পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ক্ষতা প্রাদোতে সবচেয়ে বেশী আক্ট করে পাশাপাশি জিী ছটি ইম্যাকুলেট কনসেপগুনের চিত্র ; একটি কৃষ্ণকেশিনী, অপরটি কনককেশিনী। এ দুটি গভীর ভাবে পৰ্যবেক্ষণ করলে মুরিলোর শিল্পের বিবর্তনের ধারা কিছু বুঝতে পারা যায়। দ্বিতীয়টিতে একাধারে রিবেরার বর্ণচতুর্ঘ্য, ভ্যান ডাইকের মাধুর্ঘ্য ও ভেলাসকেথের বাস্তব প্রাণময়তার সমাবেশ ও সমন্বয় দেখতে পাই । ত্রস্ত ব্যাকুলচিত্ত৷ কুমারীর মধ্যে স্বর্গের পারিপার্ষিকতা সত্বেও দেবীমূলভ রূপ নয়, আদর্শের প্রভাব নয়, মানবের অনুভবই বেশী আত্মপ্রকাশ করেছে। তা ছাড়া প্রাদোতে মুরিলোর চিত্রগুলিতে জনতার মধ্যে প্রাণসঞ্চার করার যে কৌশল দেখলাম তা পৃথিবীতে অতুলনীয় বলে আজকাল স্বীকৃত হয়েছে। ক্রীটের সস্তান এল গ্রেকোর শুধু একটি মাত্র চিত্ৰ— ‘কাউণ্ট অগার্থের কবর’—এতে হিস্পানী জাতীয় চরিত্রে মাধুরী ও চঞ্চলত, ছলনশীলতা ও তীব্র অনুভূতির যে সবল প্রকাশ পাই তা কোন স্প্যানিশ চিত্রকরও দেখিয়েছেন কি না সন্দেহ । আশ্চর্ঘ্যের বিষয়, পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী ভেলাসকেথের (১৫৯৯-১৬৬০ খ্ৰীষ্টাব্দ) নাম উনবিংশ শতাব্দীর আগে খুব কম বিদেশীই জানত, অথচ তার ক্রুশবিদ্ধ ঐীষ্টের ছবিটি খ্ৰীষ্ট-সম্বন্ধীয় সব ছবির মধ্যে নিঃসন্দেহ শ্রেষ্ঠ । খ্ৰীষ্ট-জীবনীর চিত্ৰচয়নিকায় এটি না থাকলে তা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তার পর, “লাস মেনিনাস অথবা ‘দি ফ্যামিলি' নামক চিত্রটি স্বাভাবিক প্রতিকৃতির জন্য পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম চিত্র ব’লে স্বীকৃত হয়েছে। এতে যে সম্রম, শক্তি ও মাধুৰ্য্যের পরিচয় পাই তা শিল্পীর নিজের জীবনের চিন্তালেশহীন শাস্তির আভাস দেয়। সার টমাস লরেন্সের কথা মনে পড়ে—যা অঁাকতে চাওয়া হয়েছিল তার এমন নিখুঁত সাফল্য এতে আছে যে এই ছবিকে আট অব ফিলজফি বলা যায়। লুকা জ্যোৰ্দ্দানো এর যে প্রশংসা করেছিলেন তার অনুবাদ করা চলে না—এই ছবিটি হচ্ছে খিওলজী অব পেটিং ৷ স্পেন অ-ক্যাথলিক ধর্শ্বের উপর যত অত্যাচার করেছে, সৌভাগ্যের বিষয় অ-ক্যাথলিক শিল্পের উপর তত করে নি। সেই জন্ত সালামাঙ্কা ও সেভিলের গীর্জার মিশ্র কারুকার্ধ্যের প্রধাসী । ●●総○ চমৎকার মনোহারিজ অঞ্চ আছে—বার আবেদন শিল্পের ছাত্রের চেয়ে রসিকের কাছে বেশী। সেই জন্ত সেভিলের "আলকাখার রাজপ্রাসাদও এত সুন্দর মনে হয়। কিন্তু স্পেনের খ্ৰীষ্টধৰ্ম্ম কর্দোভার ‘মেথকিতাকে অক্ষুণ্ণ সৌন্দর্ধ্যে থাকতে দেয় নি। আবদার রহমানের এই অনুপম মসজিদটি বিশালতায় রোমের সেন্ট পিটাসের পরেই ও সেভিলের গীর্জার সমান। অপরূপ শ্বেতলোহিত খিলানের এই মসজিদের ভিতরেই একটি উচ্চ বেদী ও অন্তান্ত খ্ৰীষ্টান স্তম্ভ বসান হয়েছে। সেজন্য সম্রাটু পঞ্চম চালর্স ভৎসনা করে বলেন, “তোমরা এখানে যা নিৰ্ম্মাণ করেছ তা অন্ত যে-কোন জায়গায় করতে পারতে ; এবং পৃথিবীতে যা অতুলনীয় ছিল তা তোমরা ধ্বংস করেছ।” ৪৭০০ সুরভি তৈলের দীপে আলোকিত স্বর্ণ ও স্ফটিকের স্তম্ভময় মেহরাবের নিকটে উনিশটি তোরণ দিয়ে মূররা যখন উপাসনা করতে আসতেন, তখন সে দৃপ্ত কি হ’ত তা আজ শুধু কল্পনাই করা যায়। و& স্পেন হচ্ছে উৎসবের দেশ। এর পথে ঘাটে বর্ণ-বৈচিত্র্য, মনোভাবের বিকাশ ও অস্তরের বহিমুর্থী উল্লাস । সেভিলের রাজপথের প্রাণবান ও বৈচিত্র্যময় দৃশ্বের বহু চিত্র ও বর্ণনা আমরা পাই। এমন কি এই বিশেষত্ব গীতিনাট্যের স্বরেও ঝঙ্কত হয়ে উঠেছে। মোৎসার্টের ‘ফিগারো ও ডন জোভারি, রসসিনির বারবিয়ের দি সিভিলা' ও বিংসের ‘কারমেন’ গীতিনাট্যের বিচিত্র পোষাকে সজ্জিত নাগরিক ও গ্রামবাসীদের পৃথিবীর দ্বিতীয় বিশাল গীর্জাটির চিত্রপটের সামনে এখনও দেখতে পাওয়া যাবে। মাদ্রিদের সমাজের স্বকঠিন নিয়মনিষ্ঠ, বাসিলোনা ও ভ্যালেন্সিয়ার অবসরহীন বণিকসভ্যতা ও বিপ্লবের সূচনাকেও ছাপিয়ে ওঠে হিম্পানীদের উৎসব-প্রবণতা। বিশেষ ক’রে সেভিলে যে গ্রামবাসীরা যাড়ের লড়াই বা মেলা বা তামাসা দেখতে আসে তারা বিচিত্র প্রাচীন প্রথা, উজ্জল বর্ণসমৃদ্ধ পরিচ্ছদ ও রসিকতা এবং মার্জিত ব্যবহারে স্বৰ্য্যকরোজ্জল ঐতিহাসিক আন্দালুসিয়াকে এখনও বাচিয়ে রেখেছে। সেভিলের মত এত উৎসব আর কোথাও হয় না ; বিশেষত ঈষ্টারের সময়। প্রাচীন সেভিলের আঁকাবঁকা সংকীর্ণ গলিপথে মূীয় ছাপ এখনও দেখতে পাওয়া