পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Nごい。 প্রবাসী ১৩৪৩ ক্ষীণ শব্দটুকুও ক্ষীণতর হয়ে আসে, ক্লাস্ত মালতী গভীর স্বযুপ্তির আশ্রয়ে আপনাকে সমর্পণ করে মেঝের উপর নিশ্চিস্ত আরামে এলিয়ে পড়ে থাকে। কোন এক সময় পাঠের কোন একটা বিরতির অবসরে কমলের মুখের দিকে চেয়ে নন্দলাল তার পরিপূর্ণ অন্তমনস্ক দৃষ্টি লক্ষ্য করে সন্দেহ করে যে সে মোটেই তার পাঠের প্রতি নিবিষ্টচিত্ত নেই। বলে, “বড় রাত হয়ে গেছে, না ? বড় ক্লাস্ত দেখাচ্ছে তোমায় । শুয়ে পড় । আরও অনেক ক্ষণ অাগে থামা উচিত ছিল, কিন্তু এত চমৎকার যে থামা যায় না। সত্যি ভারি অন্যায় হয়ে গেছে ।” নন্দলালকে অনুতপ্ত দেখে সে বলে, “ন না, রাত্রে ত আমার ঘুম হয় না। তার চেয়ে আপনি কষ্ট করে পড়ে শোনাচ্ছেন এ ত ভালই হচ্ছে।” নন্দলাল পড়বে কি পড়বে না এই দ্বিধায় পড়ে একটু ইতস্ততঃ ক'রে উঠে পড়ে ; বলে, “আজ থাকৃ। অনেক রাত হয়ে গেছে। একটু ঘুমতে চেষ্টা কর।” ব’লে, উঠে মালতীকে ডাকে, “ওগো ওঠে । মেঝেতেই পড়ে রাত কাটাবে না কি ?” ডাক শুনে মালতী ধড়মড়িয়ে উঠে পড়ে—তার নিদ্রাঞ্জড়িত মস্তিস্কে একটা দুঃসংবাদের আশঙ্ক৷ জেগে ওঠে—“খোকন !” “এই ত বিছানার উপর । তুমি উঠে শোও । আমি যাই । সিরাপটা দিও শোবার সময় । আর ঘুম না হ'লে একটা পুরিয়ার আধখানা। শুনলে ? না এখনও ঘুম ছাড়ে নি ? উঃ, কি ঘুমুতেই পার, বাবা ?” মালতীর ঘুমজড়ানো চোখে মুখে স্মিত সলঙ্গ আলগুজড়িত হাসি ফুটে ওঠে। চোখ রগড়তে রগড়াতে বলে, “এই দিচ্ছি ওষুধ ।” ক্রমশ বঙ্গে মাৎস্যন্ত্যায় শ্রীঅদ্রীশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় খ্ৰীষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীর কথা। চূণ-প্লাবনে ও গৃহবিবাদে সমুদ্রগুপ্তের বিশাল সাম্রাজ্য বাত্যাবিক্ষুব্ধ উৰ্ম্মিরাশির সম্মুখে তৃণের ন্তায় ভাসিয়া গিয়াছে । ত্রিযাম রজনী কঠিন ভূমিশধ্যায় শয়ন করিয়াও সম্রাটু স্কন্দগুপ্ত কেবলমাত্র কিয়ৎকালের জন্য চঞ্চল রাজলক্ষ্মীকে স্বীয় আসনে স্থাপিত করিতে পারিয়াছিলেন । কিন্তু যেদিন ভারতের কোন এক অজ্ঞাত স্থানে, প্রকৃত শেষ গুপ্ত-সম্রাট নিজের ক্লাস্ত দেহভার বহনে অক্ষম হইয়া অস্তিম-শয্যা রচনা করিয়াছিলেন সেদিন আত্মকলহে বিব্রত মাগধগণ সাম্রাজ্যের তোরণ-রক্ষায় অপারগ হইয়াছিল। তখন গান্ধারের ( বর্তমান পেশাবর জেলা ও আফগানিস্থানের কিয়দংশ ) দুৰ্গম গিরিবত্ম হইতে বাহির হইয়া খৰ্ব্বাকার, বৃহৎশীর্ষ, ক্ষুদ্রনাসিক ও শ্বেতকায় হুণ অশ্বারোহিগণ আর্য্যাবর্তে রাষ্ট্রবিপ্লব উপস্থিত করিয়াছিল। দেবতার মন্দির ধ্বংস করিয়া, অধিষ্ঠিত দেবমূৰ্ত্তি লাঞ্চিত করিয়া, গ্রামের পর গ্রাম, নগরের পর নগর ভস্মীভূত করিয়া, নিরস্ত্র নিরপরাধ অধিবাসীদিগকে হত্যা করিয়া হুণগণ বর্বরতার পরাকাষ্ঠী প্রদর্শন করে । রমণী ও শিশু, বৃদ্ধ ও ব্রাহ্মণের আর্ন্ত হাহাকারে উত্তরাপথের সুনীল আকাশ বিদীর্ণপ্রায় হইয়াছিল। বৰ্ব্বর তৃণের বিজয়োল্লাস কিন্তু বেশী দিন স্থায়ী হয় নাই । ভারতবর্যের তথনও প্রাণ ছিল তাই বার-বার পরাজিত হইয়া আৰ্য্যাবৰ্ত্তের আধিপত্যের আশা চিরদিনের জন্ম বিসর্জন দিয়া, কুণগণ হিমমণ্ডিত উত্তরদেশীয় পাৰ্ব্বত। উপত্যকায়, কপিশায় এবং বাহনীকে পলায়ন করিতে বাধা হইয়াছিল । গুপ্ত-সাম্রাজ্যের গৌরবের অবসানের সঙ্গে সঙ্গেই সমৰ্থ উত্তর-ভারত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত হইয়া গিয়াছিল পৌরাষ্ট্রে বলভীর মৈত্রক রাজগণ স্বাধীনভাবে রাজত্ব আর