পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশষাঢ় বর্তমান গোয়ালভিট গ্রাম এবং এই গ্রামের মধ্যে মন্দিরসীমার কতকাংশ অবস্থিত । মন্দির-খননের পর খ্ৰীষ্টীয় পঞ্চম ও যষ্ঠ শতাব্দীর ভাস্কৰ্য্য ও ইষ্টক ভিত্তিগাত্রে লক্ষিত হইয়াছে। অনুমান হয় যে ইহার পরে মাংস্তন্যায়হেতু এই ধৰ্ম্মানুষ্ঠানটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হইলে খ্ৰীষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর শেষ ভাগে কিংবা নবম শতাব্দীর প্রারম্ভে উত্তরাপথ-বিজয়ী পালংশের দ্বিতীয় সম্রাটু ধৰ্ম্মপাল কর্তৃক পাহাড়পুরের মন্দির ও চতুষ্পাশ্বস্থ বিহার নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। নালন্দায় আবিষ্কৃত খ্ৰীষ্টীয় একাদশ শতাব্দীর একটি শিলালিপি হইতে জানা যায় যে বিপুলঐমিত্র নামক এক বৌদ্ধভিক্ষু সোমপুরের তারাদেবীর এক মন্দির নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন । প্রধান মন্দিরের নিকট সত্যপীরের ভিটায় ক্ষুদ্রকায় এক মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে আবিষ্কৃত তারা-মুৰ্বির এক মৃন্ময়ফলক প্রমাণ করে যে এই মন্দিরটি বোধ হয় বিপুল শ্ৰমিত্র কত্ত্বক নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল । তাহার পর খ্ৰীষ্টীয় জয়োদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে যখন তুকপ্লিাবনে বাঙালীর স্বাধীনতা, সভ্যতা ও কৃষ্টি তৃণখণ্ডের মত ভাসিয় গেল তখনই বোধ হয় সোমপুরের মহাবিহার চিরদিনের মত ধ্বংসপ্রাপ্ত হইয়াছিল । পরে কালক্রমে জনশূন্ত ধৰ্ম্মপাল মহাবিহার গুল্মাচ্ছাদিত মাটির ইষ্টকরাশির টিলায় পরিণতি লাভ করে । g বগুড়া জেলার অন্তর্গত মহাস্থান বা মহাস্থানগড়ের বিস্তীর্ণ ধ্বংসাবশেষ এখন বঙ্গদেশের একটি শ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক সম্পদ বলিয়া পরিগণিত হইয়াছে। ১৯৩১ সালে বারুফকির নামক এক জন মুসলমান কৃষক মহাস্থানগড়ে একটি ক্ষুদ্র লিপিসমন্বিত ইষ্টকথগু কুড়াইয়া পায়। এই লিপি হইতে জানিতে পারা গিয়াছে যে মৌর্য্য যুগের কোন নরপতি পুণ্ডনগরের মহামাত্রকে আজ্ঞা করিতেছেন যে দুর্ভিক্ষপীড়িত সংবঙ্গীয়দের যেন অর্থ ও ধান্তের দ্বারা সাহায্য করা হয় ইত্যাদি । ইহা হইতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে বর্তমান মহাস্থানগড়টি প্রাচীন পুগুনগর। ১৯২৮-২৯ সালে শ্ৰীযুক্ত কাশীনাথ দীক্ষিত মহাস্থানগড়ের অন্তর্গত বৈরাগীর ভিটা নামক একটি মৃন্ময় শু,প খনন করিতে আরম্ভ করেন। খননের ফলে দুইটি বৃহৎ মন্দিরের ভগ্নাবশেষ আবিষ্কৃত হয়। দুইটি মন্দির একই ۹-سنا-ون 8 বঙ্গে মাৎস্যন্ত্যায় Negh স্থানে দুই বিভিন্ন যুগে নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। খ্ৰীষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর মধ্যভাগে গোপালদেব যে রাজ্যের স্বচনা করিয়া প্রাচীন পুণ্ড বন্ধন নগরে জলনিষ্কাশনের ব্যবস্থা ছিলেন তাহা তাহার পুত্র ধৰ্ম্মপালের সময় এক বিস্তীর্ণ সাম্রাজ্যে পরিণত হইয়াছিল । কিন্তু ধৰ্ম্মপালদেবের বংশধরগণের অক্ষমতার জন্য ও অন্ত নানা কারণে এই সাম্রাজ্য শীঘ্রই অধঃপতনের পিচ্ছিল পথে অগ্রসর হয় । খ্ৰীষ্টীয় একাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে প্রথম মহীপালদেব কিয়ৎকালের জন্য পিতৃপুরুষের লুপ্ত গৌরব পুনরুদ্ধার করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন । এই দুই বিভিন্ন সমন্বকে প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিকগণ প্রথম ও দ্বিতীয় পাল-যুগ আখ্যায় ভূষিত করিয়া থাকেন । বৈরাগীর ভিটায়ু প্রাচীনতর মন্দিরটি প্রথম পাল-যুগের এবং দৈর্ঘ্যে ৯৮ ফুট ও প্রস্থে ৪২ ফুট ; ইহা ব্যতীত এই মন্দিরটির বিষয়ে আমাদের আর বিশেষ কিছু জানিবার নাই। তাহার প্রধান কারণ এই সে দ্বিতীয় পাল-যুগে ইহার ধ্বংসাবশেষের উপর আর একটি মন্দির নিৰ্ম্মিত হওয়ায় ইহার অধিকাংশই চাপ পড়িয়া গিয়াছে । প্রথম পাল-যুগের মন্দিরের ভিত্তি খননের সময় প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে যে মন্দির-নিৰ্ম্মাণকারিগণ আরও একটি প্রাচীন দেবালয়ের ধ্বংসাবশেষের উপর তাহদের মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করিয়াছিলেন । এই অকুমানের কারণ এই যে, পূজার জল নিষ্কাশনের জন্ত মন্দিরের গর্ভগৃহের তলদেশ হইতে একটি পয়ঃপ্রণালী প্রয়োজন হইয়াছিল। এই পয়ঃপ্রণালীর জন্য দুইটি পাষাণ-নিৰ্ম্মিত স্তম্ভ ব্যবহৃত হইয়াছে । জল-নিষ্কাশনের জন্য স্তম্ভের মধ্যভাগে আট ইঞ্চি চওড়া