পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

टेक्कTछे নাস্তিকই বলেন । যাহা হউক, অন্ত প্রশ্ন এড়াইয়া চম্পট দিলাম। ষ্টেশনের কাছে লরীতে চড়িয়া কনৌজ হটতে পাচটার সময় বিদায় লইলাম । পথে পুনিত পঞ্চালের সবুজ ক্ষেত, আমের বাগান, গ্রামের হাট, রুশশরীর জীর্ণবস্ত্র ভবিষ্যতের আশারপ গ্রাম্য ছাত্রদল, এমনই সব দৃপ্ত দেখিতে দেখিতে ফরথাবাদে গাড়ী বদল করিয়া ফতেহ গড়ের গাড়ীতে ঐ দিনই মোট ষ্টেশনে পৌছিলাম। রাত্রে ষ্টেশনেই মুক্ত বাতাসের সঙ্গে প্রচণ্ড শীতের আনন্দে দেহমম পুলকিত হইল! অদ্য, সকালে ংকিস!-বসন্তপুরের পথ ধরিলাম । ২৯শে ডিসেম্বর প্রত্যুযেই কালী নদীর নৌকা আমাদের নামাইয়া দিল । ক্ষেতের মাঠে খুরিয়া-ফিরিয়া, ভুলভ্রাস্তি করিয়া কোন প্রকারে তিন মাচল পথ অতিক্রম করিয়া বিসারী দেবীর কাছে পৌছিলাম। দেখিলাম অতীত-ভারত-গৌরব সম্রাট অশোকের অক্ষয় কীৰ্ত্তিরুপ স্তম্ভরাজির মধ্যে একটির শিথরহস্তীর পাশেই কয়েকটি মলিনবেশ ভারতসন্তান রৌদ্র সেবন করিতেছেন । তাহদের মধ্যে পুষ্করগিরি আমাকে পরিচিত বন্ধুর মত স্বাগত সম্ভাষণ করিলেন। মুখ হাত ধুইবার পর প্রাচীন অশোকস্তুপ অধিকারিণী অজ্ঞাতনাম বিসারী দেবকে দশন করিলাম । পুষ্করগিরি ভোজনের আয়োজন আরম্ভ করলেন, আমি সংকিস! গড় দেখিতে চলিলাম। পাঞ্চলিদিগের প্রাচীন মহানগর সাংকাত্যের ধ্বংসাবশেষও মহান । গ্রামের অধিকাংশ ধরহ পুরাতন ক্টটের তৈয়ারী । শুনিলাম অতিগভীর কুপ খনন কালে এখনও বহুদূর পয্যন্ত কাঠের বিশাল তক্তা পাওয়া যায়। পাওয়াই সম্ভব, কেমন এককালে দুগ, প্রাসাদ, চত্বর সবই কাষ্ঠময় হইত। সংকিস ফররুখাবাদ জেলায়, নিকটেই এটায় সরাই-অহাগত আছে যেখানে এখনও বহু জৈন ( সরাবৰ্গ ) পরিবার বাস করে । সেখানে কিছুদিন পূর্বের পুরাতন মূৰ্ত্তি পাওয়া গিয়াছিল। সংকিস প্রাচীন নগরের উচ্চ ভিটার উপর স্থাপিত বসতি । ঐদিন সন্ধ্যায় পুষ্করগিরির প্রস্তুত স্বমুধুর ভোজন গ্রহণ করিয়া তিন জেলার প্রাস্ত ঘুরিয়া মৈনপুরী জেলার অন্তর্গত মোটায় পৌছিলাম । এখন আমার উদেশ্ব ছিল কুরুকুলদীপের অস্তিম শিখা নিষিদ্ধ দেশে সওয়া বৎসর ∶ግግ বৎসরাজ উদয়নের রাজধানী কৌশাম্বী দর্শন। মোটা হইতে রাত্রে শিকোহাবাদের ট্রেনে রওয়ান হইয়া সকালে ভরবারী পৌছিলাম। নামিবামাত্র মুখ হাত ধুইয়া উদর-পূজার বাবস্থা করিলাম। আমার পভোস হষ্টয়া কৌশাম্বী যাইবার ইচ্ছা ছিল । শুনিলাম করারী পর্য্যস্ত এক্কায় যাওয়া যায়, পরে পদব্রজেক্ট উপায়। এক্কা জোগাড় করা হঠল । পথ কঁাচ কিন্তু এক্কার ঘোড়া সতেজ, সুতরাং নয় মাইল পথ আর কতই বা সময় লাগে ? করারীরও অধিকাংশ বাসিন্দা মুসলমান। অনেক চেষ্টার পর দুইটি মুসলমান বালক পথ দেখাইয়। যাইতে রাজী হইল। তাহাদের মনস্তুষ্টির জন্য কিছু পেয়ার। কিনিয়া দিলাম। গ্রাম হহঁতে বাহির হইবামাত্র মধ্যবয়স্ক এক সজ্জনের সঙ্গে দেখা হইল। ছিপছিপে-গড়ন, প্রসন্নমুখ ভদ্রলোক যেন প্রেম ও বাৎসল্যের প্রতিমূৰ্ত্তি। ইনি গ্রামের সম্রাস্ত মুসলমান বংশের লোক । দেখ হইবামাব বলিলেন, “শাহ সাহেব এত বেলায় কোথায় চলিয়াছেন ? আজ আমার গরিবথামায় বিরাজ করুন।" “ভাই, আজ আমায় পভোস পৌছাতে হবে।” “ফকিরের কাছে আজ ও কালের মধ্যে প্রভেদ কি ? ' আজ এ দীনের গৃহ পবিত্র করুন। আমাদের মত ভাগ্যহীনদের এরূপ সৌভাগ্য কতবার হয় ?” এরূপ প্রেমের বন্ধন এড়ানো মুস্কিল, কোন প্রকারে সেখান হইতে মুক্ত হইলাম। এদিকে সঙ্গী ছোকরা দুটিও ইতস্তত: করিতেছিল । অবস্থা বুঝিয় কিছু পয়সা দিয় বিদায় করিলাম। তাহারা ফিরিয়া নিশ্চয়ই শাহ সাহেবের গুণকীৰ্ত্তনে পঞ্চমুখ হইয়াছিল। করারী হস্ততে পভোস পাচ ক্রোশ পথ শুনিয়াছিলাম। বেলা একটা বাজিয়া গেল । ডিসেম্বরের দিমও ছোট । সুতরাং জোরে চলিতে লাগিলাম । চারি দিকের শু|মল ক্ষেত্ৰ সন্থাবর্ষণের ফলে আরও শু্যামল দেখাইতেছিল । অদূরে বাবুল গাছের সারির পাশে ভেড়া-ছাগল চরাইয় কুমার-কুমারীর দল ফিরিতেছিল । আঙুলপ্রমাণ শস্তের ক্ষেতে ভেড়া চরাইবার যুগ চলিয়া গিয়াছে কিন্তু রাখালের দল আজও বহু শতাব্দাব পুরাতন সেই প্রাচীন গীতি গাহিতেছে । ক্ষেতের মধ্যে রাস্ত হারাইয়া উহাদের কাছে