পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ই ১০ করিতে হয়। এই বিবরণের লেখক ইঙ্গিতে বলিয়াছেন, রঙ্গপুরে থাকিতে রাজা রামমোহন র্তাহার প্রিয়কাৰ্য্যে মনোনিবেশ করিতে পারেন নাই । এই বিবরণে অল্প কথায় রাজ রামমোহন রায়ের কলিকাতার জীবনের একটি জীবস্ত চিত্র পাওয়া যায়। তিনি ধৰ্ম্মসংস্থাপনে ব্ৰতী হইয়াছিলেন, কিন্তু তাহার না ছিল গুরু, না ছিল শিষ্য। ছায়াবং অন্তগত অবধূত হরিহরানন্দ তীর্থস্বামী বামাচারে রত ছিলেন, ব্ৰহ্মজ্ঞানঅনুশীলনে তাহার নিষ্ঠা মাত্র ছিল না । স্বামীজীর অতুজ রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ লোকভয়ে হাতেকলমে সহমরণ সমর্থন করিয়া রামমোহন রায়ের মনে ব্যথা দিয়াছিলেন । রামমোহন রায়ের ব্রহ্মোপাসনা-প্রণালী এই বিবরণে স্পষ্ট ভাষায় বর্ণিত হইয়াছে । ইহাতে তান্ত্রিক বামাচারের নামগন্ধ নাই । রামমোহন রায় তর্কস্থলে বামাচারের এবং তান্ত্রিক শৈববিবাহের সমর্থন করিয়াছেন বলিয়া অনেকে মনে করেন তিনি বামাচারী এবং শৈববিবাহকারী উভয়ই ছিলেন । কিন্তু এইরূপ মনে করিবার কোন সাক্ষাং-প্রমাণ এবং উপযুক্ত কারণ দেখা যায় না। রামমোহন রায় কলিকাতা আসিয়া বাস করিলে যে-সকল ধনী-মানী ব্যক্তি র্তাহার নিকট গমনাগমন করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন, তাহারা পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধ কথা শুনিয়া র্তাহার সংসর্গ ত্যাগ করিয়াছিলেন । যাহারা তখন তাহার সংসর্গ ত্যাগ করেন নাই, তাহারাও পৌত্তলিকতা ত্যাগ করিয়া রীতিমত ব্ৰহ্মজ্ঞান অঙ্কুশীলন আরম্ভ করিতে পারেম নাই । তখন তাহার নামে অবিরত অসত্য অপবাদ প্রচবিত্ত হইতেছিল । এই বিবরণ-লেখক জয়কৃষ্ণ সিংহ সম্বন্ধে যে ঘটনা লিখিয়াছেন তাহা হইতে বুঝা যায় অপবাদের মাত্রা কত দূর উঠিয়াছিল। উদাসীন মিত্ৰগণে এবং অসত্যবাদী শক্ৰগণে পরিবেষ্টিত হইয়। রামমোহন রায় একাকীই তাহার মহাব্ৰত অনুষ্ঠানে রত ছিলেন। অথচ তিনি কখনও আমাচুী প্রেরণার দাবী করেন নাই । এইরূপ একান্ত বিচারনিষ্ঠ ( rational ) ধৰ্ম্মসংস্কারক প্রাচ্য জগতে আর দেখা যায় না । ব্রাহ্মসমাজ রাজা রামমোহন রায়ের প্রতিষ্ঠিত “আত্মীয় সভা’র রূপান্তর । এই বিবরণে “আত্মীয় সভা” প্রতিষ্ঠার প্রবাসী s\こ8ー সময়, ১৭৩৭ শক ( ১৮১৫ খ্ৰীষ্ট বা ) পাওয়া যায় । ১৭৫% শকের পৌষ মাসে যোড়াসাকোর কমল বসুর বাড়ির অধিবেশন উপলক্ষে প্রকৃতপ্রস্তাবে পুনরুজ্জীবিত আত্মীয় সভার নামকরণ হয় ব্রাহ্ম সমাজ, এবং ১৭৫১ শকের ১১ই মাঘ ( ১৮৩০ খ্ৰীষ্টাব্দের ২২শে জানুয়ারি ) নিজস্ব গৃহে সমাজের গৃহপ্রবেশ ঘটে । রাজা রামমোহন রায়ের ইংলণ্ড-যাত্রা হইতে ১৭৫৬ শকের পৌষ মাস (ডিসেম্বর ১৮৩৪ ) পৰ্য্যন্ত তাহার জ্যেষ্ঠ পুত্র রাধাপ্রসাদ রায় ব্রাহ্ম সমাজের কার্য্যনিৰ্ব্বাহক ছিলেন। তার পর তিনি দিল্লী চলিয়া যায়েন। শিবনাথ শাস্ত্রী তাহার //istory of the Brahmo Samaj পুস্তকে রাধাপ্রসাদ gig into safotoa, After his return from Delhi he ceased to take an active interest in the new झिल्ली श्रउ भिद्रिग्नी श्रांभिग्रा রাধাপ্রসাদ রায় সমাজের কোন কাৰ্য্যভার গ্রহণ করেন নাই । কিন্তু “তত্ত্ববোধিনী সভা”র ১৭৬৮ হইতে ১৭৭২ শকের ( ১৮৪৬-১৮৫০ খ্ৰীষ্টাব্দের ) “সাম্বংসরিক আয় ব্যয় স্থিতির নিরূপণ পুস্তকে” দেখা যায় এই বয় বৎসর রাধাপ্রসাদ রায় এবং দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর উভয়ে “তত্ত্ববোধিনী সভা’র কৰ্ম্মাধ্যক্ষ ছিলেন । তারপর ১৭৭৩ শকে সভার একমাত্র কম্মাধ্যক্ষ নিযুক্ত হয়েন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৭৭৩ শকের আয়ের হিসাবে রাধাপ্রসাদ রায়ের নামে ২২২ জমা দেখা যায়। কিন্তু ১৭৭৪ এবং ১৭৭৫ শকের আয়ের হিসাবে রাধাপ্রসাদ রায়ের নামে কোনও টাকা জমা দেখা যায় না। ইহার কারণ কি বলা যায় না। ১৭৬৬ হইতে ১৭৭০ পর্য্যস্ত পাচ বৎসর কাল রাধাপ্রসাদ রায়ের অতুজ রমাপ্রসাদ রায় “তত্ত্ববোধিনী সভা’র সভাপতি ছিলেন । ১৭৭২ শক হইতে ১৭৭৫ শক পর্য্যন্ত সভার অধ্যক্ষগণের মধ্যে রমাপ্রসাদ রায়ের নাম প্রথম উল্লিখিত হইয়াছে, এবং ১৭৭৫ শক পৰ্য্যস্ত তাহার নামে সভার চাদ ( ৩৬ ) জমা আছে। রাজা রামমোহন রায়ের পুত্ৰগণের সহিত ব্রাহ্মসমাজের সম্বন্ধের বিষয় ভাল করিয়া আহুসন্ধান করা কর্তব্য । church." Ez{# EM,

  • Sivanati, Sastri, History of the Brahmo Samaj, Vol. I, Calcutta, 1911, p. 66.
  • তত্ত্ববোধিনী পত্রিক, আষাঢ় ১৭৭১ শক, ৬৪ পৃঃ ।