পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b*'sషా বিশেষ্ণগুধিম, দেহের মুঠাম গঠন এবং রেখাসমন্বয় বিশ্লেষণ করিলে, বীর শিল্পের এই পদ্ধতি এবং সমসাময়িক পেগান মন্দিরের এই চিত্রান-রীতিতে রেখার স্বম্পষ্টত ও স্বাঞ্চন-নিপুণতা ষে একই ধারায় বিকশিত হইয়া উঠিয়াছিল সে বিষয়ে কোন সন্দেহ থাকে না। আনন্দ কুমারস্বামীও ত্রয়োদশ শতাব্দীর পেগানের পদ্মপাণি ও দেবতা ফ্রেস্কো-চিত্র আলোচনা করিতে গিয়৷ তাহার ভারতীয় ও ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের আর্টের ইতিহাস পুস্তকের ১৭২ পৃষ্ঠায় লিথিয়াছেন, যে, এই ফ্রেস্কো-চিত্রাঙ্কনরীতির সহিত বাংলা ও নেপালের প্রকৃতিগত সাদৃশু আছে এবং কেন্থিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্ষিত রঞ্জিত পুথি, এশিয়াটিক সোসাইটাতে রক্ষিত পুথি, বেষ্টিনে রক্ষিত বাংলার একাদশ শতাব্দীর পুথি প্রভৃতি বিচার করিলে ইহার প্রমাণ পাওয়া যায়। উত্তর-ব্রহ্মে এখনও প্রায় পাচ-সাত শত ঘর বাঙালী পেীনাদের সন্ধান পাওয়া যায়। র্তাহাদের বাড়ীতে চিত্রাঙ্কিত বাংলা পুথি দেখিয়াছি ; ইহার বর্তমানে জ্যোতিষ প্রভৃতি আলোচনা করিয়া থাকেন কিন্তু চিত্রাঙ্কনপ্রথাই পূৰ্ব্বে ইহাদের পেশা ছিল । এই ‘পোনা' কথাটি ‘বেম্না’ ( ব্রাহ্মণ) কথার অপভ্রংশ। বাংলা দেশে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের পুনরুত্থানে যে সমস্ত বৌদ্ধ ব্রাহ্মণ্য ধৰ্ম্মে দীক্ষিত হইয়াছিলেন র্তাহাদিগকেই তাচ্ছিল্যের সহিত ‘বেস্না’ বলা হইত। ব্রহ্মদেশে এই বাঙালীর প্রায় তিন-চারি শত বৎসর বংশানুক্রমিক বসবাস করিয়া জাসিতেছে। যখন যে রাজা ইহাদের পৃষ্ঠপোষকতা করিয়াছেন র্তাহাঙ্গের রাজ্যেই ইহারা চলিয়া গিয়াছে। সেই জন্ত বর্তমানে এই বাঙালী পেীনাদের সংখ্যা অমরাপুর, মান্দালয় প্রভৃতি স্থানেই বেশী দেখা যায়। . . এই সময় পুনঃ পুন: চীনাদের আক্রমণে পেগান পরিত্যক্ত হইতেছিল এবং এই কারণে চতুর্দশ শতাব্দীর পরবর্তী কালে পেগানে কোন স্থাপত্য ও শিল্প আর গড়িয়া উঠতে পারে নাই ; যাহা অবশিষ্ট ছিল তাহাও ধ্বংসপ্রায় হইতে থাকে । . কিন্তু , এই চতুর্দশ শতাব্দীর প্রারম্ভেই আরাকান প্রবাসী $NSBN9, রাজসভা অত্যন্ত শক্তিশালী হইয়া উঠে ; এই সময় আরাকান-রাজদের পৃষ্ঠপোষকতায় আরাকান-রাজসভায় কিরূপে বঙ্গসাহিত্যের উন্নতি সাধিত হইয়াছিল সেই সম্বন্ধে কিছু বলিব। তৎপূৰ্ব্বে এই সময়ে আরাকানের সহিত বাংলার কিরূপ যোগাযোগ হইয়াছিল তাহার আলোচনা প্রয়োজন । ১৪০৪ খ্ৰীষ্টাব্দে ব্রহ্মরাজ কর্তৃক বিতাড়িত হইয়া নরমিখলা ( Narmeikhla ) বঙ্গদেশে গৌড়াধিপতি কর্তৃক সাদরে গৃহীত হন এবং তাহার অধীনে সামরিক কাজে সুনাম অর্জন করিয়া দেশে ফিরিয়া যান। ইহার পরবর্তী কাল হইতেই, বৌদ্ধ ধৰ্ম্মাবলম্বী হইয়াও আরাকানের নৃপতিদের মুসলমান উপাধি ধারণ করিতে দেখা ধাইত এবং তাহদের মুদ্রাও বঙ্গদেশ হইতে প্রস্তুত হইয়া যাইত। এই সময় বঙ্গের নৃপতিগণের সহিত আরাকান-রাজদের যোগাযোগ স্থাপিত হয় এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে গঙ্গার মোহনায় উভয় রাজ্যের প্রায়ই জলযুদ্ধ ঘটিত । এই সব যুদ্ধে আরাকানরাজগণ বঙ্গদেশ হইতে সহস্ৰ সহস্ৰ বন্দীকে দাসরূপে স্বদেশে লইয়া যাইতেন এবং ইহাদের সঙ্গে সঙ্গে বহু সামাজিক প্রথাও ঐ দেশে প্রচলিত হইয়া যায়। রামায়ণে কথিত আছে রাজা দশরথ একবার যুদ্ধে আহত হওয়ায় তাহার দ্বিতীয় মহিষী কৈকেয়ী বিনিদ্র রজনী যাপন করিয় তাহার শুশ্ৰুষা করেন। ইহার পুরস্কার-স্বরূপ রাজা দশরথ কৈকেয়ীর সনিৰ্ব্বন্ধ অনুরোধে প্রথম পুত্রের পরিবর্তে দ্বিতীয় পুত্রের হস্তে সমস্ত রাজ্যের ভার ন্যস্ত করিয়া যান। বাংলায় এই কাহিনীটি অন্তভাবে প্রচলিত কথিত আছে যে রাজা দশরথের আঙুলে একটি বিস্ফোটক হওয়ায় রাণী কৈকেয়ী উহা নিজের মুখ দিয়া চুষিয় লইয়াছিলেন । ব্ৰহ্মদেশের জাতকেও এইরূপ কথিত আছে যে রাজ ওক্ককারিং-এর আঙুলে একটি বিস্ফোটক হওয়ায় তাহা ছোট রাণী উহা চুষিয়া থাইয় ফেলিয়াছিলেন ; এই জন্ত রাজ রাণীর সনিৰ্ব্বন্ধ অনুরোধে কনিষ্ঠ পুত্রকে রাজ্যের উত্তরাধিকার করিয়া যান। এই উপাখ্যানটি ব্রহ্মদেশীয় অভিনেতৃদে

  • Harvey : History of Burma, p. 140,