পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাদ্র শ্ৰীহট্ট মহিলাসংঘ শ্ৰীহট্ট মহিলাসংঘের তৃতীয় বর্ষের কার্য্যবিবরণী পাঠ করিয়া প্রীত হইয়াছি। এই সংঘের কাজ শিক্ষাবিভাগ, স্বাস্থ্যবিভাগ, অর্থনৈতিক বিভাগ, এবং রাষ্ট্রসেবা এই চারিটি প্রধান বিভাগে বিভক্ত। ইহার ৩টি হরিজন ও ৫টি অন্য বিদ্যালয়ে ২৩৮ জন ছাত্রছাত্ৰী শিক্ষা পায়। সংঘের তিনটি পাঠাগার আছে। ইহার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিদ্যালয় ও ধাত্রী বিদ্যালয়ও চলিতেছে। স্বাস্থ্যবিভাগ দাতব্য চিকিৎসালয় চলান এবং রোগীর শুশ্ৰুষা ও সন্তান প্রসবের পূর্বে ও পরে প্রস্থতির ও প্রসবের পর শিওর শুশ্ৰুষা করেন। অর্থনৈতিক বিভাগ শিল্প, রুষি, গোপালন, ও যৌথভণ্ডার উপবিভাগগুলিতে বিভক্ত। শিল্প উপবিভাগ প্রায় ৪২ থানা নাগ৷ র্তত চালান, নানা প্রকার সেলাই শিগান ও নানাবিধ পরিচ্ছদ প্রস্তুত করিয়া বিক্র করেন, পুরাতন কাপড় দ্বার নানা প্রকার কাথ, ন্যাপকিন ও শিশুদের নেংটি ইত্যাদি প্রস্তুত করিয়৷ বিক্রী করেন, বঁাশ কুশ বেত আদি হইতে প্রস্তুত নানাবিধ শিল্পদ্রব্য বিক্রী করেন, জেলি চাটনি মোরব্ব আচার বড়ি ডাল চিড থষ্ট নারিকেল-সন্দেশ রসগোল্লা প্রভৃতি প্রস্তুত করিয়া বিক্রী করেন, চরকার প্রচলন করেন, মাটির বাসন খেলন সন্দেশের ছাচ প্রস্তুত ও বিক্রয় করেন, ইত্যাদি। গোপালন শিক্ষাদান ও দুগ্ধাদির ব্যবসাও সংঘ করেন। কৃষিবিভাগ কৃষি শিক্ষা দেন এবং উন্নত আধুনিক প্রণালীতে শস্য এবং নানাবিধ তরিতরকারি ও ফল উৎপন্ন করিয়া বিক্রী করেন । এতদ্ব্যতীত সংঘ যৌথভাণ্ডার স্থাপন এবং রাষ্ট্রসেবাও করিয়াছেন । এইরূপ কমিষ্ঠ সংঘ সকল জেলায় প্রতিষ্ঠিত হইলে দেশের প্রভূত কল্যাণ হইবে। শ্ৰীহট্ট মহিলাসংঘের সম্পাদিক ঐযুক্ত সরল বালা দেব সামান্ত ১৫৬৫৫ ব্যয়ে যে কাজ করিয়াছেন, তাহা প্রশংসনীয়। বৰ্ত্তমান বৎসরে তিনি কাজ আরও বাড়াইতে চান এবং তাহার জন্য র্তাহার ৪৩৫৫ টাকা আবখ্যক । বদান্য দেশহিতৈষী ব্যক্তিরা এই টাকা দিলে ইহার সদ্ব্যয় হইবে বলিয়া বিশ্বাস করি। উদারচেতা ও ভারতীয়দিগের স্বশাসন অধিকার লাভের বিবিধ প্রসঙ্গ—বীর কল্যাণকুমার মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিরক্ষা "שארודי একান্ত পক্ষপাতী ব্রিটিশ রাজপুরুষদের মতে “ভারতীয়" সিভিল সার্ভিসে বড় বেশী ভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ফলে প্রবেশ করিতেছে, সুতরাং তাহারা নিছক প্রতিযোগিতার জায়গায় কিছু প্রতিযোগিতা ও কিছু মনোনয়ন (অর্থাং অনেকটা মুরুব্বির জোর ) দ্বারা "ভারতী” সিভিল সার্ভিসে চাকরি পাওয়ার ব্যবস্থা করিয়াছেন । তাহার ফলে বিস্তর ব্রিটিশ ছোকরা মনোনীত হইতে চাহিয়াছে ; অবশ্ব প্রতিযোগিতাও অনেকে করিবে । বল বাহুল্য, মনোনয়নের দ্বারটা ব্রিটিশ ছোকরাদের নিমিত্ত— যদিও তাহার গায়ে ভারতীয় যুবকদের জন্য “প্রবেশ নিষিদ্ধ” প্রকাশ্ব ভাবে লেখা না থাকিতে পারে। রয়টার খবর দিয়াছেন, ইতিমধ্যে পনর জন ব্রিটিশ ছোকর মনোনয়নের পথে সিভিল সাভিসে ঢুকিয়াছে। গত মহাযুদ্ধের সময় ইণ্ডিয়ান (অর্থাং “ভারতীয়” ) মেডিকাল সার্ভিস সম্বন্ধেও এই কৌশল অবলম্বিত হইয়াছিল —মনোনয়ম দ্বারা অনেক ডাক্তারকে এই বিভাগে লওয়া হইয়াছিল। তাহদের মধ্যে ভারতীয় ডাক্তারও কিছু ছিলেন। কিন্তু র্তাহীদের মধ্যে স্থায়ী চাকরি কয় জনের হইয়াছে ? বীর কল্যাণকুমার মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিরক্ষা স্বৰ্গীয় ডাক্তার কল্যাণকুমার মুখোপাধ্যায় প্রতিযোগিতার পথে ইণ্ডিয়ান মেডিক্যাল সার্ভিসে প্রবেশ করেন। তিনি গত মহাযুদ্ধের সময় মেসোপটেমিয়ায় কোন কোন যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত ছিলেন। তিনি গোলাগুলি বৃষ্টির মধ্যে নিজের প্রাণ তুচ্ছ করিয়া বিশেষ বীরত্ব সহকারে আহতদের প্রাণরক্ষা ও চিকিৎসা করেন । তজ্জন্য তিনি মিলিটারী ক্রস পদক পান। ভারতীয় না হইয়া তিনি ব্রিটন হইলে হয়ত ভিক্টোরিয়া ক্রস পাইতেন। তিনিই বাঙালীদের মধ্যে প্রথম মিলিটারী ক্রস পদক • পান। তিনি কুট-এল-আমারার যুদ্ধে তুর্কদের হাতে বন্দী হন এবং ১৯১৭ সালে তুরস্কের এক ক্ষুদ্র শহরে তাহার মৃত্যু হয়। তাহার বিধবা পত্নী শ্ৰীমতী বিভা দেবী তাহার হাজার টাকা দিতে চাহিয়াছেন। ঐ টাকার স্বদ হইতে