পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চণ্ডীদাসের দেশ ও কালের লিখিত প্রমাণ শ্ৰযোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি বড়ু চণ্ডীদাস কোথায় বাসলীচরণ বন্দিয়া কবে রাধাকৃষ্ণলীলাগীতি গাহিয়াছিলেন ? সে দেশে নিশ্চয় বাসলী ছিলেন, তাহার গীতের রসজ্ঞ শ্রোতাও ছিলেন। কোন দেশের ভাষায় সে সব গীত রচিত হইয়াছিল ? যে দেশে উৎকৃষ্ট গায়ক জন্মগ্রহণ করেন, সে দেশে গীতবাদ্যের চর্চাও থাকে, তাহার অন্তে তাহার রচিত গীত বহুকাল প্রচারিত থাকে। সে দেশে যাতায়াতে অসুবিধা থাকিলে সে কবির গীত সে দেশেই প্রচারিত থাকে, দূরদেশে প্রচারিত হইতে বহুকাল লাগে, নূতন দেশে গীতের কিছু কিছু রূপান্তরও ঘটে। মল্লভূমের ইতিহাসে দেখিতেছি, চতুর্দশ খি ৪-শতান্ধে বিষ্ণুপুরে গীতবাষ্ঠের রীতিমত চর্চা চলিয়াছিল। সে বিষ্ণুপুরেই বড়ু চণ্ডীদাসের গীতিকাব্যের পুর্থী আবিষ্কৃত হইয়াছে। দুইখানা খাতাদৃষ্টে আরও জানা গিয়াছে, সে বিষ্ণুপুরে শত বৎসর পূর্বেও বড়ুর কয়েকটা গীত কলাবতের শিষ্যদিগকে শিথাইতেন। ছাতনায় বাসলী, বিষ্ণুপুরে চণ্ডীদাসের গীতিকাব্যের আবিষ্কার, বিষ্ণুপুরে শত বৎসর পূর্বেও কয়েকটা গীতের প্রচলন, ছাতনায় চণ্ডী-চরিতাদি গ্রন্থপ্রণয়ন, এই সকল যোগ আকস্মিক হইতে পারে না। স্ববর্ণরেখা নদীর বালিতে সোনা পাওয়া যায়, দামোদরের বালিতে পাওয়া যায় না । চণ্ডীদাস যেমন-তেমন গায়ক ছিলেন না। মৃদুর মিথিলায় তাহার থ্যাতি পহুছিয়াছিল । চৈতন্যদেবের সময় হইতে অনেক বৈষ্ণব কবি চণ্ডীদাসের বন্দনা করিয়াছেন । আর যে কত কবি গুরুর নামে আত্মবিসর্জন করিয়াছেন, তাহার সংখ্যা নাই । লোকে এমন গুরুর চরিত সহজে বিস্কৃত হয় না। সত্য হউক, মিথ্য হউক, রামীর সহিত চণ্ডীদাসের মিলনের জল্পনা সোনায় সোহাগী হইয়াছিল। তিনি কোন দেশ কবে ধন্য করিয়াছিলেন ? ইহাই প্রশ্ন । ছাতনায় খানকয়েক পুর্থী পাওয়া গিয়াছে, তাহাতে এই প্রশ্নের উত্তর আছে, চণ্ডীদাস হামীর-উত্তর রায়ের রাজত্বকালে ছাতনায় বাসলীর সেবক ছিলেন ; এখানে সে সকল পুর্থীর অল্পস্বল্প বিবরণ দিতেছি। (১) পদ্মলোচন-শমার রচিত সংস্কৃত “বাসলীমাহাত্ম্য” । রচনা-শক ১৩৮৭, ইং ১৪৬৫ সাল। বাসলীর মহিমাকীতৰ্ন এই পুর্থীর উদেশ্ব। প্রসঙ্গক্রমে চণ্ডীদাসের নাম ও পরিচয় আছে। (সন ১৩৩৩ সালের ফাঙ্কনের “প্রবাসী” ভ্রষ্টব্য। ) (২) উদয়-সেন-রচিত সংস্কৃত "চণ্ডিদাসচরিতামৃতম্” । রচনা-শক ১৫৭৫, ইং ১৬৫৩ সাল। এই পুর্থীর একথানি পাতা পাওয়া গিয়াছে। গত চৈত্র মাসে ছাতনার রামতারককবিরাজের বহি পাইয়াছি। তাহাতে আর এক পাতার নকল আছে। সে পাতায় একত্রে বাসলী, হামীর-উত্তর, দেবীদাস ও চণ্ডীদাসের উল্লেখ আছে। চণ্ডীদাসের চরিতবর্ণন "চণ্ডিদাসচরিতামৃতম্” পুর্থীর উদ্দেশু। কবিরাজের বহির বৃত্তান্ত পরে লিখিতেছি। (৩) কৃষ্ণ-সেন-রচিত “বাসলী ও চণ্ডীদাস”। উদয়-সেনের পুখীর বঙ্গানুবাদ। রচন-শক ১৭৩৫, ইং ১৮১৩ সাল। এই পুখী “প্রবাসী"তে মুদ্রিত হইতেছে। (৪) কৃষ্ণ-সেন-রচিত “ছাতনার রাজবংশপরিচয়।” রামতারক-কবিরাজের বহিতে উদ্ধৃত। রচন-শক আমুমানিক ১৭৪•, ইং ১৮১৮ সাল। এই বংশ-পরিচয় আগামী মাসে আলোচিত হইবে। ইহাতে শক আছে। (৫) রাধানাথ-দাস-রচিত “বাসলীর বন্দন|”। বাসলীর রুপাবর্ণন এই পুখীর উদেশ্ব। ইহাতে চণ্ডীদাসের নাম" নাই। কিন্তু দেবীদাসের আছে। এ বিষয় পরে লিখিতেছি"। রচনা-শক আনুমানিক ১৭৫০, ইং ১৮২৮ সাল। ১। রামতারক-কবিরাজের বহি আমি উদয়-সেন-কৃত "চণ্ডিদাসচরিতামৃতম্” পুর্থীর মাত্র একখানি পাতা পাইয়াছি। কৃষ্ণ-সেন-কৃত বঙ্গাতুবাদের