ষেপে এইরূপ বাহির হইয়াছে – “While ench one regarded his own religion as the best at the same time they slrongly felt that there was fundamental unity among all the religions. And it was this fundamental unity among all the faiths that they desired in this Parliament of Religions to realise. They desired to deepen this impression and make it permanent in their mind.”

  • প্রত্যেকে নিজের ধৰ্ম্মকে সৰ্ব্বোত্তম বিবেচনা করে ইহা সত্য, সঙ্গে সঙ্গে ইহাও আমরা প্রবলভাবে অমুভব করিতেছি যে, সকল ধৰ্ম্মের মধ্যে ভিত্তিগত ঐক্য আছে । এবং এই সৰ্ব্বধৰ্ম্মসম্মেলনে আমরা সকল ধৰ্ম্মের মধ্যে এই ভিত্তিগত ঐক্য উপলব্ধি করিতে চাই । আমরা এই ধারণাটির গভীরতা সাধন করিতে ও মনে তাহা স্থায়ী কল্পিতে চাই ।”

মহাত্মাজী এই প্রশ্নটি এই বিশ্বাসে সম্মেলনে পাঠাইয়াছিলেন, যে, এই প্রকার বিষয়ে সম্মেলনের মত ভিন্ন ভিন্ন ধৰ্ম্মাবলম্বীদের পক্ষে সহায়ক পথপ্রদর্শকের কাজ করিবে । সৰ্ব্বধৰ্ম্মসম্মেলনের ঠিকৃ উদ্দেশ্য বিস্তারিত ভাবে উদ্যোক্তারা বলিতে পরিবেন। আমরা সেই উদ্দেশ্য যতটুকু বুঝিয়াছি, তাহাতে মনে হয় মহাত্মাজীর প্রশ্নের মত কোন প্রশ্নের উত্তর দিবার নিমিত্ত সম্মেলন আহূত হয় নাই । এই রূপ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভবপর কিনা বলিতে পারি না । কিন্তু ইহা নিশ্চিত যে, যদি তাহা সম্ভবপর হয়ও, তাহা হইলেও তাহার জন্য যেরূপ বহুবিস্তৃত অধ্যয়ন ও শাস্ত ধীর দীর্ঘ আলোচনা ও বিবেচনা আবশ্বক, তাহা সৰ্ব্বধৰ্ম্মসম্মেলনের মত একটি জনবহুল বিশাল সভার দ্বারা হইতে পারে না । মহাত্মাজীর প্রশ্নের উত্তর দিতে হইলে প্রত্যেক ধৰ্ম্ম সম্বন্ধে প্রথমে স্থির করিতে হইবে, সেই ধৰ্ম্মের শাস্ত্রনিবদ্ধ মতগত স্বরূপ, ক্রিয়াকৰ্ম্ম ও অনুষ্ঠানগত স্বরূপ, তাহার উপদেষ্টাদের উপদেশের স্বরূপ ও অর্থ, এবং সেই ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের লোকসমষ্টির চরিত্র ও আচরণ দ্বারা এ পর্য্যস্ত জগতের হিত ও অহিত কি হইয়াছে। কেহ যদি কোন ধৰ্ম্মের কোন কোন দিক্‌ বাছিয়া লইয়াসেইগুলিকেই সেই ধৰ্ম্ম বলিয়া খাড়া করিয়া তাহার প্রশংসা বা নিন্দ করেন, তাহা ঠিকৃ হইবে না। আমরা সংক্ষেপে যে-ষে বিষয়ের উল্লেখ করিয়াছি—হয়ত বিবেচ্য আরও বিষয় আছে—সবগুলিই