পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ থাকিলে পুরাণসাহায্যে পুরন্দর প্রভৃতি ইন্দ্রের কাল নির্ণয় করা সম্ভব। সাগর। এ-বিষয়ে কৌতুহলী তাহাদিগকে পুরাণপ্রবেশ' দেখিতে অকুরোধ করি । যজ্ঞ ও বেদ যুক্ত –ঠলারতবাসী নরগণ দেব বলিয়৷ পরিচিত ছিলেন সত্য কিন্তু ইহাতে ঋগ্বেদের ইন্দ্রের যে পঞ্চমূতি আমরা দেখিয়াড়ি তাহার সম্যক ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। কি করিয়া নরেন্দ্র ইন্দ্রের দেবত্ব হইল তাহার স্ত্রও পুরাণে পাওয়া যায় । সম্রাট ইন্দ্র নরেন্দ্ররূপে সাধারণের সম্মান পাইতেন । এখন যেমন বিশিষ্ট বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ রাজা ব। রাজপ্রতিভূকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য আমন্ত্রণ করেন এবং তদুপলক্ষে নানা উৎসবের অন্তচনি করেন এবং ‘সম্মানাহঁ অতিথি'কে ( honoured guest ) মানপত্র প্রদান করেন পূর্বেও লোকে ঠিক সেঙ্গ ভ’ ত ইন্দ্রদি নরপতিগণকে নিমন্ত্রণ করিয়া অভ্যর্থনা কথিত । এই অভ্যর্থনার নাম ছিল যজ্ঞ । সম্মানাহ অতিথির নাম ছিল ‘ঘন্ত্রপুরুষ । তখন সোম পান করান বিশিষ্ট সম্মান-প্রদর্শনের নিদর্শন ছিল । সর্বাগ্রে যজ্ঞপুরুষকে সোম নিবেদন করিয়া অভ্যাগতগণের মধ্যে তাহ বিতরণ করা হইত। এত উদ্দেশে কলস কলস সোমরস প্রস্তুত হইত। সোম বহুমূল্য ছিল । শ্রযুক্ত ব্রজলাল মুখোপাধ্যায় মহাশয় বহু প্রমাণ বিচার করিয়া স্থির করিয়াছেন যে সেমি ও সিদ্ধি' বা ভাঙ একঠ পদাৰ্থ । আয়ুর্বেদের সোমলত বৈদিক সোম নহে । যজ্ঞে মাংসাদি নানা প্রকার ভূরি ভোজনেরও ব্যবস্থা থাকিত। যজ্ঞোন্দেহে যজ্ঞকতাকে বিবিধ ভোজ্য বা অত্ব দ্রব্য সংগ্ৰহ করিতে ংহত যজ্ঞ হইতেছে সন্ধান পাইয় অনেক সময় দুবৃত্তগণ যজ্ঞদ্রব্য লুটপাট করিয়া লহত । এই সকল যজ্ঞবিঘ্নকারীকে রাক্ষস বলা আমরা এখন শুও ডাকাত বলিলে ジを受 | যাহা বুঝি রাক্ষস তাহাই । পুরাণপ্রবেশ । ২৬০ পৃ. দ্রষ্টব্য । যজ্ঞকতাকে রাক্ষস-নিবারণের ব্যবস্থা করিতে হাতত । এখন যেমন মানপত্রে পুজ ব্যক্তির কাতিকলাপ বৰ্ণিত হয় তখনও ঐরূপ যজ্ঞপুরুষের উদ্দেশে রচিত স্তুতিতে তাহার বিশিষ্ট গুণাবলি ও কীতির উল্লেখ থাকিত । স্তুতিতে ঋষি প্রায়ুষ্ট বলিতেছেন, "হে হন্ত আমি তোমার কীতিসমুহ বৰ্ণন করিতেছি । কোন গবর্ণরের উদ্দেশে লিখিত বিভিন্ন মানপত্র দেথিয় যেমন হতবুওকার বলিতে পারেন তিনি কি কি কম করিয়াছেন, তদ্রুপ ইন্দ্রস্তত্তগুলি বিচার করিলেও তলাবুতবাসী ইন্দ্রগণের কাতিকলাপ জানিতে পারা যায় । ------ ইন্দ্রের ঋগ্বেদ ইউবুক্ত ন হইলেও এজন্ত ঋকৃ’ স্থ হঠতে কিছু কিছু প্রাচীন ইতিবৃত্ত উদ্ধার করা সম্ভব । ইন্দ্রের বিশিষ্ট কাতি পরে আলোচনা করিয়াছি । ঋগ্বেদে ইন্দ্র \ যজ্ঞের পরিণতি ।