পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

پ: «منیتی ബ്-- -- سہ،بہ ভাদ্র নিখিলনাথ অবাক হয়ে সত্যবানকে দেখছিল। সেই স্বদ্যুপেশী, ছ-ফুট লম্ব, বুক চওড়া, নিৰ্ভীক দেশভক্ত সত্যদা ; তাদের দলের নেতা, সে কি এই ! তখনকার দিনে সত্যদাকে কি ভালই বাস্ত সকলে । সত্যদার একট। হুকুমে অনায়াসে প্রাণ তুচ্ছ করতে পার। ওদের পক্ষে কিছুই কঠিন ব্যাপার ছিল না । নিখিলের চোখ দিয়ে জল পড়তে লাগ,ল । “সত্যদা কেমন ক'রে এ দশা তোমার হ’ল ? তোমাকে ত ধরতে পারে নি ?” সত্য বললে, “ছিঃ ভাই নিখিল ! তুই এমন দুৰ্ব্বল হয়ে গেছিস্ ! চোখের জল ফেলছিস্ ! ছিঃ !” বলে সে সস্নেহে নিখিলের হাতে হাত বুলোতে বুলোতে বললে, “ধরতে পারে নি বটে, কিন্তু যাদের ধরেছিল তারাই বুঝি বেঁচে গেছে রে। কি ক’রে যে আমাদের দিন কেটেছে পাচটা বছর তা বলতে পারি নে। তারপর ভেলোয়ারের জঙ্গলে ভগবান মুখ তুলে চাইলে । পুলিসের সঙ্গে লড়াইয়ে আমাদের সব ক’জনই মারা গিয়েছিল, কেবল দু দুটো গুলির চোট থেয়েও এই প্রাণটা বের হয়নি।” বলে সত্যবান মোটামুটি সংক্ষেপে নিজেদের কথা বলতে লাগ ল । অল্প একটু বলে সে বারংবার শ্রাস্ত হয়ে পড়ল। নিখিলের নিষেধে কিছুই ফল হ’ল না । অগত্য নিখিল চুপ করে শুনে গেল । ২৩ সেদিন বৃহস্পতিবার । নন্দ অজয়কে নিয়ে কমলার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছে । কমলা নন্দকে বললে, “দেখুন, এখন আমি অনায়াসে বাড়ী গিয়ে থোকাকে দেখে আসতে পারি, তাতে দিদির সঙ্গেও দেখা হয় ; আর আপনাকেও কাজের ক্ষতি ক'রে ওকে নিয়ে ছুটোছুটি করতে হয় না।” নন্দ বললে, “ভারি ত সপ্তাহে দু-এক দিন । এতে আর আমার কাজের কিহ বা ক্ষতি হবে ? আর তা ছাড়া সমস্ত সময়ট জুড়েই ত কাজ আমাকে ঘিরে থাকে ; থেকে মুক্তি পেয়ে অল্প এই সময়টুকু তবু একটু ইপি ছেড়ে ধাঁচবার অবসর পাই । আর বাড়ীতে গেলে তোমার দিদির ভার মানুষের মন శ్రీశ్రీ* অাচলের তলায় তুমি এমনি গ-ঢাকা দাও যে তোমার ত ঠিকানাই পাওয়া যায় না ।” “তা কি করব। দিদি বেচারী একলা একলা চিরটা কাল দাসীবৃত্তি করে মরল । তার উপর ত থোকার দৌরাত্ম্য আছেই ।” “আর আমাদের খাটুনিটা বুঝি দেখতে পাণ্ড না । সকাল থেকে জিন ক’ধে এই ব্যবসার বোঝা টেনে টেনে হয়রান হয়ে যাচ্ছি। লাগামটা খুলে ছুটে সরস তৃণখণ্ড মুখে করে মুখের তারটা বদলাব, তা বুঝি আর সহ হয় না। চিরটা কাল ঘরে ফিরে আমার সেই দানা ছাড়া বুঝি আর গতি নেই ।” কথায় এমন স্পষ্ট ইঙ্গিত নন্দলাল ইতিপূৰ্ব্বে কোন দিন করে নি। কথাটা বলে যেমন তার সঙ্কোচ হ'ল, কথাটা বলে ফেলতে পেরে তার মনের অনেক দিনকার প্রচ্ছন্ন একট অত্যন্ত অস্বস্তিকর ভার যেন অনেকটা লঘু বোধ করতে লাগল। আসলে চিত্ত তার অন্তরে অস্তরে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল। চিরকাল এমনি একটা মূক অভিব্যক্তিহীন জড়ভার অনিশ্চয়তার চাপে হৃদয়ের সমস্ত ক্ষুধাকে নিস্পিষ্ট করে মারতে হবে সংসারের এই বা কি নিয়ম ! প্রকৃতির অপরাজেয় বুভুক্ষর নিরস্তর তাড়নার বিরুদ্ধে তার সামাজিক ভদ্রতায় অভ্যস্ত অস্তঃকরণ যুদ্ধ করে করে শ্রান্ত হয়ে পড়েছিল । কত দিন সে আর সকলের মুখ চেয়ে নিজেকে এমন করে বঞ্চিত করতে পারে । তাই সে আজ এই সামান্য ইঙ্গিতটুকু করেও যেন একটু স্বস্তি অনুভব করলে । রক্তমোক্ষণ করে নিলে রক্তের চাপে ব্যথিতমস্তিষ্ক রোগী যেমন আরাম পায় । কমলার মুখর কোন পরিবর্তন হ’ল না। মন্দলাল অনেক লক্ষ্য করেও বুঝতে পরলে না যে কথাগুলো জ্যোংস্কার মনে কোন ভাবাম্বর জন্মিয়েছে কিনা। কমল সহজ করুণার স্বরেই বললে “সত্যিই আপনাকে খুব খাটুতে হয়। সেই সকাল থেকে সন্ধে অবধি বিশ্রামের সময় ত পানই ন, তার ওপর খোকনকে নিয়ে যদি দৌড়াদৌড়ি কর ত হয় – তাই বলছিলাম, যে এখন ত নিজেই আমি আপনার বাড়ী যেতে পারি ; আপনার কষ্ট হয়, তাই ভেবেই বলেছিলাম । তা ছাড়া সত্যিই দিদির সঙ্গে দেখা ত হয়েই ওঠে না । সে