পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

80;o প্রবাসী SNSBNご ইহাদের বৈশিষ্ট্য—(১) আকৃতি মঙ্গোলীয়, ( ২ ) এখানকার থাকদিগের ভাষার সহিত গয়া জেলার মগহী ভাষা সম্পূর্ণ মিলিয়া যায়, (৩) দক্ষিণের অ-থার জাতিদিগকে ইহার ‘বাজী' ( অর্থাৎ বৃজি=লিচ্ছবি ) এবং তাহদের দেশকে বজিয়ান বলে, (৪) ইহারা মুরগী ও শূকর দুই-ই খায়, যদিও এখানকার হিন্দুরা মুরগী খাওয়া অত্যস্ত খারাপ মনে করে, (৫) চিতবনিয়া থারুরা বলে তাহারা চিতোরগড় হইতে আসিয়াছে, পশ্চিম ভাগের (লুম্বিনীর নিকটে) থারূদের কিংবদন্তী যে তাহারা বনবাসী অযোধ্যার রাজবংশের সস্তান ।” “কাল চানকী-গড় দেখিতে যাইব । সেখানে মৌর্য্য বা প্রাক্-মৌর্য্য কালের এক গড় আছে। পরশু রাত্রের গাড়ীতে এখান হইতে নরকটিয়াগঞ্জের পথে রক্সৌল যাত্রা করিব । নেপাল হইতে পত্র দিবার সুযোগ বোধ হয় হইবে না।” “প্রিয় আনন্দ ! শেষ নমস্কার করিয়া এখন বিদায় লই । ‘কার্যং বা সাধয়েয়ং শরীরং বা পতিয়েমৃং’—জীবন বড়ই মূল্যবান, সময়ের মূল্য কিছুমাত্র নাই।” 嶽 粥 粥 তিন তারিখে শিকারপুর হইতে রকৌল, এবং সেইদিনই নেপালের সরকারী রেলে বীরগঞ্জ পৌছিলাম। 嶽 纂 熹 স্বয্যোদয়ের সময় রক্সেীল পৌছিলাম। ছয় বৎসরে অনেক পরবর্তন হইয়াচে । তখন দেখিয়াছিলাম দলে দলে ধাত্রী পদব্রজে বীরগঞ্জ চলিয়াছে । সেখানে কাতারে কাতারে দাড়াইয়া ডাক্তারকে নাড়ী দেখানো এবং সীমাস্তের উচ্চ কৰ্ম্মচারীদের নিকট ছাড়পত্রের ব্যবস্থা ইত্যাদি চলিয়াছে । এখন বি-এন-ডবলু রেলের রক্সৌল ষ্টেশনের পাশেই নেপাল রাজ্যের রেল-ষ্টেশন, যাত্রীদের সেখানে গিয়া ট্রেনে উঠিলেই হয় ; ছাড়পত্রের জন্ত বহু কৰ্ম্মচারী মোতায়েন থাকে, সুতরাং কোন ঝঞ্চাট নাই এবং ডাক্তারী “নাড়ীটেপানো”র কোন ব্যবস্থাই নাই। বাস্তবিক পক্ষে ঐ ডাক্তারী পরীক্ষা ছিল সম্পূর্ণ অনাবশ্বক, আসল পরীক্ষণ হয় চৗমপানীচন্দাগঢ়ীর চড়াইয়ে যেখানে মুস্থ সবল লোকেরও ইপিাইতে ইাপাইতে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয় । আমার এখানে পৌছিবার তারিখ বন্ধুবর্গের মধ্যে কেহ কেহ জানিতেন। তখনও আমার তিব্বত-প্রবাস আট-দশ বৎসর ব্যাপী হইবে বলিয়া ঠিক ছিল—চৌদ্দ মাস পরে যে ফিরিয়া আসিতে হইবে একথা ভাবিও নাই, সুতরাং বন্ধুদের অনেকেই বিদায়ুগ্রহণের আবশ্বকতা অনুভব করিয়াছিলেন। রক্সৌল ষ্টেশনে নামিতেই দেখিলাম এক বন্ধু আসিয়াছেন, তাহার কাছে বিদায় লইয়া নেপালী ষ্টেশনে চলিলাম । ছাড়পত্র আগেই লইয়াছিলাম । কিন্তু সোজী অমলেখগঞ্জ যাইবার ইচ্ছা ছিল না, কেন-না জানিতাম বীরগঞ্জেও অনেক বন্ধু বিদায়ের জন্য প্রতীক্ষা করিবে, এবং ঐখানে যে নেপাল-যাত্রার সঙ্গীও কিছু মিলিবে, তাহাও জানিতাম । ট্রেনে যাত্ৰীগাড়ীর অভাবে মালগাড়ী জুড়িয়া দেওয়া হইয়াছিল, তাহারই একটিতে অতি কষ্টে ঢুকিলাম—এতই ভিড় । বস্তু ই রেলযাত্রায় ভ্রমণের অনেক আনন্দ নষ্ট হয় । যখন ভারত-সীমানার ছোট নদীতে জল লইবার জন্য এঞ্জিন দান্ডাইল, তখন ঐ নদীর কুলেষ্ট কিছু দূরে রাস্তার উপরের সেই ছোট কুটার দেখিলাম, সেখানে দশ বৎসর পূৰ্ব্বে এক বৈশাথে ছাড়পত্রের অভাবে যাত্রা স্থগিত করিয়া আমায় কিছুদিন থাকিতে হইয়াছিল । সে-সময় সাধারণ লোকের পক্ষে, শিবরারি ভিন্ন অন্য সময়ে, বীরগঞ্জে পৌছানও দুরূহ ব্যাপার ছিল। ঐখানে এক তরুণ সাধুর সঙ্গে সাক্ষাতের কথা মনে পড়িল, তিনি রুশ সাম্রাজ্যের অষ্টগত এক সালামুখী তীর্থ দৰ্শন করিয়া আসিয়াছেন বলিয়া ছিলেন । সে সময় তাহার ভ্রমণকাহিনী শুনিয়াছিলাম বটে, কিন্তু রুশদেশেও যে হিন্দুর “জাল-মাই” তীর্থ থাকিতে পারে বিশ্বাস হয় নাই। পরে জানিলাম ধে রুশদেশের বাকু অঞ্চলে সত্য সত্যই ঐক্সপ স্থান আছে । রক্সেীল হইতে বীরগঞ্চ তিন-চার মাইল মাত্র। রেল বীরগঞ্জ বাজারের মধ্য দিয়া সঙ্কীর্ণ রাস্তাকে আরও সঙ্কীর্ণ করিয়া চলিয়ছে। ষ্টেশনে নামিয়া অদূরে ধৰ্ম্মশালা দেখিয়া-- আকৃতিতেই চিনিয়াছিলাম-অগ্রসর হইলাম। আগেকার দিনে এ-সময়ে এখানে স্থান পাওয়া দায় হইত, কিন্তু রেলের কৃপায় এখানে আর যাত্রীসমাগম বিশেষ নাই, স্বতরাং সহজেই উপরের তলায় একলা থাকিবার মত এক কুঠরী পাইলাম। আজ ফাঙ্কন স্বদ অষ্টমী (৬ই মার্চ ১৯২৯) মাত্র, সুতরাং নেপাল পৌছিবার পক্ষে যথেষ্ট সময় হাতে ছিল। ধৰ্ম্মশালাটি