—বৃত্ৰবধের পর অষ্টযুগ যাবৎ { রাজত্ব করিয়াছিলেন, কিন্তু আশ্চর্য্যের কথা এই যে ইও লুপ্ত হইলেও ইন্দ্ৰযজ্ঞ লোপ পায় নাই। পরবর্তী কা, ইন্দ্র না থাকিলেও ষজ্ঞাগ্নিতে ইন্দ্রের নামে আহুতি দেওয়া হইত ; যজ্ঞ তখন আর অভ্যর্থনা-উৎসব নহে, ইন্দ্রও প্রত্যক্ষ-দেব নহেন । ইন্দ্র অদৃশ্ব-দেব বা আকাশ-দেব ব৷ আস্তরীক্ষ দেবে পরিণত হইয়াছেন। প্রত্যক্ষ ইন্দ্রই পঞ্চমূতির মধ্যে আদি দেব। পরে অন্য চারি প্রকার দেবত্ব র্তাহাতে আরোপিত হইয়াছে এবং যজ্ঞের আদিম অর্থও পরিবতিত হইয়াছে । যে ভাবে ইন্দ্রের দেবত্বের ক্রমিক পরিণতি ঘটিয়াছিল অন্য দেবগণ সম্বন্ধেও সেই কথা প্রযোজ্য । পুরাণ এই ক্রমপরিণতির সূত্রের আভাস দিয়াছেন। পৌরাণিক দিবি আরোহণ ও অবতারতত্ত্ব বুঝিলে বৈদিক দেবতত্ত্ব সুগম হইবে } দিব-আরোহণ তত্ত্ব।—বিষ্ণুপুরাণে প্রথমাংশে দ্বাদশাধ্যায়ে ধ্রুবের অাথ্যানে কথিত আছে, ভগবান সন্তুষ্ট হইয়া ধ্রুবকে কহিলেন, “হে ধ্রুব, সূর্য সোম বৃহস্পতি ইত্যাদি সপ্তর্ষি প্রভৃতি যে-সকল বিমানচারী স্বরগণ আছেন তাহাদের সকলের উপর তোমার স্তান দিলাম।” পৌরাণিকগণ উত্তর দিক্‌কে উদ্ধ দিক বলিতেন। বৈমানিক জ্যোতিশক্রের উত্তর অক্ষপ্রাস্তষ্ট সর্বোচ্চ বিন্দু। ধ্রুবের স্থান এইখানে ॥ পুরাণপ্রবেশ । ২৪২ পৃ. ৷ মতুযু ধ্রুবের ধ্রুব নক্ষত্রে স্থান হইল অর্থে নক্ষত্রের নাম ধ্রুবের নামানুসারে রাখা হইল । এখনও আমরা এই প্রথায় মনুষ্যনামালুয়ায়ী প্রাকৃতিক বস্তুর নামকরণ করিয়! থাকি, যথা—চন্দ্রস্থিত পর্বতকে কোপারনিকস্ বলা হয়, হিমালয়ের উচ্চতম শৃঙ্গের নাম এভারেষ্ট, ইত্যাদি । বিশিষ্ট ব্যক্তির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের উদ্দেশ্যেই এইরুপ নামকরণ । পৌরাণিকগণ আরও এক কারণে এই প্রথা অবলম্বন করিয়াছিলেন । শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিগণের নাম যাতাতে চিরস্থায়ী হইতে পারে তাহাও তাহীদের অন্যতম উদেশ্ব ছিল । ভগবান ধ্রুবকে উপরিউক্ত বর দান করিয় বলিলেন, “কেই চকুযুগ পর্যস্ত স্থায়ী হয়, কেহ বা মম্বস্তর পর্যন্ত কিন্তু তুমি আমার বরে কল্পকাল পর্যন্ত ( অর্থাৎ বিশ্বসংসাপ্ত ধ্বংস হওয়া পর্যস্ত ) স্থায়ী হইবে । যে-সকল মল্লযু সমাহিত হইয়! সয়ংপ্রাতঃ তোমর কথা কৗতন করিবে তাহদে মহৎ পুণ্য হইবে . যে ধ্রুবের দিবিতাবোঞ্চণ স্মরণ করে সে স্বৰ্গলোকে মহিমা প্রাপু হয় ।” জ্যোতিষ্কগণের নামকরণ --পুরাণে বহু ব্যক্তির এরূপ দিবি-আরোহণ বর্ণিত হইয়াছে । পুরাকালে বিবস্বান নামে অতিপরাক্রাস্ত এক গন্ধৰ্ব রাজা ছিলেন । গন্ধর্বগণ