পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২২ উচিত। কিন্তু দৃষ্টি রাখা হয় কিসে ব্রিটিশ বাণিজ্য ও পণ্যশিল্পের শ্ৰীবৃদ্ধি হইবে, প্রধানতঃ তাহার উপর। রেলওয়ে বজেটের আলোচনার সময় গবক্সেণ্ট বার-বার পরাজিত হইয়াছেন। তাহ ঠিকই হইয়াছে। কিন্তু এই মৌখিক ও কাগজী পরাজয়ে কিবা আসে যায় ? ভারত-গবন্মেণ্টের বজেট ভারত-গবন্মেন্টের বজেট আলোচনা উপলক্ষেও গবন্মেটি বার-বার পরাজিত হইয়াছেন। স্বাধীন প্রজাতন্ত্র দেশে এরূপ একটা পরাজয় হইগেই গবন্মে ট-পরিবর্তন ঘটে, দ্বিতীয় পরাজয়ের জন্ত অপেক্ষা করিতে দেওয়া হয় না। কিন্তু এদেশে জয় পরাজয় উভয়ই গবন্মেন্টের পক্ষে সমান । বিনা-বিচারে বন্দীদের সংখ্যা কয়েক দিন পূৰ্ব্বে ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় সৰ্ব হেনরী ক্রেক বলেন, ১৯৩৫ সালে জেলসমূহে ১৫•• জন বিনাবিচারে বন্দী ছিল, এখন আছে ১১০০ জন। সবু হেনরী কেবল জেলবাসী বন্দীদের সংখ্যা দিয়াছেন ; স্বগৃহে বা অভিভাবকগৃহে বা অঙ্কের গৃহে যাহারা অন্তরীণ আছে, তাহাদের সংখ্যা কত ? গবন্মেটি এই ওদুহাতে এই সব বন্দীকে ছাড়িয়া দিতে চান না, যে, তাহারা বাহিরে আসিলেই সন্ত্রাসক কিছু করিবে। এই জেলমুক্ত ৪০০ জন কি করিয়াছে, গবষ্মেণ্ট কিন্তু তাহাবলিতে পারেন নাই। বিনা রিচারে একুশ বৎসর বন্দী ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় গবষ্মেণ্টের দমননীতির বিরুদ্ধে যখন তর্কবিতর্ক হইতেছিল, তখন শ্ৰীযুক্ত অমরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, তিনি স্বয়ং এরূপ দৃষ্টান্ত জানেন যে, মাচুব বিনা বিচারে ২১ বৎসর কারারুদ্ধ আছে ! এই কীরা কি অপরাধ করিয়াছে, যে, তাহায়ের প্রকাগু বিচারও হইতে পারে না ? অপরাধের প্রমাণ থাকিলে নিশ্চয়ই বিচার হইত এবং বিচারে যাবজ্জীবন কারাবাসের বেশী দ্বও হইত না। যাবজ্জীবন কারাবাসের মানে কাৰ্য্যতঃ প্রবাসী SN989 ২০ বৎসরের বেশী কারাবাস নহে, অথচ যাহাঁদের বিরুদ্ধে প্রমাণের অভাবে বা যথেষ্ট প্রমাণের অভাবে প্রকাগু বিচারই করা হয় নাই, তাহারা কুড়ি ৰৎসরেরও অধিক জেলে আছে । বিনা-বিচারে বন্দীদের পিতামাতার ভাত যাহারা নাবালক, কিংবা নাবালক না হইলেও বিনা বিচারে বন্দী হুইবার সময় উপার্জক ছিল না, তাহাঁদের পিতামাতাকে কোন ভাত দেওয়া হয় না, খবরের কাগজে এইরূপ পড়িয়াছি। তাহা সভ্য হইলে, সরকারী থিওরি এই, যে, যে নাবালক অবস্থায় বন্দী হইয়াছে, সে কালক্রমে কখনও সাবালক ও উপার্জক হইত না, এবং যে সাবালক ব্যক্তি বন্দী হইবার সময় উপার্জক ছিল না সে পরেও কখনও উপার্জক হইত না। এই থিওরির ইহাও বোধ হয় একটা শাখা যে, কোন নাবালকই উপার্জন করে না । কিন্তু বস্তুতঃ অনেক নাবালক রোজগার করিয়া থাকে । বন্দীদের পিতামাতা বা অন্য অভিভাবক যাহারা অনেক লেখালেখির পরও ভাত বা তাহদের চিঠির উত্তর পান না, তাহীদের সংখ্যা কম নহে। র্যাহার। পান, র্তাহার ৪ ভাতার মঞ্জুরী পান বহু বিলম্বে । সুভাষচন্দ্র বস্তুর স্বাস্থ্য দেশকে ও জাতিকে নিরাপদ রাখিবার জন্যই ঐযুক্ত স্বভাষচন্দ্র বস্তুকে বন্দী করিয়া রাখা হইয়াছে, গবন্মেটি এইরূপ বলিয়া থাকেন। কিন্তু গবন্মেন্টের আইন অনুসারে নিৰ্ব্বাচিত সেই দেশ ও জাতির প্রতিনিধির তাহার মুক্তি চান এবং খবরের কাগজওয়ালারাও মুক্তি চান। অতএব গবন্মেন্টের মতে দেশের প্রতিনিধিরা ও খবরের কাগজ ওয়ালারা হয় দেশের নিরাপদ অবস্থার অর্থ বুঝেন না কিংবা তাহা বুঝিয়াও দেশকে বিপন্ন করিতে চান। অবশ্ন এই নিরাপত্তার মানে যদি হয় আমলাতন্ত্রের নিরুম্বে আরাম ও অ-ব্যতিব্যস্ততা, তাহা হইলে স্বভাষচন্ত্রের মুক্তি ও আরোগ্যলাভের পর তাহার সক্রিয়তা তাহার অন্তর হইতে পারে, স্বীকার করা যায়। . .