পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

टेऊपृष्ठे শরণাপন্ন হইলে কেমন হয় ? চেষ্টা করিলে নিশ্চয়ই একট চাকরি ও আমাকে জুটাইয়া দিতে পারে। পরদিন সঙ্গ লইলাম। ঠিক যখন সে খাওয়া-দাওয়া সারিয়া তাড়াতাড়ি বাহির হইয়া যাইতেছে তখন বলিলাম, “ভায়, আমিও তোমার সঙ্গে একটু বেরুবো।” “আমার সঙ্গে ? কেন ?” “একটা কথা ছিল । মা.ে—” “তহ’লে আস্থন। দেরি করবেন না—আমার ‘লেট' হয়ে যাচ্ছে । দেরি হয়ে গেলে সে ব্যাটা এসে পড়বে—” সঙ্গে সঙ্গে বাহির হইয়া পড়িলাম। পথে যাহতে যাইতে বিকাশ বাবু একবার জিজ্ঞাসা করিলেন, “দরকারটা কি ?” “অর্থাৎ—” কি করিয়া কথাটা বলিব ভাবিতে লাগিলাম । “টাকাকড়ি আমি ধার দিতে পারব না,—সেটা আগেই জানিয়ে রাখছি।” “না-না, টাকাকড়ি চাই না। বলব এথন !” “ট্রামে ত আমি যাব না। আমি হেঁটে যাব।” “বেশ ত ! চল আমিও হেঁটে যাই । কত দূর ” “হডেন গার্ডেন ।” “ইডেন গার্ডেনে আপিস্ ? কিসের আপিস ?” “আপিস কে বললে আপনাকে ” বলিয়া বিকাশ বাৰু সহাস্ত দৃষ্টিতে আমার দিকে চাহিয়া রহিলেন । “তবে ?” 'আরে রামঃ—আপনি বুঝি ভেবেছেন আমি রোজ আপিসে যাই ?” “কোথা যাও, তাহ’লে ?” একটু ইতস্তত: করিয়া বিকাশ বাবু বলিলেন, “পালিয়ে যাই ।” নিৰ্ব্বাক হইয় তাহার মুখের দিকে চাহিয়৷ রহিলাম! আচ্ছ, চল ট্রামেই 1:R-ృv পাশাপাশি ஆஇல் বিকাশ বাবু বলিয়া চলিলেন, “বাবা কিছু টাকা fixed deposit রেখে গিয়েছিলেন—তারই ৪• স্থদ থেকে গ্রাসাচ্ছাদন চলে। তিন বছর অবিরাম চেষ্টা করেও চাকরি জোটাতে পারি নি। অথচ এম. এ-তে ফাষ্ট ক্লাস পেয়েছিলাম । চলুন—লেট হয়ে যাচ্ছে—সে ব্যাট এসে পড়লে বেঞ্চটা আর পাব না !” উভয়ে আবার খানিক ক্ষণ নীরবে পথ অতিবাহন করিলাম। বিকাশবাবু আবার বলিলেন, “বাড়িতে কথাট। ফাস ক’রে দেবেন না যেন ! বউ জানে আমি কোন বড় আপিসে বিনা-মাইনেতে ‘অ্যাপ্রেণ্টিসি করছি। কিছুদিন পরে মাইনে হবে । তাই তাড়াতাড়ি রোজ ভাত রোধে দেয় ।” আবার কিছুক্ষণ নীরবে পাশাপাশি চলিয়াছি। আবার বিকাশ বাবু বলিলেন, “পালিয়ে আসি। বুঝলেন না ? বাড়িতে ওই একপাল ছেলে নিয়ে সারাদিন ব'লে থাকা অসহ ! সারা ক্ষণ ওদের বায়ন লেগেই অাছে ! বঁাশী কিনে দাও, লজেনস দাও—পুতুল দাও ! পাশের বাড়ির ছেলের লাল জামা হয়েছে সেই রকম জামা ক'রে দাও ! গিল্পীরও নানা রকম আবদার আছে —সরে পড়ি । বুঝলেন না !” আবার কিছুক্ষণ চুপচাপ । আবার বিকাশবাবু একটু হাসিয়া বলিলেন, “বাড়িতে থাকুলেই গোলমাল। বুঝলেন না । সেদিন রাত্রে গিয়ে শুনলাম ছোট ছেলেটার পড়ে গিয়ে মাথা ছেচে গেছে । নাক দিয়ে রক্তও পড়েছিল প্রচুর । বাড়িতে থাকৃলে হৈ হৈ ক'রে একটা ডাক্তার-ফাক্তার ডাকতে ক'ত ধার করেও ! ছিলাম ন-নিশ্চিন্ত - চলুন একটু পা চালিয়ে—ইডেন গার্ডেনে গাছের ছায়ায় একটা বেঞ্চি আছে—সেইটেতে গিয়ে শুয়ে-ব'সে সারাদিনট-বুঝলেন—“লেট” হয়ে গেলে আবার আর এক ব্যাট এসে সেটা দখল করে-বুঝলেন ।” পাশাপাশি দুই জনে দ্রুতবেগে হাটিয়া চলিয়াছি। ইডেন গার্ডেনের খালি বেঞ্চিটা ন হাতছাড়া হইয়া যায় !