পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অtষাঢ় কলকাতায় মাস্থ্য স্বতরাং বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ নদনদী জুলাকীর্ণ বিরাট ব্যাপ্ত প্রকৃতি, ঘনচ্ছায়াসমাচ্ছন্ন শাস্তঐ গ্রাম্যপ্রকৃতি বা উচ্ছসিত স্নেহব্যাকুল বাঙালীর মানবপ্রকৃতি তার চিত্তকে গভীরভাবে আকর্ষণ করবার কোন অবকাশ পায় নি। সেইজন্যে বিদেশে যাওয়া তার পক্ষে প্রবাসে যাওয়া ছিল না এবং দেশের মাটি পরিত্যাগ করে সমুদ্রে যেদিন সে প্রথম ঢেউয়ের দোলায় তার চলমান রক্তপ্রবাহে জীবধান্ত্রী ধরণীর হৃৎস্পন্দন স্পষ্ট অনুভব করেছিল, সেদিন অতিমাত্র বিরহ-ব্যাকুলতায় তার চিত্ত অবসন্ন হয়ে পড়ে নি । তার দ্রুতধাবনরত কলহান্তমুখরিত চঞ্চলতার মধ্যে পরিত্যক্ত পরিজনের সজলবেদনার ছায়াপাত হবার সম্ভাবন ছিল না । এমনি করে পিতাপুরীতে নূতন নূতন দর্শনীয় ও আহরণীয়ের মাদকতায় মশগুল হয়ে বছর-দুয়েক বেশ এক রকম কাটিয়ে দিলে। তার পরই এল তাদের জীবনে বিপর্যায়ের দুরতিক্রম্য দুঃপের ইতিহাস । সংক্ষেপে বলতে গেলে, ইদানীং ভূপতিনাথ একটি অতুচ্চ শ্রেণীর ইংরেজ রমণীর সঙ্গে এমনভাবে মিশতে আরম্ভ করেছিলেন, যাতে ঘরে কন্যা ও প্রতিষ্ঠিত গৃহবাবস্থার মধ্যে বিরোধ ও বিপৰ্য্যয় না এনে তার উপায় ছিল না। প্রথম প্রথম ব্যাপারট। তিনি যথেষ্ট গোপনে রেখেছিলেন । কিন্তু এ নেশায় যাকে ধরে, তাল সামলানো তার পক্ষে দুষ্কর হয়ে ওঠে । পরে ব্যাপারটা কিছু অার চাপা রইল না। মাথাওয়া তার অত্যন্ত বেড়ে গেল। রাত্রে বাড়ী আসা প্রায় বন্ধ হয়ে এল এবং একদা গভীর নিশীথে সেই ইংরেজ-নন্দিনীকে নিয়ে তিনি এসে উঠলেন একেবারে তার কন্যার নিরবলম্বপ্রায় ঘরকরণার অন্তঃপুরে । অতি শোচনীয় হয়ে উঠল জীবনযাত্র। ক্লারা তার জীবনে অর্থের মুখ বড় একটা দেখে নি । একেবারে এতগুলি অর্থের অধিকারিণী হ'য়ে ব্যয় এবং অপব্যয়ের মাত্র রক্ষা করা তার পক্ষে দুরূহ হয়ে উঠল। এমনি করে তাদের সংসারে ক্রমে অর্থেরও অনটন ঘটে উঠতে লাগল। অত্যধিক অত্যাচারে ভূপতিনাথের শরীর ভেঙে আসছিল। উপরি কিছু আয় করবার ইচ্ছা বা শক্তিতে তখন তার ভাটার টান লেগেছে। পাৰ্ব্বতী 84 ཡཆས་མན་ཊི༔ মানুষের মন \®ርግ গোপনে চেষ্টা করে জয় বেতনের একটি শিক্ষয়িত্রীর পদ ংগ্রহ করেছিল । কিন্তু এই ভাঙনধরা সংসারে সে কতটুকুই বা ! এমনি দুর্দশার অবস্থায় একদিন ডাক্তারে আবিষ্কার করলে যে তার পিতা ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। ক্লারা আর বেশী অপেক্ষা করে নি। একদিন সকলের অজ্ঞাতে সে তার গহনাপত্র ও পোষাক-পরিচ্ছদ নিয়ে উধাও হ’ল । দুদিনে পাৰ্ব্বতীর এই একটিমাত্র সম্বন। এর পরের ইতিহাস বেশী নয়। নিদারুণ যন্ত্রণ ভোগ করে ভূপতি একদিন অমৃতপ্ত চিত্তে তার কন্যার কাছে ক্ষমাভিক্ষা করে ইহসংসার থেকে মুক্তিলাভ করলেন। বিদেশে বন্ধুজনহীন কপৰ্দকশূন্ত হয়ে পাৰ্ব্বতী সংসারসমুদ্রে পাড়ি দিল । পিতার ইংরেজ-গ্ৰীতির পরিণামে ইংরেজ জাতিটার উপরেই তার যেন একটা বিতৃষ্ণা জন্মে গিয়েছিল। সে পারতপক্ষে কোন লোকের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় করত না। আপিসের কাজ সে মন দিয়ে করত এবং অবসর সময়ে লাইব্রেরীতে গিয়ে পড়াশুনা করত। বছরখানেক হ'ল সে একটা বড় ফামে ভাল কাজ পেয়েছিল। এইখানেই ইভিখ ছিল তার এক জন য়্যাসিষ্টাণ্ট, ইডিথের অনুরোধে সে তাদের বাড়ি গিয়ে যা দেখলে তাতে আর সে স্থির থাকৃতে পারলে না। অন্তরের অন্তস্তলে পিতার প্রতি তার বিদ্রোহান্বিত চিত্ত তার মায়ের প্রিয় বাংলা ভাষা ও বাঙালীর জন্ত হয়ত ভূষিতই ছিল। লাইব্রেরীতে তার প্রধান পাঠ্য ছিল বাংলা। আর আজ সেই বাঙালী একটি চারুদৰ্শন অসহায় রোগবিমূঢ় যুবককে দেখে তার সেবাপরায়ণ হৃদয় মুহূৰ্ত্তে উদ্বেল হয়ে উঠল। সে স্বেচ্ছায় ও স্বচ্ছন্দচিত্তে তার সমস্ত ভার আপনার দুৰ্ব্বল স্বন্ধে তুলে নিলে এবং পরদিনই বিশেষ অনুসন্ধানে নূতন একটি স্থয়েট ভাড়া ক'রে তাকে স্বামী বলে পরিচয় দিয়ে এম্বুলেনস্ ডেকে শচীনকে সেখানে নিয়ে গেল । দিনের পর দিন সে প্রায় একাকী এই দুরন্ত রোগের পরিচর্ধ্যায় নিজের সমস্ত সঞ্চিত বিত্ত ও অনন্যসাধারণ স্বাস্থ্য ও নৈপুণ্য নিযুক্ত করেছে। তবু এই অসহায় সংগ্রামের مع عمه، يت. - --> ".تیم