পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ੇਲੇ ওগুরি-হাঙ্গওয়ান ՋօՇ: জগতে নিৰ্দ্ধারিত পরমায়ু পূর্ণ হওয়ার পূৰ্ব্বে যাহাদিগকে মারিয়া ফেলা হয়, তাহারা গাঁকি-আমির রূপে পুনঃপ্রকাশিত বা পুনরুজ্জীবিত হয় । উক্ত আকৃতিটি হয় ত সেইরূপ কোনো অতৃপ্ত আত্মার ভাবিয়া তাহার মনে দয়ার উদ্রেক হইল। বিকটাকার পদার্থটিকে কুমানে-মন্দিরের উষ্ণ প্রস্রবণে পাঠাইয় তাহাকে আবার পূর্বের মানবাবস্থায় ফিরিতে সাহায্য করার সঙ্কল্প তিনি করিলেন। একখানি টানাগাড়ী তৈরি করাইয়ু অনামা পদার্থটিকে তার মধ্যে রাথিলেন এবং তার বুকে একখানি কাঠের ফলক ঝুলাইয় দিলেন। তার উপর বড় বড় হরফে লিখিলেন "এই হতভাগ্যকে দয়া করিয়ো, কুমানে-মন্দিরের উষ্ণ প্রস্রবণে যাইতে ইহাকে সাহায্য করিয়ো ! গাড়ীর সংলগ্ন রঙ্গ ধরিয়া যাহার এই গাড়ী কিছুদূর টানিবে, তাহার হবে অশেষ মঙ্গলের অধিকারী ! পদপরিমিত ভূমির উপর দিয়াও এই গাড়ী টানিলে সহস্ৰ যতি ভোজন করানোর পুণ্য সঞ্চয় হইবে, দুষ্ট পা টানিলে দশ সহস্ৰ যতি ভোজন করানোর পুণ্যজন হইবে। আর ত্রিপদ-পরিমিত ভূমির উপর দিয়া ইহা টানিলে যে পুণ্য সঞ্চয় হইবে তদ্বারা কোনো মুত আত্মীয়ের—পিতা, মাত বা পতি-মোক্ষলাভ হইবে ।” অচিরে পথিকের নিরাকার পদার্থটির প্রতি করুণাপরবশ হইল । কেহ কেহ গাড়ীখানি কয়েক ক্রোশ টানিয়া দিল, কেইবা একাদিক্রমে কয়েক দিন ধরিয়া টানিতে লাগিল । এইরূপে, দীর্ঘকাল পরে, এক দিন শকটারূঢ় ‘গকি-আমি’ চোবেইয়ের গণিকালয়ের সম্মুখে আসিয়া পৌছিল ; হিতাচির কোহাগী তাহাকে দেখিয়া এবং তাহার উপরে ঝোলানো কাঠের ফলকে লেখা পড়িয় বড়ই বিচলিত হইলেন। সহসা তার ইচ্ছা হইল, অন্তত এক দিন গাড়ীখানি টানিয়া মৃত পতির জন্ত পুণ্য অজ্জন করেন । অতঃপর তিনি গাড়ী টানার জন্য প্রভুর কাছে তিন দিনের ছুটি প্রার্থনা করিলেন। মুখে বলিলেন স্বৰ্গীয় পিতামাতার জন্য র্তার প্রার্থনা-পতির কথা উল্লেখের সাহস হইল না। চোবেই কিন্তু রাজি হয় না, কঠিন কণ্ঠে বলিল—“আমার পূৰ্ব্ব আদেশ মান্ত কর নি, এক ঘণ্টার ছুটিও পাবেন!" শুনিয়া কোহাগী বলিলেন—“প্ৰভু ! শীত পড়িলে মুরগী যেমন তার বাসায় গিয়া ঢোকে, ছোট ছোট পার্থী যেমন গভীর বনের দিকে দ্রুত ধাবিত হয়, মানুষও ঠিক তেমনি দুঃসময়ে বদান্ততার আশ্রয়ে ছুটিয়া পালায়! আপনার দয়ার কথা কে না জানে, নহিলে এই ভবন-প্রাচীরের পাশেই ‘গাকি-আমি বিশ্রাম করিতে আসিবে কেন ? দয়া করিয়া আমায় কেবল তিন দিনের মুক্তি দিন । তার পরিবর্তে, আমি প্রতিজ্ঞা করিতেছি, প্রয়োজন হইলে প্ৰভু ও প্রভুপত্নীর জন্য প্রাণ পৰ্য্যস্ত বিসর্জন দিব ।” অনেক সাধ্যসাধনার পর নির্দয় চোবেই তার অর্জি মঞ্জুর করিল এবং সেই ছুটির সঙ্গে তার স্ত্রী আরও ছুদিন জুড়িয়া দিল। মেটমাট পাচ দিনের মুক্তি পাইয়া পরমানন্দে কোহাগী সেই ভয়ানক কাজে লিপ্ত হইলেন। বহু কষ্টে ফুকানোসেকি, মুস, বাম্বা, সামেগায়ে, ওনে, স্বয়েনাগ-তোগে অতিক্রম করিয়া তিন দিনের মধ্যে তিনি ওংস্ক নামক প্রসিদ্ধ নগরে গিয়া পৌছিলেন। তিনি জানিতেন, সেইখানে তাহাকে গাড়ী ত্যাগ করিতে হইবে, কারণ তথা হইতে মিনে-প্রদেশে ফিরিতে লাগিবে দুই দিন। ৪ৎস্থ পয্যন্ত পথ দীর্ঘ। পথপ্রান্তে প্রস্ফুটিত বনফুল, গাছে গাছে কলকণ্ঠ পাপী, ধানের ক্ষেতে কুষাণীদের সঙ্গীত র্তার নয়ন মন পরিতৃপ্ত করিল। কিন্তু ক্ষণস্থায়ী সে আনন্দ, সেই সব দৃশ্য ও শব্দ অতীত জীবনের কথা স্মরণে আনিয়া তার বর্তমান দুরবস্থার বেদনা আরও বাড়াইয় তুলিল । তিন দিন তিন রাত্রি দারুণ পরিশ্রমে কাতর হইলেও তিনি কোনো সরাইয়ে আশ্রয় লইলেন না। পরদিন যে অনাম পদার্থটিকে ছাড়িয়া যাইতে হুইবে তাঁহারই পাশে তিনি শেষ রাত্রি কাটাইলেন। তিনি ভাবিতে লাগিলেন, শুনিয়াছি গাকি-আমি’র নিবাস প্রেতলোকে । সুতরাং আমার স্বৰ্গীয় স্বামীর কথা ইহার জানা সম্ভব! এই গাকি আমি'র দর্শন ও শ্রবণশক্তি থাকিলে বেশ হইত ! তাহা হইলে ইহাকে কানেউজির সংবাদ শুধাইতে পারিতাম, হয় মুখের কথায়, নয় লিখিয়া ! কুয়াশায়-ঢাকা গিরিশিরে যখন ভোরের আলো ফুটিল,