পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদ্যাসাগর-স্মৃতি শ্ৰীশশিভূষণ বস্তু অনেক দিন পূৰ্ব্বে যখন আমি প্রযুক্ত হেরম্বচন্দ্র মৈত্রের বাটতে থাকিতাম, তখন একদিন মধ্যাহ্নকালে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয় ঐ বাড়ীতে আসিয়া উপস্থিত হন । উদ্দেশু, হেরম্বচন্দ্রের সঠিত কোন বিষয়ে একটু কথা বলা । সে সময় হেরম্ববাবুর বুদ্ধ পিতা তাহাদিগের হিজ লংবট নামক গ্রাম হইতে আসিয়া পুত্রের সঙ্গে বাস করিতেছিলেন । বিদ্যাসাগর মহাশয় হঠাৎ উপস্থিত হইলে আমরা সকলেই ঐ মহাপুরুষের প্রতি যথোচিত সম্মান প্রদর্শন পূর্বক তাহকে বসিবার আসন প্রদান করিলাম। হেরম্ববাবুর পিত! চন্দমোহন মৈত্র মহাশয়ের সঙ্গে পূর্বে তাহার বিশেষ আলাপ-পরিচয় ছিল । বিদ্যাসাগর মহাশয় বৃদ্ধ মৈত্র মহাশয়কে দেখিয়া বিশেষ প্রীতি লাভ করিলেন, মৈত্র মঙ্গশয়ওঁ এত বড় লোকের আগমনে হৃদয়ের বিশেষ আনন্দ জ্ঞাপন করিলেন । যাহার। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট কখনও বসিয়া তাহার কথাবাৰ্ত্ত শ্রবণ করিয়াছেন, তাহার জানেন তিনি এক জন খুব গল্পে লোক ছিলেন। তিনি সেদিন একটি উচ্চ আসনে বসিয় তাহার স্বভাবস্থলভ মিষ্ট ভাষায় তাহরে জীবনের নানারূপ অভিজ্ঞতার কথা বলিতে আরম্ভ করিলেন । আমরা সকলেই নিম্নে বসিয়া তাহার কথা শুনিতে লাগিলাম। ঈশ্বরচন্দ্র কিরূপ তেজী পুরুষ ছিলেন, তাহ; তাহার জীবনী পাঠে সকলেই অবগত আছেন । সেদিন তাহার কাহিনীর মধ্যে র্তাহার নিভীকতার ও স্বাবলম্বন-শক্তিরই বিশেষ নিদর্শন যেন প্রত্যক্ষ করিতে লাগিলাম। কোন স্থানেই তিনি কাপুরুষের ন্যায় মন্তক অবনত করিবার লোক ছিলেন না। কি রাজা, কি ধনী কি বা উচ্চ পদস্থ সাহেবদিগের নিকট । সেদিন সুধাদেব পাটে বসিবার অল্প পূৰ্ব্বেই বিদ্যাসাগর মহাশয় আসন পরিত্যাগ করিয়া দাড়াইলেন। আমর! সকলে দণ্ডায়মান হইলাম। যাইবার সময় গৃহের বাহিরে

بية بسسسة وم গিয়া চাদমোহন মৈত্র মহাশয়কে একটু গোপনে কি ধেন বলিলেন, তংপরে আবার গৃহমধ্যে প্রবেশ করিলেন। তখন আমি ঘরের ভিতরেই ছিলাম । আসিয়া আমায় বলিলেন, “বাপু ! তুমি এ বাড়ীতে থাক, শুনিলাম। আমি আগামী কল্য এ বাটীর সমস্ত লোককেই আমার বাড়ীতে মধ্যাহ্নভোজনের জন্য নিমন্ত্ৰণ করিয়াছি । কিন্তু মৈত্র মহাশয় বলিলেন, তোমাকে এজন্ত বিশেষভাবেই বলা উচিত । তা তুমি কাল ইহাদের সঙ্গে গিয়া আমার বাড়ীতে দুইটি ডাল ভাত খাইবে ।’ আমি বিনীতভাবে সহাস্যমুখে বলিলাম, “অবশু আপনি আমাকে বিশেষভাবে নিমন্ত্রণ না করিলেও, আমি ইতাদের সঙ্গে গিয়া আপনার বাড়ী জাহার করিতাম।" সে স্নেহের বচন এখনও স্মরণে বেশ জাগিয়া রহিয়াছে । পরদিন মধ্যাহ্নকাল উপস্থিত হইতে-ন-হইতে আমরা নিমন্ত্রণ রক্ষার জন্য সকলেই ধাত্রা করিলাম। আমাদের গাড়ী মৃথন বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বাদুড়বাগানস্থ স্বনার ভবনের সম্মুখে উপস্থিত হইল, তখন তিনি স্বয়ং ফটকের দ্বারে আসিয় আমাদিগকে যথারীতি অভ্যর্থন করিয়া লইলেন । মহিলারা গাড়ী হইতে নামিলে, তিনি দুই একটি শিশুকে নিজে কোলে করিয়া লইলেন । আমরা ভবনে প্রবেশ করিলাম । অল্পক্ষণ পরেই আহারে বসিলাম ! মহিলাদিগের থাইবার স্থান অবস্তু অন্যত্রই হইয়াছিল । আমরা ভোজনে বসিলে, বিদ্যাসাগর মহাশয় একটি মোডার উপর আমাদিগের নিকট উপবেশন করিলেন, করিয়ু বলিলেন, “আমি পীড়িত, অম্বলের পীড়ায় ভূগিতেছি, তাই আমি ১•টার সময় আহাৰ করি, সেজন্য বাপু তোমরা কিছু মনে করিও না।" আহারের আয়োজন দেখিয় আমরা অবাক হইলাম , স্বধী হইলাম । প্রত্যেকেরই প্রকাও প্রকাও থালার উপর সুন্দর চাউলের অন্ন ও খালাগুলি চারিদিকে বাঞ্চনপূর্ণ বহু বাটিতে বেষ্টিত । বিদ্যাসাগর মহাশয় বেশ স্বরসিক পুরুষ ছিলেন। জামরা