পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাদ্র অলখ-বে{ণরণ ראלף সুরধুনী আগেই উঠিয়া বসিয়ু ভীত উদ্বিগ্ন কণ্ঠে বললেন, "এত রাত্রে মা কেন ডাকাডাকি করছেন ? পুরনো ফাট বাড়ী, সাপথোপ বেরোল নাকি কে জানে ? রাজ্যের ছেলে মেয়ে ত শুয়েছে চার পাশে ।” বলিতে বলিতেই ঘরের কোণের অৰ্দ্ধনির্বাপিত হারিকেন আলো এবং দেয়ালে-ঠেসালে একট। পেয়ার গাছের ছড়ি লইয়। তিনি ছুটিলেন । মহামায়াও দ্রুত দিদির পিছনে চলিলেন । ভুবনেশ্বরীর ছাপর থাটে বিচিত্র ভঙ্গীতে কু গুলী পাকাইয় এ উহার ঘাড়ে প দিয়া ছেলেরা ঘুমাইয়া 'ড়িয়াছে, কেবল সুধ ও আর একটি মেয়ে অন্ধকারের মধ্যে বড় বড় চোখ বাহির করিয়া ভৗত বিস্মিত মুখে উঠিয় বসিয়াছে । দেয়ালের গায়ে প্রদাপের আলোতে বড় বড় ছায় পড়িয় ঘরটা রহস্যময় হইয় উঠয়াছে । ভুবনেশ্বরীর মাথার ময়ূর-মিথুনের গা স্বল্প আলোতেও চকচক করিতেছে । যেন শিশুদের ভীতি দেখিয় তাহারাও সজাগ হইয়া উঠিয়াছে । স্বরধুনী মাতব মুখের কাছে অগ্রসর হইয়া আসিয়া ব্যগ্র ভাবে বলিলেন, “কি হয়েছে ম: ? আমন ডাকাডাকি করছিলে যে ? স্বপনটপন কিছু দেখেছ বুঝি ? শোও শোও, এখনও অনেক রাত " মা শুহয়৷ রহিলেন, কোনও জবাব দিলেন মা । মহামায়া কোলের কাছে ধেসিয়া মার মাথায় হাত দিয়া সস্নেহে বলিলেন, “কথা বল মা ? কি হয়েছে তোমার, অসুখ করেছে ?” কাছে কাঠের ম৷ বলিলেন, “ছেলেপিলেগুলোকে সরিয়ে নিয়ে যা, আর তোর বাপকে একবার ডেকে দে ।” মহামায়ু বলিলেন, “তা নয় ডাকলাম, কিন্তু কি হয়েছে আগে বল ।” মা বলিলেন, “শরীরটা ভাল লাগছে না, একটা পাশ অবশ হয়ে এসেছে । আমার বোধ হয় আর দেরী নেহ ।” “কি যে বল মা, তার ঠিক নেই” বলিয়। স্বরধুনী বৈঠকখানা ঘরে লক্ষ্মণচন্দ্রকে ডাকিয় তুলিতে গেলেন । তাহার ডাকাডাকিতে পাশের ঘরে ভাই-ভাজদের ঘুম ভাঙিয়া গেল। বড় বেী ও মেজ বেী অৰ্দ্ধমুদিত চক্ষে ভ্ৰকুঞ্চিত করিয়া চোথের উপর হাত আড়াল করিয়া বাহির হইয়া আসিলেন । বড় ভাই কোমরের কাপড়টা অণটিতে অাটিতে গজাহতে গজাহতে বাহির হইলেন, “দুপুর রাত্রে সব হৈ হৈ লাগিয়ে দিয়েছে, ডাকাত পড়েছে নাকি বাড়ীতে ? আচ্ছ হ্যাঙ্গাম! থেটেখুটে এসে একটু ঘুমোবার জে! মেই ।” সুরধুনী বলিলেন, “মা'র অসুখ করেছে দেখতে পাচ্ছ মা ! শুধু শুধু কি আর তোমাদের কাচা ঘুমে বাগড় দিতে গিয়েছিলাম ?” মেজ ভাই বলিলেন, “কি হয়েছে মা ? আবার বুঝি এ ছাইভস্ম গুগলিফুগলি খেয়ে পেট নামিয়েছে ! যত বরণ করি যে বুড়ে বয়েসে ওসব জঞ্জালগুলো গিলে না, তত তোমার ওই দিকেই লোভ।” মহামায় বলিলেন, “মা দাদা না, পেট মামায় নি, তবে চেযে বেশ অসুখ । গায়ে হাত দিয়ে দেথ । একটা দিক যেন কেমন হয়ে গিয়েছে । কবরেঞ্জ মশায়কে ডাকলে sy 笠 る বড় ভাই বলিলেন, “এই তিন পহর প্রাতে তাকে আন কি সহজ ? কাল সকালবেল ডেকে আনব’খন । বাতট: চুপচাপ ক’রে কোনও রকমে কাটিয়ে দাও।” লক্ষ্মণচন্দ্র ততক্ষণে শিয়রের কাছে আসিয়া দাড়াইয়াছেন। স্বরধুনী ব্যস্ত হইয় তাহাকে বললেন, “বাবা, রাত কাটামো টাটানো কোনও কাজের কথা নয় । তুমি যেমন ক'রে হোক একবার খবর দাও ;" অগতা! মেজ ছেলে গোপাল গায়ে একটা চাদর জড়াইয়া লণ্ঠন লইয়া জনহীন পথে অগ্রসর হইলেন । গুহিণী ভুবনেশ্বরী মাম হাসি হাসিয়া বলিলেন, “কবরেজের বডিতে আমার কিছু হবে ন গো । আমার ডাক এসেছে, আজকের তিথিটা দেখ আর তুমি একবার পায়ের ধূলো মাথায় ঠেকিয়ে দাও, তোমার কাছে গুগনে অজ্ঞানে কত দোষ করেছি ক্ষমা ক’রে ” লক্ষ্মণচন্দ্র ভূবনেশ্বরীর মাথার কাছে আসিয়া বসিলেন । তাহার চোখের দৃষ্টি ঘসাকাচের মত বর্ণহীন স্থির হইয়া গেল, লেলিচৰ্ম্ম যেন মুহূর্কে আরও ঝুলিয়া পড়িল । স্ত্রীর একথানা হাতের উপর হাত রাখিয়া বলিলেন, “ক্ষমা করবার