(ԵՆԵ প্রৰণসী ゞう経NS) বেচারার সেই রান্না আর ভাড়ারের আবর্জনা ঠেলেই প্রাণটা গেল। আপনারা তবু ইচ্ছে করলেই দশটা জায়গায় যেতে পারেন, দশ-খানা বই পড়ে মনের খোরাক বদলাতে পারেন। দিদির ত তাও নেক্ট । তাই ইচ্ছে করে, গিয়ে তার সঙ্গে মাঝে মাঝে গল্পগাছা ক'রে তার মনটাকে একটু বিশ্রাম দিতে !”
- তবেই হয়েছে, তা আর দিতে হয় না। মনে নেই বই পড়ে শোনাতে গেলে হয় নাক ডাকিয়ে পড়ে ঘুম দিত, আর না হয় ঐ বাসনগুলো বুঝি ভগলু ফেলে দিলে "ঐ যাঃ, খোকনকে দুধ খাওয়ানে হয় নি' বলে সরে পড়ত। মাছটা জলের থেকে ডাঙায় ওঠালে তার বায়ুপরিবর্তন হয় বটে, তবে কিছু উৎকট রকমই হয় । প্রকৃতি সকলের জন্তেই এক ব্যবস্থা করেন নি, বুঝলে ? ব্যবস্থাটা হয় স্ব ভাব অনুসারে । স্বভাব কারুর স্থাবর, কারুর জঙ্গম। কাউকে টেনে বাড়ী থেকে বার করা যায় না, আবার কেউ বা একদণ্ড বাড়ীতে তিষ্ঠতে পারে না।
“যেমন আপনি, না ? বাড়ীতে তিষ্ঠোতে পারেন না !" “বাপ তোমার দিদির দাপটে তিষ্ঠোবার যে আছে ? বাড়ীতে ঢুকেছ কি সংসারের এক কাহন ফর্দ আর নালিশ আর কৈফিয়ৎ ।”
- ই্য তা বহুকি । দিনরাত কোথায় আপনার ত্রিফলার জল, কোথায় মিশ্রির জল, আপনি কি খাবার ভালবাসেন এই সব ক'রে ক’রে মরে কিনা । দিদি টিক টিক না করলে ত স্নানটা পৰ্য্যস্ত ভাল ক'রে করেন না, ময়লা কাপড়ের উপর ধোপজাম পরে বেরিয়ে যেতেও বাধে না। নখগুলো পর্য্যন্ত দিদি ধরে কেটে দিলে তবে কাটা হয় ।
“শেষটা করে আত্মরক্ষার্থে, বুঝলে কিনা—” কমলা হেসে বললে, “কেন দিদিকে কি খামচে দেবার ভয় দেখান নাকি ?” “ন শ্বাপদসঙ্কুল জায়গায় বসবাস করতে হ'লে সশস্ত্র থাকতে হয় ।” “ষ্ঠ্য। তাই ত, আমরা সব শ্বাপদ, আর আপনি ? “আপদ, মাঝে মাঝে আসি বলে বিদায় দেবার ফলী অ্যাটছিলে এক্ষুনি ।” এবারেও বাণ লক্ষ্যভ্রষ্ট হ'ল । কমলা কথায় কিছুমাত্র কৰ্ণপাত না করে উঠে বললে, “একটু বম্বন, দিদির জন্তে একটা জিনিষ দেব, নিয়ে যাবেন।” এই বলে সে খোকনকে নিয়ে ভিত্তরে চলে গেল । নন্দলাল এবার মনে মনে একটু লজ্জিত এবং নিজের উপর এক রকম বিরক্তই হ'ল। সে চুপ করে বসে ভাবতে লাগল, এমন সময় ঘরে এসে ঢুকূল নিখিলনাখ। ૨.8 সতেজ সরল দেহ, উন্নত ললাটে প্রতিভার দীপ্তি। তার গঠনের মধ্যে, তার গতিভঙ্গীতে এবং তার অযত্নস্যস্ত ঈষৎ তরঙ্গিত কেশবিন্যাসে যে একটি স্বাতস্থ্যের একটি জ্ঞানীজনস্থলভ আভিজাত্যের প্রভাব পরিস্ফুট হয়েছে সেইটেই সকলের চোখে পড়ে। দেখলেই মনে হয় লোকটি জনতার মধ্যে থেকেও জনতা থেকে স্বতন্ত্র ও স্বৰ্দর । একে অবহেলা করবার মত ধৃষ্টতা সঞ্চয় করা চলে না, আবার এর সঙ্গে সহসা আত্মীয়তা করতে অগ্রসর হওয়াও যেন ধৃষ্টত । ইংরেজী পোষাকটাও এর অঙ্গে একটি বৈশিষ্ট্য লাভ করেছে । নিখিলনাথ ঘরে ঢুকতে নন্দলাল নিজের অজ্ঞাতসারেই চেয়ার ছেড়ে দাড়িয়ে উঠল। কেন জানি না, সে একটু অস্বস্তি বোধ করতে লাগল মনে মনে এবং এই লোকটির সামনে নিজেকে কেমন খেলে মনে হ'তে লাগল। নিজের এই চাঞ্চল্যে বিরক্ত হয়ে, নিজের আহত আত্মমর্য্যাদাটুকুকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবার জন্তেই বোধ করি, সে উদ্ধতভাবে গিয়ে আবার চেয়ারে চেপে বসল। পূর্কের সামান্য পরিচয় সত্ত্বেও কোন প্রকার সময়োচিত সম্ভাষণ তার মুখ থেকে বেরতে চাইল না, এবং অকারণেই অত্যন্ত অস্বস্তির সঙ্গে মনে হ’তে লাগল যে জ্যোৎস্নার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসার জন্যে এই লোকটার কাছে একটা কৈফিয়ৎ দিতে হবে। মনটা তার বিদ্রোহী হয়ে উঠতে চাইলে । নিখিলনাথের দিক থেকে জানলার দিকে মুখ করে সে কাঠ হয়ে বসে রইল এবং একটা সঙ্গত কৈফিয়ৎ খাড়া করে তুলতে কেনই যে সে নিজের অগোচরে মাথা ঘামাতে লাগল তা পরে নিজেই সে বুঝতে পারলে না । নিখিলনাথ শাস্তস্বরে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনাকে এখানে আর এক দিন দেখেছি, না ? আপনি ত জ্যোৎস্ন! দেবীর কাছে এসেছেন? দরোয়ানকে বলেছেন ত ?”