333 “লুম্বিণীবনে’ পরিণত করা, কিন্তু সে সংকল্প মনে রাথিয়াই তিনি চিরপ্রস্থান করিয়াছেন। জানি না সে পুণ্যময় ইচ্ছা পূরণ করা কাহার সৌভাগ্যে ঘটবে। তবে নেপাল-সরকারের কায্য চলিতেছে । মনুষ্যজাতির এক-তৃতীয়াংশের একান্ত মনস্কামনা এই স্থান দর্শন। ২৪৯১ বৎসর পূৰ্ব্বে বৈশাখী পূর্ণিমায় এইখানেই কুমার সিদ্ধার্থ জন্মগ্রহণ করেন, ২১৮২ বৎসর পূৰ্ব্বে সম্রাটু অশোক এইখানেই পূজা দান করেন। যেখানে লোকগুরু ভূমিষ্ঠ হইয়াছিলেন, সেইখানে এক নীচু কুঠরীতে এখনও জননী মহামায়ার বিনষ্টপ্রায় মূৰ্বি, দক্ষিণ হস্তে শালবৃক্ষের শাখা ধারণ করিয়া দাড়াইয়া আছে। কুশীনারার মহাস্থবির চন্দ্রমণির ইচ্ছানুসারে, তাহার প্রদত্ত ধূপকাঠি ও মোমবাতি আমি ঐ মূর্তির সম্মুথেই জালিয়া দিলাম। রাত্রেও ঐ কুঠরীতেই বিশ্রাম করিবার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু পূজারী বলিলেন, ঐখানে রাত্রে চোরের উপদ্রব, স্বতরাং থাকা নিরাপদ নহে। ইতস্তত করিতেছি এমন সময় খুনগাই গ্রামের চৌধুরী মহাশয়ের পুত্র আসিয়া আমাকে তাহাদের বাড়ীতে বিশ্রাম ও ভোজন করিতে নিমন্ত্ৰণ করিলেন। চৌধুরী মহাশয়ের দ্বার লুঙ্গিনী-যাত্রীদের জন্য অবারিত, এমন কি অ-হিন্দুদিগের ভোজনের জন্য চীনামাটির বাসন ইত্যাদিও তিনি রাখিয়াছেন। রাত্রে আমার ভোজনের প্রয়োজন না হওয়ায় সেইগুলি ব্যবহার করা হয় নাই । পরদিন সহৃদয় চৌধুরী-সাহেবের গাড়ীতেই নৌগড় রোড ষ্টেশন রওয়ান হওয়া গেল । খুলগাই হইতে কঁকরহবা দেড় কি দুই ক্রোশ মাত্র ইহা নেপাল-সীমান্ত হইতে অল্পই দুর । এখন নেীগড় রোড হইতে এই পুধ্যস্ত মোটর বা গরুর গাড়ীতে আসা যায়, আর কিছুদিন পরে লুঙ্গিনী পৰ্য্যস্ত রাস্ত তৈয়ার হইলে যাত্রীরা মহাসুখে নেীগড় রোড হইতে বরাবর মোটরে যাইতে পরিবেন। সেই দিনই রাত্রে ষ্টেশনে পৌছিলাম। এখন কোশলরাজধানী শ্রাবন্তীতে জেতবন দেখিবার পাল । কিন্তু ষ্টেশনে শুনিলাম সেদিন আর ট্রেন নাই, কাজেই হালুয়াইয়ের দোকানে আশ্রয় লইয়া ভোজনের চেষ্টা দেখিলাম। হালুয়াই পুরী তৈয়ারী আরস্ত করিল। রোজার দিন, খানিক পরে তাহারই ব্যবস্থায় তাহার এবং প্রবাসী ృe89 পাশের দোকানে ঐ গ্রামের এক মুসলমান গৃহস্থ আসি৷ t t বসিতে হালুয়াই উহাকে পান খাওয়াইয় জিজ্ঞাসা করিল, । “খ-সাহেব, রোজায় বড় কষ্ট হচ্ছে, না ?” “না ভাই ! এবার শীতের দিনে পড়েছে, রাত্রে খাওয় ভালই হয়, গ্রীষ্মে রমজান পড়লেই কষ্ট হয়।" দু-জনে দিব্য গল্প চলিল, হালুয়াই তাহার কাজও করিতে লাগিল। আমি ইহাদের সদালাপ শুনিতে শুনিতে ভাবিতে লাগিলাম যে, কোন শক্রতে ইহাদের একপে অপরের বিষম বৈরীতে পরিণত করিতেছে। এই দেশে কি এই দু জনের নিজ নিজ আচার-ব্যবহার বঞ্জা রাখিয়া গা ছড়াইবার মত ভূমির অভাব আছে ? ঘrি কেহ বলে যে এই শক্রতার কারণ ধৰ্ম্ম, তবে আমি বলি ধিক সেই ধৰ্ম্মে যাঙ্গতে এইরূপ বন্ধু শক্রতে পরিণত হয় ! W. 壽 卷 পরদিন ( ১৯শে ফেব্রুয়ারি ) নেীগড় হইতে বলরামপুর পৌছিলাম। ভিক্ষু আসয়ার ধৰ্ম্মশালায় আশ্রয় পাইল’ম, ভিক্ষু মহাশয় ব্রহ্মদেশীয় ধনী পিতার শিক্ষিত সস্তান । দশ বৎসর পূৰ্ব্বে এখানে আসিয়াছিলাম, তখন বর-সম্বোধি নামক ভিক্ষু এই ধৰ্ম্মশালার স্বচন, এবং সবেমাত্র অল্প অংশ নিৰ্ম্মাণ করিয়াছেন। এখন বিশ্রাম ভোজন ইতাদির স্থান ছাড়াঃ কৃপ, মন্দির ও পুস্তকালয়ও প্রায় প্রস্বত হইয়াছে দেখিলাম । ২১শে ফেব্রুয়ারি আয়ুষ্মন আনন্দকে আমার জেতবনভ্রমণ সম্বন্ধে এই পত্র লিথিয়ছিলাম :
- কাল সকালে পদব্ৰঞ্জে অবিরত আড়াই ঘণ্টা চলিয়া এখানে আসিয়৷ মহিন্দবাবার কুটীতে উঠিয়াছি । আমার ইঁটা অভ্যাস আর ৪ বাড়ানো প্রয়োজন । মহিন্দবাবা এগন ব্রহ্মদেশে আসিবার সময় ধতুষ্কোডিতে আমার সঙ্গে দেখা হইয়াছিল। কাল পূৰ্ব্বাঙ্গে জেতবন ঘূরিয়া গন্ধকূট, কোসম্বকুট, কারেরীকুট, সললাগার দেখিলাম। এ সকলের অবস্থান-নির্ণয়ে সন্দেরের অবসর নাই। এই গন্ধকূটর সম্মুখের নিম্নভূমিই “জেতবনপোকৃথরণী” সে বিষয়েও সন্দেহ নাই। মহিন্দবাবার কুট ফাতিস্থান-বর্ণিত তৈর্থির দেবালয়ের ভিটার উপর স্থাপিত " "অপরাঃে শ্রাবস্তী গেলাম স্বৰ্য্যাস্ত পৰ্য্যন্ত ঘুরিয়াও চারিদিক দেখা শেয হয় নাই । শ্রাবস্তীর পূৰ্ব্বদ্বার গঙ্গাপুর দরওয়াজার ( বড়ক দরবাজী ) স্থানে ছিল বোধ হয়, কিন্তু