পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীর্তন 3)جمعيقا ভাদ্র মধুর বৃন্দ বিপিন মধুরী প্রবেশ-চাতুরী সার । বরজ-যুবতী ভাবের ভকতি শকতি হইত কায় । পুনশ্চ যথা, প্রেম বলি নাম অতি অদভুত শ্রত হইত কার কালে । বৃন্দ-বিপিনের মহা মধূরিম। প্রবেশ হইত কার । কেল জানাইত রাধার মাধুৰ্য্য রস যশ চমৎকার । তlর অসুভব সাত্ত্বিক বিকীর গোচর স্থি ব কার । কহে প্রেমাননা এমন গৌরাঙ্গ অস্তরে ধরিয় দে{ল । “কাঞ্চনের’’ মুখপাতে রহিয়াছেন এই শ্রীচৈতন্য । যে পাল কীৰ্ত্তন হইবে ( রূপান্নুরাগ, মান, মাথুর ইত্যাদি ), ঠিক তদনুরূপ রাধা-ভাব কিরূপ ফুটিত, তাহারই প্রকট-রূপী আদর্শ বা আলেখ্য রূপে কীৰ্ত্তনের মুখে বিরাজমান শ্ৰীগৌরচন্দ্র। শল বিশ্বনাথ চক্রবর্তী এই অভিনব ভজনের নাম দিয়াছেন “কাচিং রম্য উপাসন বা ব্ৰজবধুবর্গেন কল্পিত,” ইহা এক “রম্য উপাসন শাহ ব্ৰজ-গোপী কর্তৃক অন্তষ্ঠিত । শীরূপগোস্বামী বলিয়াছেন, শ্রীকৃষ্ণের ব্রজলীলা-কথা সংসারতাপ-দগ্ধ জনগণের চির-তৃষাহরা পরম শাস্তিদায়িনী "হরিলীল-শিখরিণী” । তৃষ্ণ-নিবারিণী পরম উপাদেয় সুপেযু ) 1 'শীল কৃষ্ণদাস কবিরাজ মহাশয়, শচৈতন্যচরিতামৃতে একটি ধন্দনায় বিশুদ্ধ শচৈতন্যতত্ত্ব এক কথায় অতি সুন্দর প্রকটন করিয়াছেন :--- বন্দে কৃষ্ণচৈতহং কৃষ্ণভাব মুতং য: | অস্বাদ্যাথদ্বয়ম্ ভক্তান প্রেম-দীক্ষামশিক্ষরৎ ॥ ধিনি কৃষ্ণভাবামুত । উন্নতোজ্জল রস I আস্বাদন করিয়া এবং ভক্তগণকে আস্বাদন করাইয়া, প্রেম-দীক্ষা অর্থাৎ শুদ্ধপ্রীতি-মূল ভজনপ্রণালীবিষয়ক দীক্ষা বা দিব্য জ্ঞান দিয়াছিলেন, সেই শ্ৰীকৃষ্ণ-চৈতন্যকে বন্দনা করি । শ্রীচৈতন্যের রাধা-ভাব-ভাবিত বিশুদ্ধ চিত্রটি হইল কীৰ্ত্তনের প্রাণ এবং ‘শুদ্ধ গৌরচন্দ্র’ ( 'গৌরচন্দ্ৰিক' ) হঠল কীৰ্ত্তনের প্রবেশিক স্বরূপ এবং ইহার উপরেই কীৰ্ত্তনের ফলাফল নির্ভর করে । "গৌরচন্দ্রিকা” ঠিক ভাবে ন ধরিলে, কীৰ্ত্তন “রম্য। উপাসনা’ না হইয়া, হয় কামকেলি-বিলাস ; “হরিলীলাশিখরিণী” না হইয়া হয় নাগরীপনা ও দুতিয়ালীর ছড়াছড়ি, অমৃতের বদলে কেবলই গরল, ইষ্টের বদলে কেবলই অনিষ্ট । সাধে কি, বঙ্কিমচন্দ্রের মনে খটুকী লাগিয়াছিল এবং তিনি নাম দিয়াছিলেন, “মদন-মহোৎসব" । সাধনার পথ “শাণিত ক্ষুরধারের ন্যায়,” এই ঋষি-বাক্য কীৰ্ত্তন সম্বন্ধে যেমন খাটে, এমন বুঝি আর কোথায়ও নহে । সত্যই, এক দিকে প্রেমের মহনীয় স্বরূপ, অন্য দিকে আবার এক চুল এদিক-সেদিক হইলেই কাম-বিলাসের কদৰ্য্য আবিলত ! কাম, ‘মদন,’ ‘মন্মথ, অভিসার, “নিকুঞ্জমিলন, ‘কেলি-বিলাস, পরকীয় রতি প্রভৃতি নানা প্রাকৃত বর্ণন ও লৌকিক ভাষার বহু প্রচলন আছে । অথচ, ইহার পশ্চাতে এবং মূল একটা দিব্য অ-প্রাকৃত ভাব আছে, এবং এই দিব্য ভাব আছে বলিয়াই এই রসকে বলা হয় উন্নতোজ্জল রস, কৃষ্ণকে বলা হয় “অপ্রাকৃত নবীনমদন,” আরও বেশ বলা হয় “সাক্ষাৎ মন্মথমথম” মদন-মোহন’ অর্থাৎ, সেখানে মদনের মধনত্ব পরাভূত, কাম পরাস্ত, কামের কামত্ব লোপ পাইয়া প্রেমে পরিণত । শ্রীচৈতন্য তারস্বরে ঘোযণা করিয়াছেন যে ‘স্বরূপত:, হইতেছে নিত্য কৃষ্ণ-দাস-কুষ্ণই একমাত্র ভোক্ত ও সেব জীব দাস, সেবক হত্যাদি । ঐচৈতন্য নিজকে গণ্য করিতেন “গোপীভৰ্ত্ত : চরণকমলয়ো দাস-দাসানুদাসঃ” অর্থাৎ গোপীজন-বল্লভ শ্রীকৃষ্ণের চরণ-সেবকের দাসকুদাস । তিনি ক্লষ্ণ সাজিতে আসেন নাই, কিংবা কখনও নাগরীলীর অভিনয় করেন নাই বা ঐ শিক্ষা ,কি آی}غ}ى জীব বা আচরণ প্রকটন বা সমর্থন করেন নাই । বুন্দাবনদাস-রচিত চৈতন্য-ভাগবতে’ স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে শইচভন্ত সম্বন্ধে নদীয়-মাগরালী আরোপণ সৰ্ব্বথা নিষিদ্ধ ও দূষণায় । ఙ ইও নবধৰ্ম্ম (নব বৃন্দাবন), বাংলার প্ৰেম-ধৰ্ম্ম বা কৃষ্ণ-ভজন—এক জগদুলভ দিব্য পবিত্র বস্থ, বিশ্বজগতে সৰ্ব্বসাধারণের গ্রহণীয় উদার সাৰ্ব্বভৌমিক তত্ত্ব । মহাজনপদাবলী, বৈষ্ণব শাস্ত্র (ফিলজফি) ও কীৰ্ত্তন---এই তিনটি হইল উহার প্রধান উপাদান, বাহন ও সাধন ।