পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দূর করো মুঢ়তায় অযোগ্যের পদে মানবমর্যাদা-বিসর্জন, চূৰ্ণ করে যুগে যুগে শু,পকুত লজ্জারাশি নিষ্ঠুর আঘাতে । নিঃসঙ্কোচে মস্তক তুলিতে দাও অনস্ত আকাশে, উদাত্ত আলোকে, মুক্তির বাতাসে । ভাইস-চ্যান্সেলার শ্ৰীযুক্ত খামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বকৃত ভাল হইয়াছিল। চ্যান্সেলার-রূপী গবর্ণর সবু জন এণ্ডাসন একটি ছোট রাজনৈতিক বক্তৃতায় লোককে ইহা জানাইতে চাহিয়াছিলেন, যে, নূতন আইন অনুসারে দেশের লোক নিজেদের স্বদেশী মন্ত্রীদের নিকট হইতেই সব কিছু প্রাপ্তব্য পাইতে পারিবেন— ইংরেজের এক পাশে সরিয়া দাড়াইতেছেন! অর্থাৎ এ অবস্থায় যদি দেশের লোকেরা প্রাপ্তব্য না পান, তাহা মন্ত্রীদের দোষ, লোকপ্রতিনিধিদের দোষ এবং নির্বাচকু দেশী লোকদের দোষ ! কিমাশ্চৰ্য্যমতঃপরম্। লাটসাহেবের বক্তৃতাটি সম্বন্ধে আমাদের বক্তব্য মার্চ মাসের মডার্ণ রিভিয়ুতে সবিস্তার বলিয়াছি । ২৩০ জন রাজবন্দীর খালাস পাইবার সংবাদ খবরের কাগজে এইরূপ একটি সংবাদ বাহির হইয়াছে, যে, বাংলা-সরকার অচিরে বিনাবিচারে-বনী ২৩০ জন পুরুষ ও নারীকে খালাস দিবেন, সামান্য যা কিছু সৰ্ব তাহাদিগকে মানিতে হইবে তাহা অতি তুচ্ছ। এই সংবাদ যদি সভ্য হয়, তাহা হইলে ইহাতে সন্তোষ প্রকাশ করিবার পূৰ্ব্বে ঐ সামান্ত সৰ্ব বা সৰ্বগুলি কি, জানা আবশ্যক। সপ্ত সম্বন্ধে সমাকু জ্ঞান লাভ করিলে বুঝিতে পারিব এইরূপ সৰ্বাধীন মুক্তিতে বন্দীদের স্থবিধা হইবে কিনা এবং হঠলে কতটা স্ববিধ হইবে। আপাততঃ মনে হইতেছে, ইহাতে গবন্মেন্টের সুবিধা হইবে। এই ২৩০ জুনকে জেলে থাইতে পরিতে দিতে কিংবা অন্তরীণ-শিবিরে বা স্বগৃহে বন্দী অবস্থায় ভাতা দিতে গবন্মেন্টের যে ব্যয় হুইত, তাহ বাচিয়া যাইবে। পুলিসেরও কৃতিত্ব দেখাইবার ইহাতে একটা স্বযোগ হইতে পারে। তাহারা মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের খোজ খবর হেফাজত উপলক্ষ্য করিয়া ২৩০টি গৃহস্থের এবং তাহাদের নিবাসগ্রামগুলির উপর নজর রাখিতে পরিবে। " উপরের কথাগুলি লিখিত হইবার পর দেখিলাম, ভারতীয় বাবস্থাপক সভায় সবু হেনরী ক্ৰেক বলিয়াছেন, যে, ২৩ জন বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হইবে, তাহার মধ্যে ৬ জন নারী। সৰ্বের কথা তিনি কিছু বলেন নাই। কুমারী রেণুকা সেন, এমৃ-এ,র মামলা প্রায় পাঁচ বৎসর পূৰ্ব্বে বিনা বিচারে কুমারী রেণুকা সেন, এমৃ-এ,কে বন্দী করা হয়। প্রথমে তাহাকে একটা আটকশিবিরে রাখা হয়। পরে তাহাকে তাহার মাতামহের গৃহে অন্তরীণ করা হয়। মাতামহ গরীব লোক, দৌহিত্রীর ভার লইতে বরাবর অসন্মত ছিলেন। শ্ৰীমতী রেণুকার উপর হুকুম হয়, যে, তাহাকে সপ্তাহে একদিন করিয়া নিকটবৰ্ত্তী থানায় হাজির হইতে হইবে। এরূপ হুকুম গবন্মেণ্ট যে আইনের যে ধারা অনুসারে দিতে পারেন, তাহাতে ইহাও লেখা আছে যে বন্দী বা বনির্মিীকে উপযুক্ত ভাতা দিতে হইবে। কিন্তু মাতামহ ও দৌহিত্রীর পুনঃ পুনঃ আবেদন সত্ত্বেও অনেক দিন পর্য্যস্ত সরকার ভাতার কোন ব্যবস্থা না করায় শ্রীমতী রেণুকা এই বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের নিমিত্ত গত বৎসর সেপ্টেম্বরের গোড়ায় থানায় হাজিরি দিতে বিরত হন । তাঁহাতে তাহার নামে মোকদ্দমা হয় ও তাহার শাস্তি হয় । তিনি উর্দ্ধতন আদালতে ও শেষে হাইকোটে আপীল করেন। তাহার পক্ষ সমর্থণার্থ এই একটি যুক্তি দেখান হয়, যে, যেহেতু গবন্মেণ্ট ভাতা দেন নাই, অতএব তাহার স্বাধীনতা সঙ্কোচের আদেশ আইনসঙ্গত হয় নাই। আপীল আদালত দুটি এই যুক্তি গ্রাহ করেন নাই, যদিও উভয় আদালত বলেন গবন্মেণ্ট ভাত দিতে বাধ্য। প্রথম যে আদালতে শ্ৰীমতী রেণুকার বিচার হয়, সেখানে এবং দুই আপীল আদালতে—কোথাও—সরকার পক্ষ বলেন নাই, যে, তাহাকে ভাতা দেওয়া হইয়াছিল। কিন্তু হাইকোটের রায় বাহির হইবার পর একটি সরকারী