পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশষাঢ় জটিল ব্যাপার ●ßማለ "া ।” বাড়ীর সব ভাল ? প্রমীলা নীরবে ঘাড় নাছিল। আমি ঘরময় একবার ঘুরিয়া বেড়াইয়া বলিলাম, ‘আজ বিকেলে আমায় জংশনে যেতে হবে । রাত্রি এগারোটার গাড়ীতে ফিরব ।’ ‘বেশ ।” ‘রাত্রে একলাটি বাড়ীতে থাকবে, ভয় করবে না ত ? ‘ভয় ! ঈষৎ ভ্ৰ তুলিয়া বলিল, “আমার ভয় করে না।’ “ভাল । ঘর হইতে চলিয়া আসিলাম । হঠাৎ এত গাম্ভায্য কেন ? যা হোক, আজ রাষ্টে গাম্ভীর্যের পরীক্ষা হইবে । বাত্রি সাড়ে দশটার সময় বন্ধুর গৃহে থানিকট ছাই লষ্টয়া মুখে মাথিয় ফেলিলাম ; তার পর আলখাল্লা ও জট পরিধান করিয়া আয়নায় নিজেকে পরিদর্শন করিলাম । পঞ্চ সপ্রশংসভাবে বলিলেন, "খাসা হয়েছে, কার সাধ্যি ধরে : মি দাগাবাজ ভণ্ডসন্ন্যাসী নও। —এক ছিলিম গাজ টেনে নিলে হ’ত না ? 'না, অভ্যাস নেই--- বলিয়া বাহির হইলাম । নিজের বাড়ীর সম্মুখে উপস্থিত হইলাম। দরজা বন্ধ । পিছনের পাচিল ডিঙাইয়া ভিতরে প্রবেশ করিলাম । শয়নঘরে আলে জলিতেছে। দরজার বাহিব হইতে উকি মারিয়া দেখিলাম, প্রমীলা আলোর সম্মুখে ইঞ্জি-চেয়ারে বসিয়া নিবিষ্ট মনে পশমের গেঞ্জি বুনিতেছে । হঠাৎ ঘরে প্রবেশ করিয়া বিকৃত কণ্ঠে বলিলাম, ‘হর হর মহাদেও ' প্রমীলার হাত হইতে শেলাই পড়িয়া গেল, সে ধড়মড় করিয়া উঠিয়া চমকিত কণ্ঠে বলিল, কে ? আমি খ্যাক খ্যাক করিয়া হাসিয়া বলিলাম, বম্ শঙ্কর । জয় চামুণ্ডে !" প্রমীলা বিস্ফারিত স্থির দৃষ্টিতে আমার পানে চাহিয়া দাড়াইয়া রহিল, ভয় পাইয়া পলাইবার কোনও চেষ্টা করিল না । তার পর সশব্দে নিশ্বাস টানিয়া বুকের উপর হাত রাখিল । ‘সুরেশদ, তুমি এ বেশে কেন ? ভ্যাবাচাক খাইয় গেলাম। সুরেশদা ! আমি পাকা সন্ন্যাসী, আমাকে সুরেশদ বলে কেন ? প্রমীল স্বলিতস্বরে বলিল, “সুরেশদ, আমি তোমাকে চিনতে পেরেছি। কিন্তু তুমি কেন এলে –তোমাকে আমি বলেছিলুম আর আমার কাছে এস না, তবু কেন তুমি এখানে এলে ? মাথার মধ্যে বিদ্যুৎ থেলিয়া গেল । স্বরেশ প্রমীলার বাপের বাড়ীর বন্ধু, বোধ হয় একটু সম্পর্কও আছে । লোকটাকে আমি, গোড়া হইতেই অপছন্দ করিতাম ; প্রমীলার সঙ্গে বড় বেশী ঘনিষ্ঠতা করিত । কিন্তু সে ঘনিষ্ঠত যে এত দূর— ভাঙা গলায় বলিলাম, "প্রমীলা—আমি—’ প্রমীলা দুই মুঠি শক্ত করিয়া তীক্ষু অনুচ্চ স্বরে বলিল, ‘না না, তুমি যাও সুরেশদ, ইহজন্মে আমাদের মধ্যে সব সম্পর্ক ঘুচে গেছে । আগেকার কথা ভুলে যাও । এখন আর আমি তোমার কাছে যেতে পারব না ।” দাতে দাত চাপিয়া বলিলাম, "প্রমীলা, এক দিনের জন্যে৪ কি তুমি আমাকে ভাল—” ‘বাসতুম । এখনও বাসি । কিন্তু তুমি যাও স্বরেশদ, দোহাই তোমার—এখনই বাড়ীর মালিক এসে পড়বে— সৰ্ব্বনাশ হবে । আমি তাহার কাছে ঘেষিয়া গেলাম কিন্তু সে সরিয়া গেল না ; উত্তেজন-অধীর স্বরে বলিল, “যাবে না ? আমার গালে চূণকালি না মাখিয়ে তুমি যাবে না ? তোমার পায়ে পড়ি স্বরেশদ, এখনই সে এসে পড়বে। তবু দাড়িয়ে রইলে ? আচ্ছা, এবার যাও—’ সহসা সে আমার ভস্মলিপ্ত অধরে চুম্বন করিল—‘এস । আমার হাত ধরিয়া ঘরের বাহিরে টানিয়া লইয়। চলিল । আমি হতভম্বের মত চলিলাম । খিড়কির দ্বার খুলিয়া দিয়া প্রমীলা বলিল, আর কথনও এমন পাগলামি ক’রে না । যদি থাকতে না পার, চিঠি দিও-ও আমার চিঠি পড়ে না। কিন্তু এমন ভাবে আর কখনও আমার কাছে এস না । মনে রেখ, যত দূরেই থাকি আমি তোমারই, আর কারুর নয় । অন্ধকারে তাহার মুখ দেখিতে পাইলাম না, কিন্তু মনে হইল সে উচ্ছ্বসিত কান্না চাপিবার চেষ্টা করিতেছে। معمانتیسیسم .