পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশ্বিন স্পেনের সন্ধানে !سو oN9ی প্রসার ও উৎকর্ষ স্পেনে ক্যাথলিক ধৰ্ম্ম ছাড়া আর কোন @ ميعد প্রভাবই সম্ভব করে তুলতে পারত কিনা সন্দেহ। এখানে মাদ্রিদে আবার ভারতবর্ষকে মনে পড়ল । পথে শিল্পের একাধারে বাহন ও বিষয়বস্তু হয়েছে ক্যাথলিক ধৰ্ম্ম, বিশেষ করে খ্ৰীষ্টের জীবনী। রাজা ও অভিজাতবর্গ বহু সম্পত্তি দেবোত্তর করেছেন, বহু শিল্পীর পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন, কারণ তাদের মনে হয়েছে যে শিল্পের প্রসারের মধ্য দিয়ে হবে ধৰ্ম্মের প্রচার। অবশ্ব ইউরোপে সব দেশেই শিল্প ও রসসৃষ্টির দিক দিয়ে ক্যাথলিকের দান বিপুল এবং প্রটেষ্টাণ্টের চেয়ে অনেক বেশী। শিল্পের দিক দিয়ে প্রটেষ্টাণ্ট স্বষ্টির চেয়ে সংহারই করেছে বেশী; বাথ (Bach) ছাড়া আর কোন প্রটেষ্টাণ্ট মন্দির-সঙ্গীতকারের নাম হঠাৎ মনেই:আসে না । কিন্তু এজন্য স্পেনকে কম দাম দিতে হয় নি। অন্য কোন:ইউরোপীয় রাষ্ট্র দেশে ও বিদেশে; ধৰ্ম্মের প্রচার ও বিস্তারের জন্য এমন ভাবে নিজের সর্বনাশ করে নি । ফ্রান্সও ক্যাথলিক হয়েছিল, কিন্তু এমন ভাবে নিজেকে রিক্ত করে নি ; এ যেন সৰ্ব্বাঙ্গকে ক্লিষ্ট অপুষ্ট রেখে মুখের প্রসাধন। ইটালীও ক্যাথলিক ছিল ও ধৰ্ম্মের ভিতর দিয়ে শিল্পের উন্নতি স্পেনের চেয়ে বোধ হয় কম করে নি, কিন্তু স্পেনের মত নিজেকে ক্যাথলিক ধৰ্ম্মের জন্য সব কিছু থেকে বঞ্চিত করে নি; স্পেন করেছে চূড়ান্ত ; তাই তার শিল্পের বিষয়বস্তুর মধ্যে পৌরাণিকতা নেই, পেগানিজম্ নেই। কি আশ্চর্য্যের বিষয়, যে-সম্রাট ধৰ্ম্মপ্রাণতার আতিশয্যে ও ধৰ্ম্মপ্রচারের প্রাবল্যে তরবারির মুখে ও জলন্ত ইন্ধনের প্রয়োগে ( Inquisition ) ক্যাথলিক ধৰ্ম্ম রক্ষা ও বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন, তার নিজের শেষ জীবন ছিল একেবারে সন্ন্যাসীর মত আড়ম্বরহীন ও দুৰ্ব্বলের মত অসহায় । এস্কোরিয়ালের গীর্জা প্রাসাদের চেয়ে বেশী সমুদ্ধ ও সুন্দর। নিয়তির পরিহাস ! শেষ বয়সের অমুস্থতার জন্য প্রাসাদের যে-কক্ষের দেওয়ালের র্যাক দিয়ে বিছানা থেকে তাকে ‘ম্যাস’ উপাসনা দেখেই তৃপ্ত থাকতে হত, সেই দীনাতিদীন ঘরটিই আজ এখানে সব চেয়ে বেশী আকর্ষণের জিনিষ ফিলিপ ছিলেন স্পেনের ঔরঙ্গজেব। বেলিনের স্বকঠিন স্ব শৃঙ্খলা নেই, লগুনের গতির স্রোতে ভেসে যাওয়া নেই। ৩১শে ডিসেম্বরের রাত্রে পুয়েভ দেল সল অর্থাৎ সূৰ্য্যতোরণে শহরের কেন্দ্রস্থলে সকলেই নববর্ষকে যেভাবে অভিনন্দিত ক’রে নিল তার মধ্যে শুধু যে আনন্দের উল্লাসই আছে তা নয়, তার মধ্যে আছে মথুরার পথে দোলের দিনের মত হল্লা ও হুল্লোড়। রাস্তায় চলতে চলতে হিস্পানীরা বন্ধুর দল পাকিয়ে এমন ভাবে পথ জুড়ে গল্প করবে যেন তাদের থাসদখল প্রমাণ হয়ে গেছে। এ যেন হটগোলের শহর ; লোকের চীৎকার ছাপিয়ে ওঠে অটোম্যাটিক ট্রাফিক সিগন্যালের আলোর সঙ্গে ঠং ঠং ক'রে ঘণ্টাধ্বনি। স্পেনের মুন্দর রাজধানীটি ছোট, কিন্তু তার ঘোষণা বেশ বড় । বিদেশী পৰ্য্যটকের কাছে স্পেনের যে সম্মানের আসন পাওয়া উচিত ছিল তা সে পায় নি। তার কারণ প্রধানতঃ দেশের অমুন্নত অবস্থা, বাহিরে বিজ্ঞাপনের অভাব ও ভিতরে রাজনীতিক বিপ্লব। নতুবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চিত্রশাল হিসাবে ‘প্রাদো’র অঙ্গনে আরও বেশী চিত্ররসিকের সমাগম হ’ত। গোইয়া, গ্রেকো, মুরিলে, ভেলাসকেথ প্রভৃতির যথাযোগ্য প্রকাশ এখনও হয় নি ব’লে মনে করি । গোইয়ার রাজবংশের চিত্রগুলিতে যে অমুসন্ধিৎসু এমন কি ক্ষমাহীন চরিত্রের বিশ্লেষণ আছে তার তুলনা কোথায়? অপেক্ষাকৃত নিম্ন শ্রেণীর চিরকর গ্যাদি ভেনিসের অধঃপতনের যুগের চিত্র অঙ্কনে যে সিদ্ধহস্ততা দেখিয়েছেন, বৃহত্তর ক্ষেত্রে গোইয়া তার চেয়ে বেশী কৃতিত্বের সঙ্গে একটি গৌরবময় যুগের শেষ সন্ধ্যায় একটি অস্তমান রাজসভার চিত্র একে গিয়েছেন। জগৎটা তার কাছে যেন একটা প্রহসন ; কখনও গম্ভীর বিরূপে: কখনও সাবলীল সরলতায় তিনি সমসাময়িক স্পেনের অন্তর উন্মুক্ত করে দেখিয়েছেন খ্ৰীষ্ট-জীবনী হচ্ছে মুরিলোর প্রধান বিযয়বস্তু এব ধৰ্ম্মমূলক এই বিষয়টিতে তিনি যে প্রাণ ও মানবে অনুভব সঞ্চার করেছেন তা ইটালীর শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পীদ্ধে মধ্যেও দুলভ । ‘যিশু ও সেণ্ট জন,’ ‘ক্রননশীল সে পিটার, শিশু পরিত্রাতা ‘ক্ষধিনী মাতা এদের তু