পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

حيdrt چ হইয়া গেল। গবর্ণমেণ্ট পলিটিক্যাল ডিপার্টমেণ্টে তাহার একটি চাকরি পাইবার সম্ভাবনা দৃঢ় হইল । অরুণ বি-এ পরীক্ষায় ইতিহাসে ফাষ্ট ক্লাস পাইল । সে কি করিয়া যে ফাষ্ট ক্লাস পাইল তাহ ভাবিয়া সে অবাক হইয়াছিল । প্রতিমার কথা ভাবিতে গিয়া উমার কথা অরুণের মনে পড়ে। উমাকে যে ভুলিতে হইবে। তবু তাহার কথা অনিচ্ছাসত্ত্বেও মনে পড়ে। প্রতিমার বিবাহের দিনগুলিতে নানা কাজের মধ্যে উমাকে সে বড় নিকটে পাইয়াছিল । বিবাহ-বাড়িতে নানা আভাসে, ইঙ্গিতে, এ বৎসরের শেষে যে আর একটি বিবাহ আসয়, এই কথা সবাই ব্যক্ত করিতে চেষ্টা করিত । উমার নিকট অরুণকে দেখিলেই রসিকা মহিলাগণ এক বিশেষ অর্থপূর্ণ হাস্য মুচকাইয়া হাসিয়া চলিয়া যাইতেন। অরুণ লজ্জিত হইয়া উঠিত, উমা ভয়ঙ্কর রাগিয়া যাইত। প্রতিমার ঘর পার হইম বারান্দ দিয়া অরুণ পুবের বড় বারান্দায় আসিয়া দাড়াইল । জীবনের এক-একটা ঘটনা স্মৃতির ফলকে যেন আগুনের রেখায় লেখা হইয়া যায় ; কোন প্রিয়জন একদিন কি কথা বলিয়াছিল, বার-বার সে কথাগুলি কেন মনে আসে ? অজয়-প্রতিমার বিবাহ চুকিয়া গিয়াছে। বাড়ি নিঝুম । বাতাসে ভাজা লুচি ও নানা তরকারির গন্ধ । অরুণ ও উমা বারান্দার এক কোণে নিভৃতে আসিয়া দাড়াইল । কোণে একখানি চেয়ার ছিল । অরুণ বলিল—বস, তুমি ভয়ানক শ্রাস্ত, খুব থেটেছ, আজ । উমা হাসিয়া বলিল—তুমি বাস, তুমি হচ্ছ এখন কুটুমবাড়ির লোক, আমি বারান্দায় রেলিং ঠেস দিয়ে বেশ দাড়াচ্ছি। দুই জনে পাশাপাশি দাড়াইল । তারায় ঝকৃমক করিতেছে । —তুমি তাহলে কাল ষাচ্ছ ? —আর কি, বিয়ের হাঙ্গাম ত চুকে গেল । —আর দু-চার দিন থেকে যাও, ভয়ানক পড়ার ক্ষতি হবে ? সুশীতল রাত্রি । আকাশ প্রবাসী —সবেতেই তোমার ঠাট্টা । তুমি যদি বল । ঘাই । উমা চুপ করিয়া রহিল । অরুণ অতুভব করিল, গ মুখে মৃদু হাসি থেলিয়া যাইতেছে। অরুণ আবেগের সহিত উমার হাত ধরিয়া বলিল—শে উম, তুমি জান, আমি তোমাকে— উমা গম্ভীর মুখে হাত টানিয়া লইয়া একটু দূরে স{ং দাড়াইল । উমা একটু বিরক্তির স্বরে বলিল-আমি জানি, তুমি { বলতে চাওঁ ; কিন্তু সেকথা ব’লে কোন লাভ আছে কি কেন তুমি নিজেকে এমন চাপ করে । অরুণ আপনাকে দমন করিতে পারিল না । সারাদি থাটিয়া তাহার দেহ যেমন শ্রাস্ত তাহার মন তেমনি উত্তেজিত সে একটু রুক্ষ স্বরে বলিল-ভালবাসা সে কি এত সস্তাব সেট চাপ, জিনিষ ? উম গম্ভীর স্বরে বলিল ভালবাসা কি আমি বুঝি ন তুমিও বোঝ না অরুণ,-তুমি যা ভালবাসা ভাবছ— —আমি বুঝি কি বুঝি না সে বিচার তোমার করsে হবে না, তুমি চুপ করে । —কি সেণ্টিমেন্টাল তুমি । —ইn, সেণ্টিমেণ্টাল ! একটা কথার আশ্রয় নিয়ে কথার আড়াল দিয়ে হৃদয়টাকে তোমরা বাদ দিতে চাও, হৃদয় ব’লে কি কিছু নেই! অরুণ আবেগের সহিত উমরি দিকে অগ্রসর হইয়া তাহাৰ হাত জড়াইয়া ধরিল। উম জোরে হাত টানিয়া লইয়া বলিল—কি যে ক'রে,— আমি মল্লিকা মল্লিক নই, বুঝলে । অরুণ একটু শিহরিয়া কঁাপিতে লাগিল ; তিক্তস্বৰে বলিল- সে জানি, মল্পিক মল্লিক তোমার মত হৃদয়হীন নয় —বেশ ! আমার হৃদয় নেই, তোমায় বলছি ত মাঝরাতে তুমি কি আমার সঙ্গে ঝগড়া করতে এলে—যাও ঘুমোও গে যাওঁ । —আমায় ক্ষমা কর উমা । আমি কাল চলে যাব তোমার কাছ থেকে এমনভাবে বিদায় নিতে চাই না । —দু-এক দিন থাকই না বাপু ।