পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪১২ প্রবাসী ృN98Nరి আসিল স্বষ্টির নব নব পরিকল্পনা, কাব্য, কলা, শিল্প, জ্ঞান, বিজ্ঞান। ধৰ্ম্মান্ধতার জন্ত মুসলমান যদি প্রতি পদে ভীত হইয়া পড়ে, সব কিছুকে পরিহার করে, নিজস্ব ব্যতীত অন্ত কোনও দিকে দষ্টিপাত না করে, তবে তাহার অমুসন্ধিৎসার পথ একেবারেই রুদ্ধ হইয়া যাইবে । এই সব বিভিন্ন দেশের জ্ঞানরাশি আহরণ করিবার প্রকৃষ্ট সময় ছাত্রাবস্থায়—কেননা তৎপরে কৰ্ম্মজগতে প্রবেশ করিলে অবসর তাহার অল্পই থাকিবে । সময় সময় দেখা যায়, কোন কোন জাতির এতদূর অধঃপতন হয়, মনোবৃত্তি এরূপ শোচনীয় হইয়া পড়ে যে তাঙ্গরা তাহাদের পতনের মূল কারণ নির্ণয় করিতে পারে না, তখন তাহার যে-কোনও বিষয়ে একটু অস্ববিধ ভোগ করে, মনে করে তাহাই বুঝি তাহাদের অধঃপতনের কারণ। কিন্তু কিছুকাল পরেই দেখা যায় যে, সে অসুবিধা দূর হক্টলেও তাহাদের অবস্থার একটুও উন্নতি হয় না। ব্যাধির মূল কারণ দূর না হইলে বাহিক কতকগুলি লক্ষণ হ্রাস পাইলেই সমাজের অবস্থার পরিবর্তন হয় না । আমাদের বাঙালীমুসলমানদের বেলায় এই কথাটা খুব খাটে। আমাদের মধ্যে র্যাহার। চিন্তাশীল, তাহার: চারি অবস্থা পৰ্য্যবেক্ষণ করিয়া এটুকু বুঝিয়াছেন যে, মুসলমানের মানবিকত, তাহার দেহ মন ও মস্তিষ্ক আজ অত্যন্ত শোচনীয় হইয় পড়িয়ছে, সুতরাং ততোকে উদ্ধার করিতে হইবে । কিন্তু এই অধঃপতনের মূল কারণ নির্ণয় করিতে গিয় র্তাহারা মস্ত ভুল করিয়াছেন- সম্মুখে যাহাকে পাইয়াছেন তাহাকেই আক্রমণ করিয়া মনে করিতেছেন, ইতাতেই বুঝি আমাদের মুক্তি নিহিত আছে। যেখানে সিডিশ্যন আইনের ভয় নাই, প্রেস আইনের ভয় নাই, সেইখানে নিরাপদে র্তাহীদের সমস্ত গিয়া পড়িল । তাহদের এক্ট আক্রমণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থাটা “টিল-খাওয়া পাখী’র মত হইয়াছে কি না জানি না, কিন্তু যদি এই ভাবে যথা-তথ আক্রমণ চালাহয় তাহারা মনে করেন সমাজের কল্যাণসাধন করিতেছি, আর সমাজ যদি মনে করে ইহাতেই তাহাদের কল্যাণ ও মুক্তি হইবে, তবে বলিব এ সমাজের উদ্ধার হক্টতে এপনও বহু বিলঙ্গ আছে । মুসলমানদের অধঃপতনের কারণ নির্ণয় করিবার জন্য একটু দিকের আক্রমণ এ প্রবন্ধ লিখিত হয় নাই । সুতরাং সে-বিষয়ে আমরা উপস্থিত কোনও কথা বলিব না, কিন্তু একথা দৃঢ়ভাবে বলিব, আজ যে মুসলমানদের দেহ-মন আড়ষ্ট ও অবসন্ন হইয়াছে তাহার জন্য দায়ী হিন্দু-প্রভাবিত বাংলা-সাহিত্য নয়, অথবা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ও নহে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্পর্শে যাহার কোনও দিনই আসে নাই, তাহারা কি এই আড়ষ্ট ভাব ও অবসাদ হইতে মুক্তি পাইয়াছে ? আমাদের বিরাট 'আলেম' ( পণ্ডিত ) সমাজ, কোরআন আর হাদিস যাহাঁদের কণ্ঠস্থ, তাহাদের মানসিকতা কি বিশ্ববিদ্যালয় হইতে পাস-করা ছেলেদের অপেক্ষ একটুও উন্নত ? বরং পরীক্ষা করিলে দেখা যাইবে, ইহার মৌলবী মৌলানা অপেক্ষা চরিত্রবলে, উন্নত মানসিকতায় ও স্বাধীন চিন্তাশক্তির প্রসারে অনেক বিষয়ে উন্নত। তাহা ছাড়া মুসলমান যুবকগণের সম্বন্ধে যে আড়ষ্টতা ও অবসাদের কথা বলা হইয়াছে, তাহা হইতে হিন্দ যুবকগণও কি মুক্তি পাইয়াছে ? এদেশের শিক্ষাপদ্ধতির বিরুদ্ধে একটা সাধারণ অভিযোগ এই মে, ইষ্ট ‘মাতুষ’ তৈয়ার করে না—তৈয়ার করে কতকগুলি কেরাণী ও চাকবে । এই ত্রুটিবহুল শিক্ষাপদ্ধতি যুবকগণের মধ্যে অবসাদ ও আড়ষ্ট ভাবের জন্য কতকটা দায়ী তাঙ্গ আমরা স্বীকার করি। কিন্তু ইতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠিত বাংলা ভামাকে দায়ী করা নিতান্ত ভুল । কিছু দিন পূৰ্ব্বে বিশ্ববিদ্যালয় বাংল ভসার জন্য কোনও পুস্তক অবশু-পঠিতব্য করেন নাই । তখন যে-সব মুসলমান সেখান হইতে পাস করিয়াছিলেন তাহার কি এই অবসান ও পরমুখাপেক্ষিতার দারুণ অভিশাপ হইতে উদ্ধার পাইয়াছেন ? দেড় শত বৎসরের পরাধীনতায় দেশের সর্বত্র ও সৰ্ব্বস্তরে যে একটা অবসাদ, তন্দ্র ও পরমুখাপেক্ষিতার ভাব লক্ষিত হইতেছে, মুসলমানদের মধ্যেও তাহাই দেথা যাইতেছে, আর সবগুলি একই কারণ-সস্তুত নিজ সম্প্রদায়ের অধঃপতন দেথিয়া অপর সম্প্রদায়কে তাহাক জন্য দায়ী করিলে কেবলমাত্র সত্যের অপলাপ করা হইবে । বাংলার বাহিরে অন্যান্য দেশের মুসলমানগণ কি এই পরমুখ+ পেক্ষিতা ও অবসাদের মোহ কাটাইয়া উঠিতে পারিয়াছেন ? বিহার, যুক্তপ্রদেশ, পঞ্জাব, সিন্ধু, বোম্বাই প্রভৃতি প্রদেশের মুসলমান বুঝি একেবারে হজরত মহম্মদ যুগের আরববাসীদেহ মত ? ভাল করিয়া লক্ষ্য করিলে দেখা যাইবে তাহাদের মধ্যে৪