পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀՆՀ আছে । আমাদের দ্বিতীয় সম্মেলন ও প্রদর্শনী হয় উত্তরপাড়ার সারস্বত-সম্মেলনের আহবানে । তৃতীয় সম্মেলন ও প্রদর্শনী হয় চন্দননগরে নৃত্যগোপাল স্মৃতিমন্দিরে— তৎপরবর্তী অধিবেশন হয় আবার বঁাশবেড়িয়ায় ; তাহার পরের সম্মেলন ও প্রদর্শনী হয় শ্রীরামপুর রাজা কিশোরীলাল গোস্বামী হলে । এই সকল সম্মেলন ও প্রদর্শনী গ্রন্থাগারসমিতির কার্য্যকারিতা বৃদ্ধির সহায়ক হয়। দেশে অর্থনৈতিক দুর্দশার একশেষ হইয়াছে । এই দারুণ অর্থক্লছ্‌তার দিনে সমিতির কার্য্যপ্রসার আশাকুরূপ হওয়া সম্ভবপর নহে । সরকার গ্রন্থাগার সম্বন্ধে বহুদিন উদাসীন ছিলেন । আন্দোলনের ফলে সে ভাব কিছু কিছু কাটিতেছে । জেল বোর্ড বা ইউনিয়ন বোর্ড পূৰ্ব্বে গ্রন্থাগারে অর্থসাহায্য করিতে পারিতেন না, আইনগত বাধা ছিল। সংশোধিত আইন দ্বারা সে-সব বাধা দূর হইয়াছে । এখন জেলাবোর্ড বা ইউনিয়ান বোর্ড র্তাহীদের এলাকাস্থিত গ্রন্থাগারে সাহায্য করিতে পারিতেছেন। হুগলী জেলা বোর্ডই তাহার প্রথম পথপ্রদর্শক । বাংলা দেশে হুগলী জেলার গোঘাট ইউনিয়ান বোর্ডই সর্বপ্রথম তাঁহাদের এলাকাস্তিত গ্রন্থাগারে সাহায্য দান প্রবর্তন করেন । বাংলা দেশে লাইব্রেরী-বিজ্ঞানে বিশেষজ্ঞ গ্রন্থাগারিকের বিশেষ অভাব পরিলক্ষিত হইত। মান্দ্রাজ, পঞ্জাব প্রভৃতি প্রদেশে গ্রন্থাগারিকের কার্য্য শিক্ষার সুব্যবস্থা আছে, বাংলা দেশে তাহার কোন ব্যবস্থাই ছিল না । সরকারও একেবারেই উদাসীন ছিলেন । এই ঔদাসীন্ত ঘুচাইবার প্রস্তাব করিলে তাহার বলেন যে এখানে বিশেষজ্ঞ গ্রন্থাগারিকের চাহিদ। নাই । চাহিদা আছে কিন পরীক্ষা করিবার জন্য সন ১৯৩৪ সালে আমরা বঁশবেড়িয়ায় নিদিষ্ট-সংখ্যক গ্রন্থাগারের কৰ্ম্মীদের লইয়া একটি শিক্ষাকেন্দ্র খুলি। তাহাতে দেখা যায় শিক্ষার্থীর অভাব নাই । সে কেন্দ্রের শিক্ষার ভার লন শ্রীপ্রমীলচন্দ্র বস্থ । তিনি সেই সময় বড়োদা ও পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিকের কায্য শিক্ষা করিয়া ফিরিয়া আসেন। এখন তিনি কলিকতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক । যদিও অন্যান্য অধ্যাপক ও শিক্ষাব্রতী এই কেন্দ্রে অধ্যাপনা করিয়াছিলেন ও ইস্পীরিয়াল লাইব্রেরীর গ্রন্থাগারিক খ-বাহাদুর আসাদুল্লা এই কেন্দ্রের প্রবাসী ১৩৪৩ ডিরেক্টর ছিলেন, তবু প্রমীল বাবুর সাহায্য ন পাই: আমরা এই শিক্ষাকেন্দ্র খুলিতে পারিতাম না। এ শিক্ষাকেন্দ্রের সাফল্যে বেশ একটা সাড়া পড়িয়া মূমি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় একটি শিক্ষাকেন্দ্র খুলিবার প্রস্ত করেন, কিন্তু তাহা কাৰ্য্যে পরিণত হয় নাই। ইতিমতে, ইস্পীরিয়াল লাইব্রেরীর গ্রন্থাগারিক খ-বাহাদুর আসাদুল্লার চেষ্টায় সেখানে একটি শিক্ষাকেন্দ্র ছয় মাসের জন্য খোলা হয় তাহার ফলও বেশ সন্তোষজনক হইয়াছে। আমরা প্রমীল বাবুকে দিয়া আরও একটা দরকারী কাত্ত করাইয়া লইয়াছি। আমাদের জেলার সদর ঐরামপুর ও আরামবাগ মহকুমায় যত লাইব্রেরী আছে-সাধারণ লাইব্রেরীই হউক আর স্কুল-কলেজ-সংশ্লিষ্ট লাইব্রেরীই হউক।-- তিনি স্বয়ং সেগুলি পরিদর্শন করিয়া তাদের বর্তমান অবস্থা - তাহার উন্নতি বিধানের সহজ উপায় তাহার বিবরণে দিয়াছেন , আর তিনি যেখানে যেখানে গিয়াছেন সে সব স্থানে কৰ্ম্মাদিগকে লাইব্রেরী-পরিচালন সম্বন্ধে পরামর্শ ও উপদেশও দিয়াছেন । গ্রন্থাগারগুলিকে জনপ্রিয় করিতে হইলে পুস্তকের অবাধ ব্যবহারের ব্যবস্থ করা অত্যাবশুীক । অস্তুতপক্ষে দরকারী বই যাহাতে বিন চাদায় পাঠককে ব্যবহার করিতে দেওয়া হয় তাহার ব্যবস্থা করিতে হইবে । আমাদের স্কুল-লাইব্রেরীকে চিত্তাকর্ষক করিতে হুইবে । যাঙ্গতে চত্রর লাইব্রেরীতে আক্লষ্ট হয় ও তাহাদের পীঠের আগ্রহ বাড়ে তাহার ব্যবস্থা হওয়া আবশ্যক । বিলাতে কৌটি লাইব্রেরী সাভিসেজের মত জেলাবোর্ডের মধ্যবৰ্ত্তিতায় লাইব্রেরীগুলির মধ্যে পরস্পর পুস্তক লেন-দেনের ব্যবস্থ হওয়া দরকার । এই লেন-দেনের ফলে একই পুস্তক দোকর-তেকর খরিদ বন্ধ হইয়। সেই টাকায় নূতন নূতন বই কেনা চলিতে পারিবে। ইহাতে অন্য অনেক রকম সুবিধা আছে । অসহযোগ আন্দোলনের সময় হইতে এদেশে শিক্ষিত কারাবন্দীর সংখ্য অনেক বাড়িয়া যায় । তাহার কারাগারে পুস্তকের অভাব বিশেষভাবে অহুভব করিতে থাকেন, কেবল হুগলীতে নয়, অন্ত কারাগারেও পুস্তকের চাহিদা পুরণ করিবার কোন ব্যবস্থাই ছিল না। এ-সম্বন্ধে আমরা কয়েক বৎসর আন্দোলন করিয়া আসিতেছিলাম—এবার তাহার কিছু ফল