পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ এ্যা ? ও পুটি, দে দে বসতে দে, ছুটে একটা দামী আসন নিয়ে আয় গে ছিনাথবাবুর বাড়ী থেকে। এই রকম করে সকলে সরলার সঙ্গে। কেবল শস্তুর ম! বড় ঘরের দাওয়ার কোণে বসিয়া নিঃশবে নিৰ্ব্বিকার - মালা জপিয়া যায়, সরলা গমনে আসিয়া ঢিপ করিয়! করিলেও চাহিয়া দেখে না । সরল পায়ে হাত দিতে শুধু বলে, নতুন কাপড় পরে ছুয়ে না বাছা । সরলার দাতগুলি একটু বড় বড়। সাধারণত: কোন সময়েই সেগুলি সম্পূর্ণ ঢাকা পড়ে না। কুড়ি মিনিট শ্বশুরবাড়ী কাটাঠয়া বাড়ী ফেরার সময় দেখা গেল তার অধর ও ওষ্ঠে আজ নিবিড় মিলন হইয়াছে । চিত্তে গেলে ভিন্ন হওয়ার আগে ওর। সরলাকে ভয়ানক যন্ত্রণ দিত। উঠানে বেড়া ওঠার আগে সরলা ছিল ভারি রোগ ও দুৰ্ব্বল, কাজ করিত বেশ খাইত কম, বকুনি শুনিয়! শুনিয়া ঝালাপালা কান দুটিতে শত্ত্বও কখনও মিষ্টি কথা ঢালিত না । এক বস্তর এক থাকিয়ু সরলার শরীরটি হইয়াছে নিটোল, মনটি ভরিয়া উঠিয়াছে শ্লথ ও শাস্তিতে । রাণীর মত আছে সরল, রান্না ছাড়া কোণ কাজই এক রকম তাকে করিতে হয় না, পাণ্ডার একটি দুঃখী বিধবা কাজগুলি করিয়া দিয়৷ যায় । দোকান করার জন্ত তার বাবা যত টাকা শস্তুকে দিবে বলিয়াছিল, সব এখনও দেয় নাই, অল্পে অল্পে দিয়া দোকানের উন্নতি করার সাহায্য করিতেছে । মাসে একবার করিয়া আসিয়া দোকানের মজুত মালপত্র ও বেচাকেনার হিসাব দেথিয়া যায়। প্রত্যেক বার মেয়েকে জিজ্ঞাসা করে ইতিমধ্যে শস্তুর পত্নীপ্রেমে সাময়িক ভাটাও কখনও পড়িয়াছিল কি-না ; বড় সন্দেহপ্রবণ লোকটা, বড় অবিশ্বাপা,--- নয় তো মেয়ের অহলাদে গদ-গদ ভাব আর ডুরে শাড়ীর বহর দেপিবার পর ও-কথাটা আর জিজ্ঞাসা করিয়া জানবার চেষ্টা করিত না ।

থ যদি সরলার কিছু থাকে সেটা তার এই পরম কল্যাণকর এক থাকিবার দুঃখ ৷ বেড়ার ওধারে অশাস্তিভরা মস্ত সংসারটির কলরব দিনরাত্রি তার কালে আসে, ছোট বড় ঘটনাগুলির ঘটিয়া চলা এ বাড়ীতে বসিয়াই সে অমুসরণ করিতে পারে ; ছেলেমেয়েগুলি কখনও কঁদে ক্ষুধায়

দোকানীর বউ &a$ আর কখনও কাদে মীর থাইয়া, বড়-জা কখনও কি জন্য চেঁচায়, ছোট-জা কখনও কি জন্য খিলখিল করিয়া হাসিয়া উঠিয়া ধমক শোনে, ছোট দেবর কখনও কাকে খোচা দিয়া ঠাট্টা করে, কবে কে আত্মীয়স্বজন আসে যায় । হইতে অন্ত প্রাস্ত পর্য্যন্ত সরল স্থানে স্থানে কয়েক জোড়া ফুটা করিয়াছে, সরিয়া সরিয়! এই ফুটাগুলিতে চোপ পাতিয়া সে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাইয়া দেয় । আবর্তের মধ্যে কিছুক্ষণ পাক থাইল্প আসিতে বড় ইচ্ছা হয় সরলার } নিজের বাড়ী আসিয়া সে ডুরে শাড়ী ছাড়িল না, রান্নার আয়োজন করিল না, একবার শতুর দোকানদারী দেখিয়া আসিয়া ছটফট করিতে লাগিল । আসিবে, বীপের সঙ্গে কিছুদিনের জন্য বাপের বাড়ী চলিয়া যাইবে কিনা তাই ভাবিতে লাগিল সরলা । কত কথা মনে আসে আলস্তের প্রশ্রয়ে অবাধ্য মনে । শস্তু বেকার ছিল তাই আগে সকলে তাকে দিত যন্ত্রণ, ভিন্ন হইয় আছে বলিয়া এখন সকলে তার সঙ্গে খারাপ । বেড়াটা ভাঙিয়া আবার ভাঙা বাড়ী দুটাকে এক করিয়া দিলে ওরা কি তাকে খাতির করিবে না ? তার স্বামী এখন রোজগার করে, ভবিষ্কাতে আরও অনেক বেশী করিবে, এই সমস্ত ভাবিয়া ? তবে মুস্কিল এক্ট, এখন যদি দোকানের আয়ে ওরা ভাগ বসায় দোকানের উন্নতি হইবে না, এমন একদিন কখনও আসিবে না যেদিন লোহার সিন্দুকে টাকা রাথিতে হইবে শস্তুকে যত ডুরে শাড়ী সে আদায় করুক আর লজেঞ্চুস পাক, দোকানের আয়ব্যয়ের মোটামুটি হিসাব তে সরলা জানে। তিন পুরুষের পালঙ্কে গিয়া সে গুছয় পড়ে । কত দিন পরে ৪-বাড়ীর সকলের ভয় ভালবাসা ও সমীহ কিনিবার মত অবস্থা তার হইবে হিসাব করিয়া উঠিতে না পাঞ্চিয় বড় কষ্ট হয় সরলার । বেড়ার এক প্রাস্ত ওক্ট বিকালে তার বাবা ব্যবহার করে অনেক ক্ষণ পরে উঠিয় গিয়া অভ্যাস-মত সরল একবার বেড়ার মাঝখানের ফুটায় চোখ পাতিয়া দাড়াইল । দেখিল, e-বাড়ীতে বড় ঘরের দাওয়ায় বসিয়া শম্ভু সকলের সঙ্গে কথা বলিতেছে । মাঝে মাঝে শঙ্ককে সে বেড়ার ওদিকে দেখিতে পায় । এতে সরল আশ্চৰ্য্য হয় না, সে পরের মেয়ে সে যখন যায়, শস্তুও মাঝে মাঝে যাইবে বইকি ! সরলার কাছে বিস্ময়কর মনে হয় শঙ্কুর সঙ্গে সকলের