পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Շ6:Հ প্রৰণসী ృN98\లి সৌভাগ্যবতীদের সৌভাগ্য ঘোষণা করিয়৷ মাঙ্গলিক শঙ্খ বাজিয়া উঠে, বহুকষ্ঠের হুলুধ্বনি শোনা যায় এবং সানাইয়ের রাগিণী-আলাপ, হাসি-আনন্দের টুকরা সব-কিছুই এই নিরালোক দেশের অধিবাসিনীদের চোখে মরীচিকার মত ফুটিয়া উঠিয়া বিভ্রম জন্মায়। তাহারা জানে ও-জগৎ হইতে বহুদিন হইল তাহাদের নির্বাসন ঘটিয়াছে। বৃথা ওদিকে চাহিয়া হৃদয়ের বারিধিতে ঢেউ তুলিয় চোখের কোণ ভিজাইয়া লাভ কি ? আলো যেখানে দুষ্প্রাপ্য সেখানে অন্ধকারকে মন-প্রাণ দিয়া না লইয়া উপায় কি ! --- আলোককে উপহাস করিয়া তাই তাহারা অন্ধকারকে ভালবাসিতে চেষ্টা করে। বিবাহের কথা শুনিয়া তাই প্রতিবেশিনীদের হাসি জত উচ্ছসিত হইয়া উঠিয়াছিল। গেীরীর মা কিন্তু সে হাসি গায়ে মাখিল না, মেয়ের সৌন্দৰ্য্যসাধনে যত্নবর্তী হইল । একে ত এই অন্ধকার খোলার ঘর-পরিচয়-কৌলীম্ভের গৰ্ব্ব করিবার কিছু নাই। সে জানে, ওপারের আলো আসিয়। এ-পারের অন্ধকারাবৃত অঙ্গন কোন দিনই উজ্জল করিয়া তুলিবে না, তবু আশা ! এ শহর কলিকাতা, সমাজবন্ধনের মধ্যে কেহ সাধ করিয়৷ মাথা গঙ্গাইতে চাহে না, অসবর্ণ বিবাহের ঢেউ রীতিমত উত্তাল । কাগজে বা বইয়ে সে প্রায়ই পড়িতেছে, লোকের মুখেও শোনা যাইতেছে—কত বিদ্বান গুণবান কৃতী যুবক মাত্র রূপের নেশায় ভালবাসিয়া এমনই কুমারী কন্যার পাণিগ্রহণ করিয়াছে। যদি কোন শুভ মুহূর্বে প্রজাপতির রঙীন পাথায় ভর করিয়া আলোর এক টুকরা—এই অন্ধকারের বুকে অতর্কিতে আসিয়া পড়ে.হেমাঙ্গিনীর কল্পনা দিনের পর দিন সেই সোনালী আলোর স্বপ্নে বিভোর হইয়। থাকে ।• • • গৌরীর বাপের নাম শম্ভু ! লোকট রোগ হইলেও স্বাস্থ্যবঞ্চিত নহে এবং সৰ্ব্বদা রুক্ষ মেজাজেও থাকে না । ফলের ঝুড়ি মাথায় করিয়া ফিরি করে বলিয়াই হয়ত অস্তর তার স্বাদুতায় ভরা। হেমাঙ্গিনার খামখেয়ালে সে বাধা দেয় না, বরং খুশী হইয়া বাহিরের দুয়ারে বসিয়া তামাক টানিতে টানিতে গরুর পানে চাহিয়া প্রশ্ন করে, ইঁ্য রে হিমি, গরুটা আগের চেয়ে যেন চেকুনাই দিয়েছে, না রে ;– ভিতর হইতে অসুযোগভর কণ্ঠস্বর ভাসিয়া আসে, আঞ্জ মঙ্গলবার, অমন ক’রে চোখ দিয়ে না বলছি । —ন, তাই বলছি। বলিয় প্রসন্ন মনে শস্থ তামাক টানিতে থাকে । গৌরী আসিয়া পিঠের কাছে দাড়াইয়া আন্ধার ধরে, কই, আমার পাউডার আনলে না, বাবা । শঙ্কু মেয়ের দিকে ফিরিয়া বলে, ছাই পাউডার । তোর এমন গোলাপ ফুলের মত রং - কি হবে ও ছাইভস্ম মেখে ! —না—আ-আ,—মেয়ে স্বর টানিবার উপক্রম করিতেই শতু তাড়াতাড়ি হকা নামাইয় তাহাকে কোলের কাছে টানিয়া আনিয়া আদর করিয়া বলে, হবে রে হবে । ভাল একঝুড়ি ল্যাংড়া আম আছে, কাল বেচে যা লাভ হবে-আগে তোর পাউডার—তার পর— গৌরী আনন্দে বাপের গলা জড়াইয়া ধরিয়া বলে, তুমি খুব—খুব ভাল, বাবা । শতু তামাক টানা বন্ধ করিয়া একবার গরু, একবার গৌরীর পানে চাহিয়া কত কি ভাবিতে থাকে । 磷 襲 壽 এমনি করিয়া কিছু দিন যায়। ক্ষুদ্র কুটীরে অত্যাসন্ন শুভলগ্নের প্রতীক্ষায় শম্ভু ও হেমাঙ্গিনী রীতিমত চঞ্চল হইয়া উঠিয়াছে। এই মাসেই গরুর বাছুর হইবে। দুধের একটা লাভজনক পরিমাণ এবং বিক্রয়ের পড়ত। ধরিয়া মোট টাকার অঙ্কটিকে লইয়া দুষ্ট জনেই মনে মনে কত কি ভাঙাগড় করিতেছে । গরুর দু-পাশে দাড়াইয়া সকাঙ্গ, সন্ধা! ও রাত্রিতে তাহাদের আকাশ-কুসুম চয়ন চলে । শত্ব বলে, লাউ খাওয়াতে পারলে নাকি গরুর দুধ ডবল হয় । হেমাঙ্গিনী বলে, ভাত ফেন দিলেও মন বাড়ে ন! । তার চেয়ে এক কাজ করলে হয়—কলাই-সেদ্ধ দেওয়া যাবে ধর যদি আট সের দুধ হয়--তার এক সের রাখব ঘরে— আর সাত সের বিক্ৰী ক'রে— দুধ বিক্রয় করিয়! কি হইবে—সে-সব অনতিরঞ্জিত দীদ কাহিনীর পুনরুক্তি নিম্প্রয়োজন । কখনও ধানের জমি কেন হয়, কখনও চালার বদলে কোঠ উঠে, কখনও হেমাঙ্গিনীর অলঙ্কারের ফর্দ তৈয়ারী হয়—কখনও ব। গৌরীর বিবাহ লইয়া রঙে রেখায় স্বধৃঢ় ভবিষ্যতের ছবি অশকা চলে । চঞ্চল মেয়েটি এ-সব সাংসারিক সুখসাধের তথ্য হৃদয়ঙ্গম করিত ন পারিলেও অপরিণত বুদ্ধি দিয়া অনুভব করে,—একটা কিছু শুভ আবির্ভাবে বাবা ম তাহার উৎফুল্প হইয়ু উঠিয়াড়ে এবং সন্দেশ ধাওয়ার মত সেই লোভনীয় ব্যাপারটা যে করে ঘটিবে তাতারই ব্যগ্র প্রতীক্ষায় চক্ষু দুইটিতে তাহার আনন্য উপচিয়া পড়ে । গরুটিকে কেন্দ্র করিয়! ওই বাড়ীতে উৎসবের সাড়া পড়িয়া গিয়াছে এবং সব কয়টি প্রোণীই ত্বরান্বিত হইয়! সেই দীর্ঘদিন-লাঞ্ছিত সুমারের প্রতীক্ষা করিতেছে। 襲 襲 襲 এমনই শুভদিনের স্বচনায় সঙ্কীর্ণ গলির মধ্যে দেবদূতের মত যে আসিল—তার আগমনের হেতুটা আগে বলি । গলি হইতে মিনিট-খানেকের পথ বড় রাস্ত এবং তার পরেই গোলদীঘি । সকালে বিকালে এই চতুষ্কোণ দীঘির চারি ধারে যে-সব স্বাস্থ্যকামী দ্রুত পায়চারি করিয়া বিশুদ্ধ (?) বায়ু সেবন করিয়া থাকেন ছেলেটি তাহাদেরই অন্যতম । গৌরী ড প্রত্যহ