পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশষাঢ় কলিক্ষণত বিশ্ববিদ্যালয় ও মুসলমান Boవ তবে সেই কবিরহ ; আর যদি কেহ আরুষ্ট হইয়া থাকেন, তবে সেও সেই কবির অমর অবদানের প্রতি । হিন্দুর পক্ষে ওমর থৈয়াম বা মিলটনের প্রতি, অথবা খ্ৰীষ্টানের পক্ষে কালিদাসের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া যদি অন্যায় না হয়, তবে মুসলমানের পক্ষেও ভিন্নধৰ্ম্মী কবি ও লেখকের প্রতি সেইরূপ আকৃষ্ট হওয়া কোন মতেই অন্যায় হইবে না। রসপিপাসু পাঠক আপন আপন রুচি ও শিক্ষা অনুসারে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন কবির ভক্ত হইয় থাকেন। কাহারও নিকট শেক্সপীয়র আদর্শ কবি, কাহারও আদর্শ শেলী, কাহারও হাফেজ, কাহারও কালিদাস, ইত্যাদি। অপর দেশীয় ও অপর সম্প্রদায়ের কবিকে নিজের আদর্শ বলিয় গ্রহণ করিলেই কি সে কাফের’ হইয়। যাইবে ? দড়ি কামঙ্গলে, গানবাজন! শুনিলে ‘কাফের’ হইবে এই ফতোয় যাহারা দিয়া থাকেন তাহদের নিকট সবই সহব । কিন্তু আমরা ইংরেজী-শিক্ষিত মুসলমানদের নিকট নিবেদন জনাইতেছি, তোমাদেরও কি এই মত ? এইরূপ ধৰ্ম্ম স্কভার দ্বারা তোমরাও কি চালিত হইবে ? আমাদের মনে হয়, অন্য দেশের ও সম্প্রদায়ের সংস্কৃতির সঠিত পরিচিত শুঠলে, অথবা তাঙ্গর কোনও অংশ ভাল বলিয় গ্রহণ করিলে সুতরাং বাংলা ভাষার বিভিন্ন লেখকের সহিত পরিচিত হইলে--এমন কি কাহারও ভক্ত হইয়া পঢ়িলেও - তাহাতে মুসলমানদের ভয়ের কোনক্ট ধৰ্ম্মনাশের কোনই ভয় থাকে না । কারণ নাই । ইগতে তাহদের সংস্কৃতি ও বিপন্ন হইবে না । বরং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভাবধাবার সংস্পর্শে আসিলে তাহাদের নিজস্ব সংস্কৃতি পরিপূর্ণতা লাভ করিবে । ইংরেজী সাহিত্য অথবা অন্য কোন ইউরোপীয় সাহিত্য করিতে হইলে বাইবেল ও রোমগ্রাসের পৌৰাণিক কাহিনী সম্বন্ধে বিশেষ জ্ঞান থাকা দরকার । কারণ বড় বড় কবি ও সাহিত্যিকগণ এই সব কাহিনী হইতে বাছাই বাছাই উপমাগুলি নিজেদের ভালকুপে আয়" রচনার মধ্যে এমন কৌশলে মিলাইয়া দিয়াছেন যে, সেই সব গল্প সম্বন্ধে ভালরূপ জ্ঞান ন! থাকিলে কেবল পাদটীকার উপর নির্ভর করিয়া সম্যকৃরূপে বস আস্বাদন করা যায় না। অভিধানের সাহায্যে অর্থোদ্ধার করিতে গেলে একটা কিছু মানে পাওয়া যাইবে সত্য, কিন্তু তাহাতে কবির সহিত এক হইয় রসাস্বাদন করা মোটেই সম্ভব হইবে না। শেক্সপীয়র, মিণ্টন, এডিসন, কীটস, শেলী, কালাইল, রাসকিন, টেনিসন, ব্রাউনিং প্রভৃতি কবি ও লেখকগণ র্তাহাদের রচনার মধ্যে মুক্তহস্তে বাইবেল ও পৌরাণিক উপমা ছড়াইয়া দিয়াছেন—সেই সব ভালরূপে না জানিলে কেহই র্তাহাদের রচনা পডিয়া প্রকৃত আনন্দ পাইবে না। উদাহরণস্বরূপ, fośīz. “To a Virtuous 1ady’ নামক একটি অমূল্য সনেটের নাম উল্লেখ করা যাইতে পারে। এই সনেটের প্রায় প্রতি পঃক্তিতে কবিবর বাইবেলের প্রথম হইতে শেষ পয্যন্ত বহু বিষয় ভরিয়া দিয়াছেন । তিনি ‘প্যারাডাইজ লষ্ট","প্যারাডাইজ রিগেণ্ড’ এবং ‘কোমাস’-এ রোম গ্রীসের কত উপকথা প্রয়োগ করিয়াছেন । সৌন্দর্ঘ্যের কবি *šo 4f&so o, to “Ode to Nightingale', “z: “Ode on a Grecian Urn' so assé Koforo ইষ্টলে বাইবেল ও পৌরাণিক কাহিনী সম্বন্ধে জ্ঞান থাকা একাস্থ দরকার। বোধ হয় এই কারণে বিদ্যালয়ে পূৰ্ব্বে Legends of Greece and Rome vigta o go তাহা আর পড়ান পদে পদে সংস্কৃতি-বিলোপের ভয় দেখাইলে উৎকৃষ্ট সাহিত্য হইতে জাতি চিরকালের তরে বঞ্চিত হইয় থাকিবে । হয় ন} । বাংলা ভাষা ভালরূপে আয়ুক্ত করিতে হইলে হিন্দুদের পৌরাণিক কাহিনী সম্বন্ধে কিছু জ্ঞান দরকার | কারণ বাংলা-সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ লেপকগণ অধিকাংশ হিন্দু । তাহার প্রাচীন সাহিত্য ও পৌরাণিক কাহিনী হইতে, ইউরোপীয় লেখকগণের মত, বহু উপম নিজ নিজ রচনার মধ্যে সন্নিবিষ্ট করিয়াছেন । এই সব গল্প কাহিনী ন জানিলে তাঙ্গদের রচন বুঝিতে কষ্ট হইবে । রামচন্দ্রের প্রতি আক্লষ্ট থাকা হইবার জন্তু আমর: রামায়ণ • পল্লিতে পারি, কিন্তু মাইকেলের 'মেঘনাদবধ’ পড়িবার জন্তু আমাদের রামায়ণ সম্বন্ধে জ্ঞান থাকা দরকার । ‘ব্রজঙ্গন, তিলোত্তম, 'বৃহসংহার' প্রভৃতি অমূল্য গ্রন্থের সহিত পরিচিত হইতে হইলে হিন্দুদের পৌরাণিক কাহিনীর সংক্ষিপ্ত বিবরণ জানা আবশ্যক । উপস্থিত বাঙালী মুসলমানদের সাহিত্যিক উন্নতি এত কম যে, কেহ যদি মনে করে কেবলমাত্র মুসলিম-লেখকের উপর নির্ভর করিয়া বাংলা শিখিব, তবে তহিকে হতাশ হইতে হইবে । অতীব লজ্জা ও দুঃখের সহিত ইহা আমাদিগকে সেইরূপ