পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রেণবণ সঙ্গে বাস করিতে পারে, হয়ত অকৃতজ্ঞ পাষণের মত শত্ব নিজেই তাকে দাবাইয়া রাখিবে। তবু, ভবিষ্যতেও সে তার বশে থাকিতে পারে এ-রকম একটু সম্ভাবন যখন দেখা গিয়াছে এবার হাল ছাড়িয়া দেখাই ভাল যে কি হয়। সরলার সন্দেহপ্রবণ অবিশ্বাসী বাবা মেয়ের অনুরোধ শুনিয়া প্রথমটা একটু ভড়কাইয়া গেল। একসঙ্গে তিন-শ টাকা । জামাইকে আর একটি পয়সা না দিবার কথাই সে ভাবিতেছিল, দোকান যেমন চলিতেছে শস্তুর, তাতে দু-জন মানুষের থাইয়-পরিয়া থাকা চলে, বড়লোকের মত না হোক গরীবের মত চলে । জামাইকে বড়লোক করিয়া দিবার ভার ত সে গ্রহণ করে নাই । মোট ছ-শ টাকা অবশু সে দিবে বলিয়াছিল, তবে সংসারে কত সময় মাচুর্য আমন কত কথ সব কি আর চোথকাম বুজিয়া অক্ষরে অক্ষরে পালন করা উচিত, না তাই মামুষে পারে ? অবস্থা বুঝিয়া করিতে হয় ব্যবস্থা । তাছাড়া, বাজারে মণিহারী দোকান খোলার মত দুৰ্ব্ব দ্ধি যদি শতু করিয়া থাকে-কাদিয়া-কাটিয় সরলা অনর্থ করিতে থাকে, কত কণ্ঠে বাপের কাছ হইতে টাকাটা সে আদায় করিয়া দিতেছে, শস্তুকে তা বোঝানোর জন্ত যতটা দরকার ছিল তার চেয়ে বেশ কঁদোকাটা করে । দেবে বলেছিলে এখন দেবে না বলছ বাবা ?—বলিতে বলিতে দুঃখে অভিমানে বুকটাই যেন ফাটিয়া যাইবে সরলার । একসঙ্গে তিন-শ টাকা দেওয়া সরলার বাবার পক্ষে সহজ নয়, তবু একবেলা মেয়ের আক্রমণ প্রতিরোধ করিয়া সে হার মানিল । ছেলে তার আছে তিনটা কিন্তু আর মেয়ে নাই । সরলা তার একমাত্র মা-মরা ছোট মেয়ে । কোথায় দোকান করিবে, কি রকম দোকান খুলিবে, কত টাকার জিনিষ রাখিবে দোকানে আর কত টাকা পুজি রাখিবে হাতে, শতুকে এসব অনেক কথা জিজ্ঞাসা করিয়া সরলার বাবা গঞ্জীর চিন্তিত মুখে বিদায় হইয়া গেল । সরলা বলিল—দেখলে ? শম্ভু যথোচিত ভাবে কৃতজ্ঞত জানাইল । স্বামীদের যেভাবে স্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানান উচিত ঠিক সে ভাবে না, নস্থ ভাবে, সবিনয়ে শ্রদ্ধার সঙ্গে । এই সময় বেড়ার ওপাশে হঠাৎ শোনা গেল ছোটবে ক্ষেস্তির খিলখিল হাসি। বেড়ার ফুটায় বলে, দোকানীর বউ 位の\こ 。 সে চোখ পাতিয়া ছিল নাকি এভক্ষণ, তাদের আলাপ শুনিতেছিল । রাল্লার চালাটার পিছন দিয়া ঘুরিয়া সরলা চোখের নিমেষে ও-বাড়ীতে গিয়া হাজির হইল। বৈদ্যনাথ ক্ষেস্তি আর বাড়ীর কুকুরটা ছাড়া উঠান নির্জন উঠানের বেড়া আর ধানের মরাইটার মাঝখানে দাড়াইয়া রসিক বৈদ্যনাথ স্ত্রীর সঙ্গে রসিকতা করিতেছে । —সবাই কোথা গেছে লো ছোটবে ? কাছে আসিয়া ক্ষেস্তি ফিস ফিস করিয়া বলিল, ঘরে । সেটা সম্ভব । চৈত্রের দুপুরে ঘরের বাহিরে কড় রোদ, গরম বাতাস । কিন্তু এদের কি ঘর নাই ? এখানে এর কি করিতেছে এ সময় ? হাসাহাসি ? নিজের বাড়ীতে ফিরিয় বারান্দ ছাড়িয়া এবার সরল ও শম্ভু ঘরে গেল । তিন পুরুষের পুরানো পালঙ্কে (ভিন্ন হওয়ার সময় ভাইদের কবল হইতে শতু সেটা কি কৌশলে বাগাইয়াছিল আজও সরলা তাহা বুঝিতে পারে না ) শুইয়া সরলা চোখ বুজিল, শস্তু বসিয়া বসিয়া টানিতে লাগিল তামাক । নিজেই তামাক সাজে কি ন শতু, এত বেশী তামাক দেয় যে তামাক শেষ হইতে হইতে দুপুরে এবং রাত্রে দু-বেলাই সরলার ধৈর্য চুতি ঘটে। আজ দেখা গেল সে ঘুমাইয়া পড়িয়াছে । হয় বাপের সঙ্গে সমস্ত সকালবেলাট লড়াই করিয়া না-হয় বৈদ্যনাথ ও ক্ষেস্তিকে ধানের মরাইয়ের আড়ালে রোদে দাড়াইয় হাসাহাসি করিতে দেখিয়া সরল বোধ হয় শ্রাস্ত হইয় পড়িয়াছিল । দিন-সাতেক পরে শতৃ সকাল বেলা সরলার বাবার কাছ হইতে টাকা আনিবার জন্য রওনা হইয়া গেল । গেল ও-বাড়ী হইয়া । দোকামে নূতন মাল আন সে কিছুদিন আগেই বন্ধ করিয়াছিল, অনেক জিনিষ ফুরাইয় গিয়াছে, অনেক খদের ফিরিয়া যায়। মণিহারী দোকানে যে-সব জিনিষ রাখা চলিবে না,— চাল ডাল মশলাপাতি, সে সব শেষ হইয়া যাওয়াই ভাল । তাই আজ একটা দিনের জন্যও দোকানট সে বন্ধ বাথিতে চায় না। বৈদ্যনাথ আসিয়া দোকানে বসিবে। বেকার রসিক বৈদ্যনাথ । শঙ্কুর যে ছোট ভাই এবং যে দুপুর রোদে উঠানে ধানের মরাইয়ের আড়ালে দাড়াইয়। বৌয়ের সঙ্গে হাসাহাসি করে । শত্ত্বও একfদম বেকার ছিল, বড়ও ছিল শঙ্কুর,—ছাকড় গাড়ীর ঘোড়ার মত

  • , 'ఖx41