পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ ও তাহদের প্রিয় বস্তু, সেই ইউরোপীয় জাতি তাহ ভাবিয়া দেখে না, কল্পনা করে না, বিশ্বাস করে না । যেমন ইংরেজরা নিজেদের স্বাধীনতা খুব ভালবাসে, কিন্তু ভারতীয়দের স্বাধীনতা যে তাহাঁদের প্রাণের জিনিষ হইতে পারে, ইহা তাহাঁদের মনে স্থান পায় না । অশ্বেত জাতি যে কিরূপ স্বাধীনতাপ্রিয় হইতে পারে, হাবলীর সাত মাস ধরিয়া অনতিক্রান্ত শৌর্য্যের সহিত অসম যুদ্ধ করিয়া তাহ প্রমাণ করিয়াছে । কিন্তু, ভারতীয়েরা এখন যেমন দীর্ঘকাল ইংরেজদের অধীন থাকায় ইংরেজরা মনে করে, অধীন থাকাটাই আমাদের প্রকৃতিগত, তেমনই হবিসৗদিগকে যদি ইটালীয়ানরা দীর্ঘকাল অধীন রাখিতে পারে, তাহা হইলে তখন ইটালীয়ানরা দৃঢ় বিশ্বাস করিবে, যে, হাবসার স্বাধীনতাপ্রিয় নহে ও কোন কালে স্বাধীনতাপ্রিয় ছিল না । ভারতীয়ের দীর্ঘকাল অধীন আছে বটে ; কিন্তু তাহতে ৪ ধে তাঙ্গদের মহষাপ্রকৃতিগত স্বাধীনতাপ্রিয়তা লুপ্ত হয় নাই, তাহা গত মাসে সৰ্ব্বপ্রদেশের নানা স্থানে অন্তষ্ঠিত দুটি অচষ্টান হইতে বুঝা যায় । সুভাষচন্দ্র বস্তকে গবন্মেণ্ট প্রকাশু আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়া বন্দী করায় যে বহু স্থানে প্রতিবাদ-সভ হইয়া গিয়াছে, ব্যক্তিগত স্বাধীনত যে ভারতীয়দের প্রিয়, তাহা তাহfরই স্মারক । আর আবিসনিয়ার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশথ যে বহুসংখ্যক সভা হইয়া গিয়াছে, তাহ প্রমাণ করে, যে, ভারতীয়ের অস্থত: কিছু বুঝে পরাধীনতা কত বড় দুর্ভাগ্য । বিলাতে রাষ্ট্রীয় গুপ্ত কথা প্রকাশ এবারকার বিলাতী বজেটে যে ইন্‌কমৃ ট্যাক্স ও চায়ের উপর ট্যাক্স বাড়িবে, তাহ বজেট বাহির হইবার আগেই বাহির হইয় পড়ায় তদস্ত হইতেছে। ভারতে এরূপ কিছু হইলে, ভারতীয়েরা যে কিরূপ বিশ্বাসের অযোগ্য, তাহ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীরা সমস্ত পৃথিবীতে রটাইয়া দিত। ভারতবর্ষের অন্যতম ভূতপূৰ্ব্ব রাজস্বসচিব সরু গাই ফ্লটউড উইলসন অবসরগ্রহণের প্রাক্কালে ১৯১৩ সালে এক বক্তৃতায় বলেন, যে, তাহার একটি বজেটের একটি ট্যাক্সবৃদ্ধির সংবাদ প্রকাশ করিয়া দিলে প্রকাশকারী লক্ষ লক্ষ টাকা পাইতে পারিত, ৰিবিধ প্রসঙ্গ-বাঙালীর তৈরি নূতন ভাত سياسي وهو (یعN কিন্তু মোটা ও সামান্য বেতনের যে-সব ভারতীয় কৰ্ম্মচারী এই গোপনীয় সংবাদ জনিত, তাহারা কেহই উহা প্রকাশ করে নাই । “হঃস” “শুংস” নামক একটি হিন্দী সাময়িক পত্র আছে। তাহাতে ভারতীয় নানা ভাষার রচনা হিন্দীতে অনুবাদ করিয়া ছাপা হয় । কিন্তু বাংলার অনুবাদ বড়-একটা দেখিতে পাই না । বাংলা ভাষা ও সাহিত্য কি ভারতীয় সকল ভাষা ও সাহিত্য অপেক্ষ নিকট বিবেচিত হইয়াছে ? কলিকাত সাহিত্য-সম্মেলনে সভাপতির অভিভাষণ কলিকাতা সাহিত্য-সম্মেলনের মূল সভাপতি অধ্যাপক শযুক্ত জয়গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিভাষণের একটি সংক্ষিপ্ত তাৎপৰ্য্য দেখিয়াছি । তাহাতে তিনি বাংলা আধুনিক সাহিত্য ও সাহিত্যসেবীদিগের সম্বন্ধে বলেন – এ সাহিত্যের মধ্যে কোনও সত্য নাই, উহ। কেবল পাশ্চাত্য সাহিত্যের অনুকরণ । মহাযুদ্ধের পরে পাশ্চাত্য দেশে যে সাহিত্য সামাজিক, পরিবারিক ও যৌন সমস্তাকে কেন্দ্র করিয়া লিখিত, তাহ কেবল নগ্নরূপে যৌনতত্ত্বের নিলাজ আলোচন । এ-দেশের সাহিত্যকগণ তাহার অনুকরণ করিতেছেন ও তরলমতি বালকধালিকাদের হাতে তাহ তুলিয় দিতেছেন। এরূপে সাহিত্য নষ্ট হইবেই, সঙ্গে সঙ্গে দেশের ও সৰ্ব্বনাশ হইবে । “মুজাফফর আহমদ” বাজেয়াপ্ত শ্ৰীসৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রণীত “মুজাফফর আহমদ” নামক পুস্তিকা গবন্মেণ্ট বাজেয়াপ্ত করিয়াছেন । তাহা হইলে এমন অ-রাজভক্ত মুসলমানও আছেন, যাহার বিষয়ে লিখিত বহি বাজেয়াপ্ত হয় । বাঙালীর তৈরি নূতন তাত কুমিল্লার ঐযুক্ত নিখিলবন্ধু ভট্টাচাৰ্য্য এরূপ একটি তাত উদ্ভাবন ও প্রস্তুত করিয়াছেন মাহাতে একই সময়ে একাধিক বস্ত্র বয়ন করা যায় !