পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سوا ج933 খবর কেহ বলিয়া না দিলেও সে অকুমানে বেশ বুঝিয়া লইয়া ভয়ে জড়সড় হইয় এক কোণে বসিয়া আছে । চার বছরের শিশুর মনে কেমন এক দুঃসহ শঙ্ক । ভগবান কি, সেকথা বুঝিবার বয়স তাহার নহে, নতুবা সে বুঝি আজ দুই হাত জোড় করিয়া আকুল প্রার্থনা জানাষ্টত, তাহার মায়ের যেন বিপদ পাের হইয়া যায়, তাহার যেন কোন অকল্যাণ না ঘটে। সে এখন কঁাদিতে পারিলে বঁচে, কিন্তু কাদিবারও যেন কোন একটা কারণ খুজিয়া পায় না। কথা বলিতে চায়, ভাষায় কুলায় না । মুখুজে-গিয়ী ঘরে ঢুকিয় পুত্রকে দেখেছিস্ বিহু ?” “দেখেছি মা, দশটা পনের মিনিট তেইশ সেকেণ্ড ।” পুত্র বিনম্নভূষণ পঞ্জিকার পাতায় সময়টা লিথিয় রাখিল । “আমার দাদুমণি কোথায় রে ?” বলিয়া মুখুজে-গিল্পী চারি দিক চাহিয়া বাস্থর দিকে দৃষ্টি পড়িতেই হাত বাড়াইয় আগাইয় গেলেন, “এস মাণিক, তোমার কথাই সত্য হ’ল । ভাই হয়েছে তোমার। দেখবে চল ।” বাস্থ তেমনই চুপ করিয়া আছে । বাবা ও ঠাকুরমার হর্ষ প্রকাশের সঙ্গে খানিক ক্ষণ আগে মার অফুট ক্রমনের কোন সঙ্গতিই সে খুজিয়া পাইল না ; মাতৃস্তন্তে বঞ্চনা সত্ত্বেও ভাই হওয়ার সম্ভাবনায় সে যে উল্লাস প্রকাশ করিতে শিখিয়াছিল এখন তাহার লেশমাত্রও ধেন আর অবশিষ্ট নাই । “এস দাজু, চল, ভাই দেখবে চল ।” ঠাকুরমা নাতিকে কোলে তুলিয়া লইয়। ঘরের বাহির হইয় গেলেন। সদ্যোজাত শিশু-ভাইকে দেখিয়া সেই যে বাস্তু ঠাকুরমার কোলে মুখ লুকাইল আর মুখুজে-গিনীর শত অঙ্গনয়ে, পাড়ার বর্ষীয়সীদের বিস্তর সহ্যস্ত সাধাসাধিতে একটি বারের জন্তও মুখ তুলিল না। শ্ন করিলেন, “ঘড়ি ૨ বামু আঁতুড়ঘরের কাছ দিয়াওঁ ঘেযে না। আজকাল সে ঠাকুরমার বেশী ভক্ত হইয়া পড়িয়াছে। বাবার সঙ্গে স্নান করে, ঠাকুরমার কোলে বসিয়া খায়, কাঠের ঘোড়াটা লক্ট্রয় রাতদিন খেলা করে। মা'র কথা যেন সে ভুলিতে Þþj 1 প্রবাসী SNご8Nー সেদিন মলিনা অনেক চেষ্টায় ঝিকে দিয়া বাস্থকে কাছে ডাকাইয়া আনিয়াছে। বাস্থ কিন্তু আঁতুড়ঘরের বাহিরে দাড়াইয়া রহিল। মা ডাকিল, “খোকন, বাপধন, ভেতরে এস না ।” বাস্থ কথার জবাব দেয় না। চৌকাঠের বাহিরেই চুপ করিয়া আছে । বিস্তর সাধ্যসাধনার পর বাস্থ অতুিড়ে ঢুকিয় এক কোণে দাড়াইয়া অন্ত দিকে চাহিয়া রহিল । মলিমা মুদু হাসিয়া ডাকিল, “কাছে এসে ব’স না লক্ষ্মী আমার---ও কি ! 传!” অগত্য বাস্থ মায়ের দিকে মুখ করিয়া একটুখানি আগাইয়ু বসিল । ঘরের এক পাশে একখানি বড় কাষ্ঠখণ্ড ধিকিপিকি জলিতেছে । অদূরে বসিয় আছে মা ; রুক্ষ চল, বিশুষ্ক অধর, মুখে চোখে কঠোর তপশ্চরণের করুণ সুন্দর রিক্ততা । জননীর এই তাপসী প্রস্তুতি-মূৰ্ত্তির দিকে চাহিয়া চাহিয়া বাস্থর প্রাণ দুঃখ ও সমবেদনায় ভরিয়৷ উঠিল । পার্শ্বস্তু সজীব মাংসপিণ্ডটাকেই মা'র এই কষ্টের কারণ মনে করিয়া পলকের জন্য শিশুর প্রতি দৃষ্টি পড়িতেই বাম চোখ ফিরাইয়ু লইল । অল্প সময়ের মধ্যেই মাতা-পুরে আলাপ জুমিয়া গেল । মা কহিল, “তোমার খাওয়! হয়েছে ? 4్య" “কি-কি দিয়ে খেলে অঞ্জ ?” “মাছ, ডাল, ভাঙ্গা-—” “কার সঙ্গে বসে খেয়েছ ?” “বাবার সঙ্গে —আজ আমি নিজের হাতে খেয়েছি ম' ' “তাই নাকি ! এই ত খোকন আমার বড় হয়েছে ।” বাস্থ মায়ের প্রতি চাহিয়া গর্কের হাসি হাসে । w কথায় মলিন হঠাৎ নবজাত শিশুকে কোলের কাছে সস্তপ: | তুলিয়া বাস্থর কাছে ধরিল, “দ্যাথ খোকন, কি মুন্দর ভাই তোমার-ওকি ! উঠো না।” বাস্থ উঠিয়া দাড়াইয়া মুখ ফিরাইল। মা ডাকি, “খোকন, একবার এদিকে তাকাও ! ছি ! অমল করতে নেই। তোমার ভাই হয় যে !” বাস্থ এক-পা ছু-প! কবি দুয়ারের দিকে আগাইয়া গেল । মলিন পিছু ডাকিল,

.