পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬ পেছনে থাকে । তেনার সামনেই তেনার স্বামীকে আমি খুন ক’রতে পারব না হুজুর। চন্দ্র হালদার উত্তরে গম্ভীর কণ্ঠে বলিয়ছিল, বেশ । কাল-পরশুর ভেতরে তাহলে একবার নিতান্তই সদর আদালতে যেতে হয় দেখছি । হুজুরের পায়ে মাথা ঠুকিয়া পরম বলিয়াছিল, ওইটি করবেন না হুজুর—ছেলেমেয়ে নিয়ে দাড়াই কোথা ! জমিটুকু গেলে খাব কোথা থেকে ! অবশেষে হুজুরের ধমকানি ও আশ্বাসে আজই এই দুৰ্য্যোগের রাত্রে স্বযোগ বুঝিয়া নিকাশ করিতে আসিয়াছিল । চন্দ্র হালদার যুক্তি দিয়াছিল, থলেয় পূরে একদম কালি নগরের গাঙে–বুঝলি ? উমেশ জানালার কাছে আসিয়া দেখিল – সত্যই কে যেন মাথায় কাপড় জড়াইয়া তাকড় গাছটার তলে দাড়াইয়ু । বুকটা তাহার একটু কঁাপিয় উঠিল, গলাখ কারি দিয়া বলিল, ওখানে কে হে ? কোন উত্তর আসিল না—যে দাড়াইয়াছিল সে ধীরে ধীরে থানায় নামিয় অদৃপ্ত হইয়া গেল । পরম তখন দ্রুত পদে চলিয়া বাইতে ধাইতে ভাবিতেছিল, ধা হয় হোক—আশ্রয় না পাইলে এই মল্লিকদের আশ্রয়েই ন-হয় আসিয়া উঠিবে—জীবনে সে খুন করে নাই, করিতেও পরিবে না । তাহার বার-বার মনে পড়িতেছিল, যেদিন সে ক্ষুধিত শিশুপুত্রদের লইয়া এই মল্লিক-বাড়িতেই আহার করিয়ু গিয়াছিল সেদিনকার মণিমালার দয়ার্দ্র সুন্দর মুখখানি ভাবিল, তাহারই সে সৰ্ব্বনাশ করিবে কি করিয়া ! পরম ঠিক এই রকম সব কথা ভাবিয়া আর মণিমালাকে দেখিয়া পূৰ্ব্বে বহু দিনই অকৃতকাৰ্য্য হইয়া ফিরিয়া গিয়াছে । আজ যাইতে যাইতে ভাবিল, দরকার নাই, একদিন মুখোমুথি গিয়া মণি-ঠাকরুণের পায়ের তলায় এক্ট লাঠি দিয়া আসিব । পরম থে-পথে অদৃগু হইয় গেল সেই দিকে উমেশ একদুষ্টে তাকাইয় ছিল । এমন সময় সাবিী দরজায় ঘা দিয় ধ্যাকুল কণ্ঠে ডাকিল, ও উমা- উমা ! বেরিয়ে আয় মা ভাই একবার-—ময়না যেন কেমন ক’রছে । কিছুতেই শুষ্টয়ে স্বাগতে পারছি লে যে ! - প্রবাসী ్సvరిgwరీ উমেশ দরজা খুলিয়। বাহির হইয়া আসিল—বলিল, কি হ’ল, কই চল দেখি বৌদি ? ময়নাকে দেখিয়া আসিয়া উমেশ খাতা খুজিতে খুজিতে বলিল, আমি এখন শশী ডাক্তারের কাছে চললাম বৌদি - যত টাকা লাগে তাকে নিয়ে আসছি। মণিমালা কোথায় ছিল ছুটিয়া আসিয়া উমেশের দুইটা পা জড়াইয় ধরিয়া দৃঢ় কণ্ঠে বলিল—ন, কিছুতেই তুমি যেতে পাবে না। নিজের চোখে সব দেখেও কি তোমার বিশ্বাস হয় ন কিছু ! আমি সব জেনে-গুনে কোন মন্দ ঘটতে দেল না। কিছুতেই তুমি যেতে পাবে না। সাবিত্রী চঞ্চল হইয়| উঠিয়াছিল, আৰ্ত্তকল্পে বলিল, ছেড়ে দে মণি—তোর পায়ে পড়ি, একে যেতে দে । ময়না যে আমার মরল রে । ৪রে সে যেদিন ডুবে মরতে যাচ্ছিল সেদিন তুষ্ট-ই ত তাকে বাঁচিয়েছিলি –আজি তাকে তুঠ ৮ ভাই । তাকে যে তুষ্ট এত ভালবাসাতস, সে কি সব মিথ্যে রে । মণিমাল। কিন্তু তেমনই উমেশের পায়েব উপরে মুখ গুজিয়া পড়িয়া রহিল । কিছুদিন পূর্বের একটা ঘটনা তার চোখের সম্মুখে ভাসিয়া উঠিভেছিল : লোভী মেয়ে ময়না পুকুরের মাঝখানে একটা ডাব ভাসিতে দেখিয়া সেটাকে সংগ্ৰহ করিলার অভিপ্রায়ে জলে ঝাপতিয়া পড়িাছে। গভীর জলে হাবুডুবু থাইতেছিল এমন সময়ে সে কলসীতে ভর দিয়া ভাসিয়া গিয় তাহাকে ট'নিয়া আনিতেছে । সেদিন সে তাঙ্গকে মা উদ্ধার করিলেই ত পারিত • আজ সেই মেয়েটাই ত মরিতে বসিয়াছে, অথচ কেন সে উমেশকে ছাড়িয়া দিতে পারিতেছে ন! ! যাইতে দেওয়া উচিত, কিন্তু চন্দ্র-হালদারের মুখের কথা কয়ট—যাহ কলা-ঘুম হইয় তাহার কানে আসিয়াছিল তাই যেন অস্তরে এখন প্রতিধ্বনিত হইয়া উঠিল। স্পষ্টই সে দেপিতে পাইল, যেন কাহার ভীষণ লাঠির ঘায়ে মুতপ্রায় উমেশকে কঙ্কার দাওয়ায় আনিয়া ফেলিল বধু শিহরিয়া উঠি উমেশের পা ছুইটা আরও নিবিড় ভাবে জড়াইয়ু ধয়িল। বিত্রত, বিমূঢ় উমেশ ছাত-হাতে নিশ্চল প্রস্তরমূর্তির মত দাড়াইয়া । এমন সময় বাহিরে অধরের উচ্চকণ্ঠস্বর শোমা গেল, ও উমেশ-উম !--